অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণের পর চাঁদকে ‘হিন্দু সনাতন রাষ্ট্র’ ঘোষণা করার ‘অদ্ভুত’ দাবি তুলেছেন অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার সভাপতি স্বামী চক্রপানি। এমনকি ‘শিব শক্তি’ নামকরণ করা যে স্থানে চন্দ্রযানটি অবতরণ করেছে সেটিকে চাঁদের রাজধানী ঘোষণাও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্মগুরু স্বামী চক্রপানি মহারাজ ভারতের অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার জাতীয় সভাপতি। হিন্দু এ ধর্মগুরু তার ‘বিতর্কিত ও বিচিত্র’ মন্তব্যের জন্য পরিচিত। রোববার (২৭ আগস্ট) এ বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানান চক্রপানি। তার দাবি, অন্য কোনো ধর্ম চাঁদের ওপর মালিকানা ঘোষণা করার আগে, ভারত সরকার যেন এ দাবি জানায়। এমনকি এ বিষয়ে লোকসভায় প্রস্তাব এনে তা পাসেরও দাবি জানান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় চক্রপানি মহারাজ বলেন, ভারতীয় পার্লামেন্টের পক্ষ থেকে চাঁদকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হোক। যেখানে চন্দ্রযান-৩ অবতরণ করেছে, সেই শিবশক্তি পয়েন্টকে রাজধানী ঘোষণা করা হোক, যাতে কোনো জিহাদি মানসিকতা সেখানে পৌঁছতে না পারে। কোনো সন্ত্রাসী যাতে চাঁদে পৌঁছতে না পারে, সে বিষয়ে ভারত সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তার এমন টুইটের পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারতীয়রা। একজন লিখেছেন, প্রস্তাবটিকে শিশুসুলভ বললে সবচেয়ে কম অপমান করা হবে। এটি পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়।
অন্য একজন লিখেছেন, এ ধরনের লোকজনই দেশে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সন্ত্রাসবাদ উসকে দেয়। এমন মানুষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এদিকে, চন্দ্রযান-৩ অবতরণের স্থানটিকে ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’ নাম দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের একটি অংশ। অনেকেই বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক বলে দাবি করেছেন।
সমাজবাদী পার্টির সংসদ সদস্য সম্বল শফিকুর রহমান বারক বলেন, চাঁদে বিক্রম ল্যান্ডারের অবতরণ স্পটকে ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’ হিসেবে নামকরণ করার পেছনে একটি সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য রয়েছে। ওই জায়গাটিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের নামে নামকরণ করা উচিত ছিল।
তিনি আরও বলেন, এপিজে আব্দুল কালাম ভারতের মহাকাশ গবেষণায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। বলা যায়, তার হাত ধরেই ভারতে মহাকাশ অভিযান ও গবেষণার ভিত্তি গড়ে উঠেছিল। তাই ওই জায়গাটির নাম তার নামেই করা উচিত ছিল। হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক মনোভাব সৃষ্টির কোনো প্রয়োজন ছিল না।
এদিকে, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) চেয়ারম্যান এস সোমনাথ ‘শিবশক্তি’ নাম নিয়ে বিতর্ক না করার অনুরোধ করেছেন। তার দাবি, ‘শিবশক্তি’ পুরুষ ও নারীর সমন্বয়। ইসরোতে নারীদের অবদান রয়েছে, তাই নামটি উপযুক্ত। সূত্র: এনডিটিভি
https://twitter.com/i/status/1695671868693594228
Leave a Reply