অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নওগাঁর রাণীনগরে তসলিমা বিবি (৩০) নামে এক গৃহবধূকে মারধর করে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। গৃহবধূ তসলিমার লাশ উদ্ধার করে বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের কাটরাশইন পোয়াতাপাড়া গ্রামে। উন্নত চিকিসৎসার জন্য মঙ্গলবার নওগাঁ হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়ার সময় তসলিমার মৃত্যু হয়। তসলিমা কাটরাশইন পোয়াতাপাড়া গ্রামের মাহমুদুর রহমান রিপনের স্ত্রী ও গহেলাপুর গ্রামের তোফাজ্জলের মেয়ে।
তসলিমার খালাতো ভাই নবাব আলী ও চাচা নিফাজসহ স্বজনরা জানান, বেশ কয়েক বছর আগে তসলিমার বিয়ে হয় রিপনের সঙ্গে। বিয়ের পর তাদের ঘরে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। ভালোই চলছিল তাদের সংসার। হটাৎ করে গত বছর থেকে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এরপর থেকেই তাদের দুজনের মাঝে মধ্যেই ঝগড়া হতো। একাধিকবার পারিবারিকভাবে মীমাংসা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে তসলিমা ও তার স্বামী রিপনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে নিজ বাড়িতে রিপন তার স্ত্রী তসলিমাকে লাথি, কিল-ঘুষি এবং এলোপাতাড়ি মারধর করে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে মাঠে চলে যায়।
কিছুক্ষণ পর তসলিমাকে অচেতন অবস্থা ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন চিকিৎসার জন্য প্রথমে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা নওগাঁ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। নওগাঁ হাসপাতালেও তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়ার পথে তসলিমার মৃত্যু হয়। স্বজনদের দাবি- তসলিমাকে হত্যা করে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন তসলিমার স্বজনরা।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে তসলিমার স্বামী মাহমুদুর রহমান রিপন বলেন, কাপড় পরিষ্কার করা নিয়ে স্ত্রীকে একটু বকাঝকা করেছি, কিন্তু মারপিট করিনি। হয়তো ওই কারণেই সে রাগ করে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
রাণীনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম রেজা বলেন, মৃত্যুর খবর পেয়ে গৃহবধূ তসলিমার লাশ উদ্ধার করে বুধবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে বলা যাবে এটা হত্যা না অত্মহত্যা। রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply