হে রসূল (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন, আল্লাহ একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, (তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন), তিনি কাউকে জন্ম দেননি, এবং কারো থেকে জন্মগ্রহণও করেননি। আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। (সূরা ইখলাস ঃ আয়াত ১-৪)
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন- হে মুহাম্মদ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে দিন- হে আমার মহান আল্লাহর বান্দারা! যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি করেছো তোমরা মহান আল্লাহ তা’আলার রহমত হতে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তা’আলা সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও করুণাময়।” (সূরা ঃ যুমার ঃ আয়াত ঃ ৫৩)
মহান আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন- “আর আমি অকৃতজ্ঞ লোকদেরই শাস্তি দিয়ে থাকি।” (সূরা ঃ সাবা ঃ আয়াত ঃ ১৭)
মহান আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন- “আমরা ওহী লাভ করেছি যে, যে ব্যক্তি মিথ্যা আরোপ করে এবং সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার জন্য আছে শাস্তি।” (সূরা ঃ তোহা ঃ আয়াত ঃ ৪৮)
মহান আল্লাহ তা’আলা আবার বলেন- “আর আমার রহমত সকল বস্তুকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে।” (সূরা ঃ আরাফ ঃ আয়াত ঃ ১৫৬)
১. হযরত উবাদা ইবন সামিত রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, যে লোক সাক্ষ্য দেবে যে মহান আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই, তিনি এক এবং তার কোন শরীক নেই, আর মুহাম্মদ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার বান্দা ও রাসূল এবং ঈসা (আ) মহান আল্লাহর বান্দা ও রসূল এবং তারই একটি শব্দ যা তিনি মরিয়মের প্রতি প্রদান করেন এবং তারই পক্ষ হতে দেয়া একটি আত্মা । আরো সাক্ষী দেয় যে, বেহেস্ত সত্য এবং দোযখও সত্য। তাহলে মহান আল্লাহ তা’আলা তাকে বেহেস্তে প্রবেশ করাবেন, সে যে কোন আমল করুক না কেন? (বোখারী ও মুসলিম শরীফ) মুসলিম শরীফের অপর এক রেওয়াতে আছে, যে ব্যক্তি সাক্ষী দেবে যে, মহান আল্লাহ তা’আলা ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই এবং মহানবী (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মহান আল্লাহর রসূল মহান আল্লহ তার জন্য দোযখ হারাম করে দিবেন।
২. হযরত জাবির রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা জনৈক বেদুঈন রসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর কাছে এসে বলল, ইয়া রসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ‘মুজিবাতান’ অর্থাৎ বেহেস্ত ও দোযখ ওয়াজিবকারী বিষয় দু’টি কি কি? তিনি বললেন, যে লোক মহান আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক না করে মারা যায়, সে বেহেশতে যাবে, আর যে লোক তার সাথে কোন কিছুকে শরীক করে মারা যায় যে দোযখে যাবে। (মুসলিম শরীফ)
৩. হররত উমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি একদিন রসুলুল্লাহ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কিছু সংখ্যক বন্দী উপস্থিত করা হলো। তাদের মধ্যে জনৈক বন্দীনি অস্থির হয়ে দৌড়াচ্ছিল। আর বন্দীদের মধ্যে কোন একটি শিশু পেলেই সে তাকে কোলে নিয়ে পেটের সাথে মিশিয়ে দুধ পান করাচ্ছিল। এ অবস্থা দেখে রসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা কি মনে করো এ মেয়ে লোকটি তার সন্তানকে আগুনে ফেলতে পারে? আমরা বললাম, মহান আল্লাহ তা’আলার কসম কখনো নয়, তিনি বললেন, এ মেয়ে লোকটি তার সন্তানের প্রতি যেরূপ সদয়, মহান আল্লাহ তা’আলা তার বন্ধুদের প্রতি এর চাইতেও অনেক বেশি সদয় ও অনুগ্রহশীল। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
৪. হযরত মু’আয ইব্নে জাবাল রাদিয়ালাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পিছনে একটি গাধার উপর বসা ছিলাম। এমন সময় তিনি বললেন, হে মু’আয! তুমি কি জানো বান্দার উপর মহান আল্লাহ তা’আলার হক কি এবং মহান আল্লাহ তা’আলার উপর বান্দার হক কি? আমি বললাম, মহান আল্লাহ তা’আলা ও তার রসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, বান্দার উপর মহান আল্লাহ তা’আলার হক হলো, বান্দারা মহান আল্লাহ তা’আলার ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুকেই শরীক করবে না। আর মহান আল্লাহ তা’আলার উপর বান্দার হক হলো, যে লোক “তার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। তিনি তাকে কোন শাস্তি দেবেন না” আমি বললাম, ইয়া রসুলুল্লহ আমি কি মানুষকে এ সু-সংবাদ দেবো না? তিনি বললেন, তুমি তাদের এ সুসংবাদ দিয়ো না, তাহলে তারা এর উপর নির্ভর করে বসে থাকবে। (বোখারী ও মুসলিম শরীফ)
Leave a Reply