27 Nov 2024, 05:00 am

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : তুরস্ক-সিরিয়ায় চলতি শতাব্দীর ভয়াবহতম ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার । কেবল তুরস্কেই প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১০৮ জন। আর সিরিয়ায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৪৭০ জনের মৃত্যুর খবর পাওযা গেছে। দুই দেশ মিলিয়ে এই মুহূর্তে নিহতের সংখ্যা ৯ হাজার ৫৭৮ জন।

ভূমিকম্পের প্রায় ৬০ ঘণ্টা পরেও চলছে উদ্ধারকাজ। এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাছাড়া বিরূপ আবহাওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে।

সময় যত যাচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা লোকদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কাও তীব্র হচ্ছে।

এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্কবার্তা দিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়াতে পারে।

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরে সব দোকানপাট বন্ধ। বিস্ফোরণে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে তীব্র শীতের মধ্যে উষ্ণ থাকতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বেঁচে যাওয়া বাসিন্দাদের। মিলছে না পেট্রলও। প্রায় ১০০ লোক কম্বল মুড়ি দিয়ে রাত কাটিয়েছেন স্থানীয় একটি বিমানবন্দরের টার্মিনালে।

ছোট ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে বিমানবন্দরটিতে যাওয়া জাহিদে সুৎকু বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, আমরা ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। তাই জানি, আমরা কতটা ভাগ্যবান। কিন্তু এখন আমাদের জীবন খুবই অনিশ্চিত। আমি কীভাবে এই বাচ্চাদের দেখভাল করবো?

কাহরামানমারাস শহরে আলী সাগিরোগ্লু নামে এক ব্যক্তি সাংবাদিকদের কাছে জরুরি সেবা পাওয়া নিয়ে হতাশাপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি আমার ভাইকে ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনতে পারছি না। আমার ভাগনেকে ফেরাতে পাচ্ছি না। চারদিকে দেখুন, এখানে কোনো সরকারি কর্মকর্তা নেই।

তিনি বলেন, আমি গত দুদিনে এখানে কোনো সরকারি লোক দেখিনি। বাচ্চারা ঠান্ডায় জমছে।

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে নিয়োজিত উদ্ধারকর্মীরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকেপড়া লোকদের বের করে আনতে যত দেরি হবে, তাদের জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা তত কমে আসবে বলে জানিয়েছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক ইউনিভার্সিটির জরুরি সেবা বিশেষজ্ঞ ড. রিচার্ড এডওয়ার্ড মুনের মতে, পানি এবং অক্সিজেনের স্বল্পতাই ভুক্তভোগীদের বেঁচে থাকার পথে প্রধান বাধা।

তিনি বিবিসি’কে বলেছেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীর থেকে দৈনিক ১ দশমিক ২ লিটার পর্যন্ত পানি বেরিয়ে যেতে পারে। এটি ঘটতে পারে প্রস্রাব, নিঃশ্বাস, জলীয় বাষ্প এবং ঘামের মাধ্যমে।

স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্ক-সিরিয়ায় আঘাত হেনেছিল ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পটি। ফলে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকেপড়া লোকদের শরীর থেকে এরই মধ্যে প্রচুর পানি বেরিয়ে গেছে। এই অবস্থায় একজন মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছেন ড. রিচার্ড।

তার ওপর, সিরিয়া-তুরস্কে এখন চলছে শীতকাল। একজন গড়পড়তা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীর উষ্ণ থাকার ক্ষমতা না হারিয়ে সর্বনিম্ন ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। কিন্তু যখন শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়, তখন গল্প ভিন্ন।

ড. রিচার্ড বলেন, ওই মুহূর্তে শরীরের তাপমাত্রা মূলত পরিবেশের তাপমাত্রাকে অনুসরণ করে। এবং এটি যে হারে ঘটতে পারে তা নির্ভর করবে ব্যক্তির উষ্ণ থাকা বা ভূগর্ভে কতটা আশ্রয়ে থাকছেন তার ওপর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতভাগ্য অনেকেই হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 11890
  • Total Visits: 1325580
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২৪শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, ভোর ৫:০০

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018