27 Feb 2025, 04:06 pm

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জাতিসংঘে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জলবায়ু ও শিশু অধিকার কর্মী ফাতিহা আয়াত।

বুধবার (২২ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চলমান বিশ্ব পানি সম্মেলনের প্রথম দিনে একটি ইভেন্টে বক্তব্য রাখেন তিনি।

ফাতিহা আয়াত বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপনে মাত্র দু’বছর আগেই দেশটিতে সফর করেছেন। কিন্তু বরাবরের মতোই এই হাই-প্রোফাইল সফরটিও অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন বিরোধের সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। যা দেশ দুটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সমস্যা।

এই শিশু অধিকার কর্মী তার বক্তব্যে যৌথ নদী কমিশনের অকার্যকরতা তুলে ধরে বলেন, ২০১১ সালে ভারত রুক্ষ মৌসুমে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ পানি বাংলাদেশকে দিতে মৌখিকভাবে রাজি হলেও আদতে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। বাংলাদেশও পায়নি তার ন্যায্য হিস্যা।

সম্মেলনে ‘জল সহনশীলতার জন্য আমূল সহযোগিতা’ বিষয়ক একটি ইভেন্টে অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে বাংলাদেশ তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ার কথাগুলো বলছিলেন ফাতিহা।
এ সময় সেখানে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল লি জুনহা ও ভারতের পানি বিশেষজ্ঞ অজিত পাটনায়েকসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

ফাতিহা তার বক্তব্য শেষ করেছেন পবিত্র কোরআনের পানি-সংক্রান্ত একটি আয়াত তেলাওয়াতের মাধ্যমে।

জাতিসংঘে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাইলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফাতিহা আয়াত

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মাছের আঁশ থেকে তৈরি হবে জৈবপ্লাস্টিক। পরিবেশ বান্ধব এ প্লাস্টিক ভেঙে যায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। হাতে-কলমে পুরো প্রজেক্টসহ তারা নিয়ে এসেছে নিজেদের বানানো প্লাস্টিকও। খুদে মাথায় এমন উদ্ভাবনী চিন্তা প্রদর্শন করে রাজধানীর হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী অঙ্কিতা হালদার ও সুমাইয়া আহমেদ হয়েছেন ‘বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা বিজ্ঞান উৎসব’ এর এবারের আসরের সেরাদের সেরা।

সাত বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক পর্ব শেষে সম্প্রতি রাজধানীর শিশু একাডেমিতে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ এবং বিজ্ঞানভিত্তিক মাসিক পত্রিকা বিজ্ঞানচিন্তার যৌথ আয়োজনে দিনজুড়ে নানা অনুষ্ঠান এবং বিজয়ীদের পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিজ্ঞান উৎসবের দ্বিতীয় আসর। বিজ্ঞান প্রকল্প প্রদর্শনী ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দলগুলোর হাতে পুরস্কার হিসেবে বই, ট্রফি, মেডেল, সনদ ও বিকাশের পক্ষ থেকে ল্যাপটপ তুলে দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল শেখ মো. মনিরুল ইসলাম (অব.), বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক ও ছড়াকার আনজীর লিটন, বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, অনুজীব বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা, উন্মাদ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীবসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

 

বাংলাদেশের খুদে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনী প্রকল্প উপস্থাপন

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিধ্বস্ত হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র জন্য ক্ষতিপূরণ পাওয়া গেছে। জাহাজটির মালিক সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ২ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার পেয়েছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় ২৩৬ কোটি টাকার মতো (১ ডলার= ১০৫.১২ টাকা ধরে)।

এ বিষয়ে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমডোর মো. জিয়াউল হক বলেন, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদেশি বিমা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২২ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে। এসব ডলার ইতোমধ্যে সাধারণ বিমা করপোরেশনে চলে এসেছে। শিগগিরই বিএসসির অ্যাকাউন্টে চলে আসবে।

জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে গত ২ মার্চ ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর চ্যানেলে নোঙর করা অবস্থায় রকেট হামলার শিকার হয় বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি। এতে জাহাজের ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। এছাড়া বাকি ২৮ নাবিককে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

