অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জার্মানির কর্মকর্তারা পরপর তৃতীয় বছরের মতো সেদেশে বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আগামী ১৫ এপ্রিল বিশ্ব কুদস দিবস পালিত হবে। জার্মানির পুলিশ জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিলে রাজধানী বার্লিনে অন্তত দুই হাজার মানুষ অংশ নেবে।
জার্মানি সরকার প্রথম গত ২০২০ সালে বিশ্ব কুদস দিবসে মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছিল। গত তিন বছরে তারা নানা অজুহাতে সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। নিষিদ্ধ হওয়ার আগে কুদস দিবসে অন্তত ৩০০ থেকে এক হাজার মুসলিম নারী পুরুষ কুদস দিবসের মিছিল সমাবেশে অংশ নিত। জার্মানি হচ্ছে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ এবং ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে এই দেশটির ভূমিকা অপরিসীম। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মানি মুখে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন এবং ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞকে নিন্দা জানালেও বাস্তবে তারা ইসরাইলকে সমর্থন করছে এবং ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভের বিরোধিতা করছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইহুদিবাদী লবিং গ্রুপ জার্মানিতে খুবই তৎপর রয়েছে এবং বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে তাদের বড় ভূমিকা রয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে ইসরাইল-জার্মান এসোসিয়েশন বার্লিনে কুদস দিবসের সমাবেশ স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল। ইসরাইল-জার্মান এসোসিয়েশনের সভাপতি আভে বকর বার্লিনে বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিল সমাবেশের বিরোধিতা করে এটিকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জার্মানির রাজপথে ইসরাইলের ধ্বংস কামনা করে মিছিল হবে তা আমরা মেনে নেব না। এই ইহুদিবাদী লবিং গ্রুপ এমন সময় এ আহ্বান জানাল যখন জার্মানি সরকারসহ পাশ্চাত্যের দেশগুলো নিজেদেরকে বাক স্বাধীনতা ও সামাজিক অধিকার আন্দোলনের অগ্রনায়ক বলে দাবি করে। এ অবস্থায় তাদের পক্ষে কুদস দিবস বিরোধী পদক্ষেপ নেয়া উচিত হয়নি বলে অনেকে মনে করেন।
যাইহোক, ইসরাইলপন্থী গোষ্ঠীগুলো গত ২৭ বছর ধরে বিশ্ব কুদস দিবসের অনুষ্ঠানকে সম্পূর্ণ ইহুদি-বিরোধী বিক্ষোভ বলে মনে করে এবং বিশ্বের কোথাও যাতে এ দিবস পালিত হতে না পারে সেজন্য তারা চেষ্টা চালায়। আর জার্মানিতে ইসরাইলের ধ্বংস কামনা করা বেআইনি। জার্মানির ইহুদি পরিষদের প্রধান জোসেফ শুসতার বলেছেন, কুদস দিবসের মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা প্রচণ্ড ইসরাইল বিরোধী। প্রকৃতপক্ষে, জার্মানির সরকার ইসরাইলকে কোটি কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র দেয়া ছাড়াও ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবের রূপকার ইমাম খোমেনি (র.) ১৯৭৯ সালে প্রতি বছর রমজানের শেষ শুক্রবার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্ব কুদস দিবস পালনের ডাক দিয়েছিলেন। সেই থেকে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে প্রতি বছর বিশ্বকুদস দিবস পালিত হয়ে আসছে।
Leave a Reply