অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক দূত ও বেলজিয়ামের রানি মাথিল্ডে।
মঙ্গলবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছান তিনি। পরে রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন প্রত্যক্ষ করেন এবং নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের কথা শোনেন। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেননি রানি মাথিল্ডে।
এ সময় রানির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রানি মাথিল্ডে মধুরছড়া আশ্রয়কেন্দ্রের (ক্যাম্প-৪) লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। এরপর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেন। দুপুরে লম্বাশিয়া (ক্যাম্প-৫) আশ্রয়কেন্দ্রে গাছের চারা রোপণ করেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন প্রত্যক্ষ করেন রানি।
বেলজিয়ামের রানির এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মুহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জীবনমান, মানবিক কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন রানি। পরে স্থানীয় প্রশাসন এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।’
ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে রানির সঙ্গে থাকা তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রানির এই সফর বাংলাদেশ ও বেলজিয়ামের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ যে সহায়তা করছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সেটা আরও জোরালো আলোচনা তৈরি করবে। এটা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সহায়ক হবে।’
এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় ঢাকা থেকে বিমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান রানি মাথিল্ডে। সেখান থেকে সড়কপথে কুতুপালং ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন প্রত্যক্ষ করেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর পাশের মধুরছড়া আশ্রয়শিবির ঘুরে বিকাল ৪টায় কক্সবাজার শহরে ফিরে আসেন। বিকালে বিমানে ঢাকায় ফেরেন রানি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর আগে কয়েক দফায় আরও কয়েক লাখ এসেছিলেন। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ।
Leave a Reply