বিএসসি সূত্রে জানা গেছে, বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি ২০৮ কোটি টাকায় চীন থেকে কেনা হয় ২০১৮ সালে। বাণিজ্যিক এই জাহাজটি ডেনমার্কের চার্টারার ডেল্টা কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ভাড়ায় চলছিল। গত বছরের ২৬ জানুয়ারি জাহাজটি মুম্বাই বন্দর থেকে রওনা হয়ে তুরস্ক হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়। এরপর প্রায় ৬০ নটিক্যাল মাইল সরু চ্যানেল পেরিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে অলভিয়া বন্দরের অদূরে নোঙর করে জাহাজটি। পরদিন সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল বাংলার সমৃদ্ধির। কিন্তু এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে আটকা পড়ে জাহাজটি।

পরে ২ মার্চ নোঙর করা অবস্থায় জাহাজটি হামলার শিকার হয়। হামলার পর জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর জাহাজটির মালিক বিএসসি ক্ষতিপূরণ পেতে বিমা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে। ক্ষতিপূরণের সেই অর্থ সম্প্রতি হাতে পায় বিএসসি।

 

ইউক্রেনে বিধ্বস্ত ‌‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া গেল ২ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : অবশেষে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের নামে রেড নোটিশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল। নিজেকে বাঁচাতে দোকান বন্ধ করে গাঢাকা দিয়েছে আরাভ।

বৃহস্পতিবার রাতে ইন্টারপোল ওয়েবসাইটের রেড নোটিশের তালিকায় রবিউল ইসলামের নাম পাওয়া গেছে।

এর আগে গত ২০ মার্চ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছিলেন, ‘আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

রেড নোটিশে আরাভ খানের জন্মস্থান বাংলাদেশের বাগেরহাট, বয়স ৩৫ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় তার নাম, ছবি ও পরিচয় সংযুক্ত করা হয়েছে। জাতীয়তা দেখানো হয়েছে বাংলাদেশি।

২০১৮ সালের ৮ জুলাই পুলিশ পরিদর্শক মামুন খুন হন। পরদিন গাজীপুরের জঙ্গল থেকে তার দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে রবিউল, সুরাইয়াসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

মামলার ১০ আসামির মধ্যে দুজন কিশোরী। তারা জামিনে আছে। অন্য আটজনের মধ্যে রহমত উল্লাহ (৩৫), স্বপন সরকার (৩৯), দিদার পাঠান (২১), মিজান শেখ (২১), আতিক হাসান (২১) ও সারোয়ার হোসেন (২৩) বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। মামলাটি এখন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, মামুন হত্যাকাণ্ডের পর রবিউল ওরফে আরাভ ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি বিয়ে করেন। পরে ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেন। পাসপোর্টে নাম দেওয়া হয় আরাভ খান। এই পাসপোর্ট নিয়েই তিনি চলে যান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। এখন তিনি দুবাইয়ের বড় স্বর্ণ ব্যবসায়ী। গত সপ্তাহে দুবাইয়ে তার মালিকানাধীন ‘আরাভ জুয়েলার্স’ উদ্বোধন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজন তারকা যোগ দেন। এই প্রেক্ষাপটে আলোচনায় আসেন আরাভ।

অন্যদিকে পরিদর্শক মামুন খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়া অপর ছয় আসামিও বলেন, রবিউল যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

বনানীর ফ্ল্যাটটির দায়িত্বে ছিলেন দিদার। তিনি জবানবন্দিতে বলেন, ঘটনার দেড় বছর আগে রবিউলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। যৌন ব্যবসা করার জন্য রবিউল বনানীর ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন। একসময় তিনিও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ছিলেন ফ্ল্যাটের ব্যবস্থাপক। তিনি, আতিক, স্বপন, মিজান ও সারোয়ার ফ্ল্যাটটিতে থাকতেন। রবিউলের নির্দেশে ফ্ল্যাটে মেয়েদের সঙ্গে পুরুষের আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করতেন তারা।

যদিও পরবর্তী সময় সুরাইয়াসহ সাত আসামি আদালতের কাছে জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। লিখিতভাবে আদালতের কাছে দাবি করেন, পুলিশের ভয়ে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। তারা পুলিশ কর্মকর্তা মামুন খুনের সঙ্গে জড়িত নন।

