অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সৌদি আরবে পাঁচটি খাতে বিদেশিদের কাজ করতে হলে ওই দেশের সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশ থেকে ওই খাতগুলোতে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর জন্য একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর অধীনে বাংলাদেশিদের পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে সৌদি আরবে কাজ করতে যেতে হবে। এই পাঁচটি খাত হচ্ছে— প্লাম্বার, ওয়েল্ডিং, অটোমোবিল, ইলেক্ট্রিশিয়ান এবং এসি মোকানিক।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সৌদি দূতাবাসে স্কিল ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম উদ্বোধন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দোহাইলাম এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘অদক্ষ শ্রমিকদের বেতন যদি ৮০০ থেকে ১২০০ রিয়াল হয়ে থাকে, তবে দক্ষ শ্রমিকদের বেতন হবে ১৫০০ থেকে ১৮০০ রিয়াল। এর মাধ্যমে তারা বেশি বেতন আয় করতে সক্ষম হবে।’
এই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং সৌদি সরকারি সংস্থা তাকানল’র মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশের দুটি প্রতিষ্ঠান ওই পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে। এজন্য শ্রমিকদের কোনো অর্থ প্রদান করা লাগবেনা। একজন বাংলাদেশি যতবার ইচ্ছা ততবার পরীক্ষা দিতে পারবে। সার্টিফিকেট পাওয়ার পর এর মেয়াদ হবে পাঁচ বছর।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইতোমধ্যে এ ধরনের পরীক্ষা ভারত ও পাকিস্তানে চালু হয়েছে। প্রথাগত শ্রমিকদের এ ধরনের কোনও পরীক্ষা দেওয়া লাগবে না। কিন্তু ওই পাঁচটি খাতে সৌদি আরবে কাজ করতে হলে সার্টিফিকেট লাগবে।’
এই সার্টিফিকেটের সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জনশক্তিতে বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশের লাভ আছে। দ্বিতীয়ত, সার্টিফিকেটপ্রাপ্তরা অন্য দেশের শ্রমিকদের থেকে বেশি সক্ষম হবে। তৃতীয়ত, তারা বেশি আয় করার সুযোগ পাবে।’
পরীক্ষায় কী কী বিষয় থাকতে পারে প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আরবি ভাষা ও কিছু রীতি-নীতি এবং তারা নতুন যন্ত্রপাতি যেমন- মাইক্রোওয়েভ ওভেন বা এধরনের যন্ত্র ব্যবহার করতে পারে কিনা, সেটি আমরা দেখবো।’
তিনি জানান, এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একাধিক সৌদি ব্যবসায়ী আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।’
নতুন এই ব্যবস্থার কারণে প্রথাগত শ্রমিকদের সৌদি আরবে যেতে কোনও বাধা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা পাঁচ হাজার ভিসা ইস্যু করছি।’
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম বলেন, ‘আমরা হয়তো দক্ষ শ্রমিক পাঠিয়ে থাকি। কিন্তু তাদের কোনও স্বীকৃতি নেই। এই ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে ওই শ্রমিকদের দক্ষতার সনদ দেওয়া হবে এবং সেটি দেবে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তাকানলের মাধ্যমে ওই সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।’
নতুন ওই প্রোগ্রামের মহাপরিচালক ফাহাদ আলকাসিম বলেন, ‘সৌদি আরবে যাওয়ার আগে আমরা শ্রমিকদের দক্ষতা যাচাই করতে চাইছি।’
Leave a Reply