(বাম দিক থেকে) ব্র্যান্ডন জনসন, মাইক ওয়ালাস ও মার্ক স্মিথ
অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলি গণহত্যার জের ধরে ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রতি পশ্চিমা কর্মকর্তাদের ঘৃণা প্রকাশ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা নতুন মোড় নিয়েছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের নিরপরাধ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ভয়াবহ গণহত্যা শুরু করে যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পার্সটুডের রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের ব্রিটিশ দূতাবাসের কর্মকর্তা মার্ক স্মিথ ইসরাইলের কাছে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করতে ব্রিটিশ সরকারের অপারগতার প্রতিবাদে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। পদত্যাগের পর তিনি বলেছেন, ইসরাইল সরকার ও সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা গাজায় সুস্পষ্টভাবে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে।
গাজা উপত্যকার হাসপাতাল, স্কুল ও রেডক্রসের অ্যাম্বুলেন্সগুলোতে বারবার হামলা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের আশ্রয় গ্রহণ করার মতো এক ইঞ্চি জায়গা অবশিষ্ট নেই।
ওদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান যুদ্ধকে জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন: গাজায় যা কিছু ঘটছে তা একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়।
এছাড়া, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য মাইক ওয়ালাস নিজের একটি ছবি প্রকাশ করেছেন যেখানে তাকে একটি স্টেডিয়ামে ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেছেন: ইহুদিবাদী বসতি স্থাপনকারীদের ঔপনিবেশিক প্রকল্প এবং তার প্রতি আমেরিকা ও ইউরোপের সমর্থন এখন সম্পূর্ণ প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই প্রতিনিধি ‘স্বাধীন ফিলিস্তিন’ শিরোনামের হাশট্যাগ ব্যবহার করে ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন: “জাতিগত শুদ্ধি অভিযান বন্ধ করুন।”
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আয়ারল্যান্ডের এই আইন প্রণেতা এখন পর্যন্ত বহুবার গাজায় জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালানোর জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি এর আগে এক বক্তৃতায় ইসরাইলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
মাইক ওয়ালাস তারও আগে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সমর্থকদেরকে সাবেক জার্মান একনায়ক অ্যাডলফ হিটলার ও তার নাৎসিবাদী দলের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি ইসরাইলের বিন্দুমাত্র সম্মান নেই।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের চলমান গণহত্যায় এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ ও অপর ৯২ হাজারের বেশি গাজাবাসী আহত হয়েছেন।
১৯১৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইহুদিদের অভিবাসনের মাধ্যমে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অবৈধ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়।
তারপর থেকে ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা এবং তাদের গোটা ভূখণ্ড দখল করার জন্য বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য গণহত্যা চালিয়েছে ইসরাইল।
Leave a Reply