অবশেষে হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ওরফে আরাভ খানের নামে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারী ; বাঁচতে গাঢাকা

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয়ে তাকে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা ড. মো. রেজাউল করিম।

সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী জানান, বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বদলি সংক্রান্ত সরকারের প্রস্তাবে একমত পোষণ করেছেন সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। গতকাল ২২ মার্চ ওই বিচারককে বদলি করতে আইন মন্ত্রণালয় সুপ্রিমকোর্টে একটি স্মারক পাঠায়।

ওই বিচারকের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের বিদ্যালয়ে ডেকে এনে পা ধরে মাফ চাওয়াতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ২১ মার্চ বিকেলে ওই বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে যে, বগুড়া জেলা জজ আদালতের ওই বিচারক গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিদ্যালয়ে এসে চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে মামলা করার হুমকি দেন। এর একপর্যায়ে এক নারী অভিভাবককে মাফ চাইতে বাধ্য করেন তিনি। এ ঘটনায় ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রথমে বগুড়া শহরের সার্কিট হাউসের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকলে পুলিশ এসে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর তারা বিদ্যালয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনে মেয়ে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যায়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষকদের নির্দেশে প্রতিদিন পালা করে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়– দেয় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ ঝাড়– দেবে না বলে জানায়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আপত্তি তোলে। এটা নিয়ে ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই বিচারক কয়েক দিন আগে বিদ্যালয়ে এসে মেয়ের সহপাঠীর অভিভাবককে মাফ চাইতে বাধ্য করেন। সূত্র: বাসস

বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে অবশেষে প্রত্যাহার

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাজধানীতে মহিলা ছিনতাই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুর মডেল থানার মিরপুর-১০ নং গোলচত্বরে আল বারাকা হোটেলের সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন- মনিকা, মিম ওরফে সমলা, সোহাগী এবং রিতু।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে মনিকা ও রিতু কোলে বাচ্চা নিয়ে ঘুড়তেন, আর মিম ও সোহাগী পথচারী সেঁজে তাদের আশেপাশে থাকেন। এদের মধ্যে মনিকা-রিতু কোনো পথচারীর মোবাইল ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় পথচারীরা তাদের আটকানোর চেষ্টা করলে আশপাশ থেকে মিম ও সোহাগী এসে ঝগড়া বাঁধিয়ে দিতেন। এই সুযোগে বাকি দুজন মোবাইল নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান।

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন ঢাকাটাইমসকে জানান, মনিকার ১৫ মাস বয়সী এবং রিতুর ৪ বছর বয়সী ছেলে আছে। তারা বাচ্চাদের কোলে নিয়ে ঘুড়তেন। পথে কোনো নারী পথচারী দেখলে তাকে টার্গেট করতেন। সুবিধাজনক স্থানে গিয়ে টার্গেটের মোবাইল ছোঁ মেরে নিয়ে রাস্তা পার হয়ে চলে যেত। এসময় পথচারী চিৎকার চেচামেচি শুরু করলে আশপাশে থাকা তাদের চক্রের বাকি সদস্যরা পথচারী সেজে এসে ধাক্কা লেগে বা অন্য কোনো অজুহাতে ভুক্তভোগীর সঙ্গে ঝগড়া বাঁধিয়ে দিতেন।

এই সুযোগে মনিকা ও রিতু ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতেন। একই কায়দায় বৃহস্পতিবার ছিনতাই করেন তারা। পরে ঘটনাস্থল থেকে হাতে নাতে মনিকা, রিতু এবং পথচারী সেজে থাকা তাদের চক্রের আরও সদস্য মিম ও সোহাগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজধানীতে ৪ মহিলা ছিনতাইকারী আটক

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : স্যার, শাব্দিক অর্থে জনাব হলেও, বাংলাদেশে ক্ষমতা দাম্ভিকতা আর প্রভুত্বর ইঙ্গিতও বহন করে। একসময় উপমহাদেশের এই বাঙলা অঞ্চলে যারা পাঠ দান করতেন কিংবা নানান ধরনের পাঠশালায় বা বিদ্যাপীঠসমূহে শিক্ষা-দীক্ষা বিতরণের কাজ করতেন তাঁদেরকে ওস্তাদজী , গুরুজী কিংবা পণ্ডিত মশাই ইত্যাদি নামে ডাকা হত।

কি উপায়ে সেই সম্বোধনগুলো বিবর্তিত হয়ে ‘স্যার’ হয়ে গেলো সেটি একটি গবেষণার বিষয়। কেননা ইংরেজদের  বিদ্যাপীঠগুলোতে যারা পাঠ দান করেন তাদেরকে  স্যার বলে সম্বোধন করতে হয় না । সে যাই হোক , ভাবনার বিষয় হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের বয়স অর্ধশতক পেরিয়ে গেলেও সেই ‘স্যার’সম্বোধন এর এখনো কোন দেশজ্ রূপ তৈরি হয় নাই ।

ইংরেজিভাষী দেশে অপরিচিত যেকোন ব্যক্তিকে স্যার বলে সম্বোধন করা হয় কিংবা করা যায়। এসব দেশে কাউকে স্যার বলা না বলায় কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি নাই ।  মোট কথা পাশ্চাত্যের মোটা দাগের ফ্ল্যাট সোসাইটিগুলোতে কিংবা সমতার সমাজগুলোতে অপরিচিত সবাই সবাইকে স্যার বলতে পারে। কিন্তু এরা সাধারণত পরিচিত কেউ কাউকে স্যার বলে সম্বোধন করেনা। কারণ ফ্ল্যাট সোসাইটি গুলোতে সবাই সবাইকে নাম ধরে ডাকাকেই স্বাভাবিক বলে ধরে নিয়েছে।

কিন্তু সমস্যা তৈরি হয়েছে উপনিবেশোত্তর অসমতার কিংবা ভেদাভেদের সমাজে। এরা একদিকে পাশ্চাত্য রীতির অফিস-আদালত কিংবা রাষ্ট্র কাঠামো গ্রহণ করেছে, অন্যদিকে প্রাচ্যরীতির অসমতার কিংবা ভেদাভেদের সমাজ ব্যবস্থাও টিকিয়ে রেখেছে। এহেন অবস্থায় কালচারাল ক্রাইসিস কিংবা সাংস্কৃতিক সংকটের যে চিত্রগুলো প্রত্যহ আমরা প্রত্যক্ষ করি তা অপ্রত্যাশিত হলেও অনিবার্য বটে!কারণ অনেকবার স্যার সম্বোধন নিয়ে বাংলাদেশে সরকারি আমলাদের প্রত্যাশার সঙ্গে বিভিন্ন মহলের বাতচিৎ আলোচনার জন্ম দিয়েছে বারংবার।

তবে সম্প্রতি রংপুরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুকের আপা না স্যার ডাকা বিষয়ে সৃষ্ট আলোচনায় ইস্যুটি আবারো সামনে এসেছে।

এর আগে রংপুরের জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীনের বিরুদ্ধে ‘স্যার ডাকতে বাধ্য করার’ অভিযোগ এনে বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে একাই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন উমর ফারুক। এর পর তার সাথে একাত্মতা জানিয়ে আন্দোলনে যুক্ত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা। তুহিন ওয়াদুদ তার ফেসবুক পোস্টে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন গণমাধ্যমকে বলেছেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের  একটা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ-পত্র নিয়ে উমর ফারুক আমার কাছে এসেছিলেন। এ সময় আমি বাইরে যাওয়ার জন্য সিঁড়ি দিয়ে নামছিলাম। তখন ওই শিক্ষক আমাকে দেখে আপা বলে ডাক দেন। আমি তাকে স্যার না বলে আপা কেন ডাকছেন জানতে চাই। আমার জায়গায় একজন পুরুষ দায়িত্বে থাকলেও কি তিনি স্যার না বলে ভাই ডাকতেন? তবে জেলা প্রশাসক জানান, রাতে তিনি ওই শিক্ষক ও আন্দোলনকারীদের স্যার ডাকতে হবে না, আপা ডাকলেই চলবে বলে জানান। এরপর তারা আন্দোলন বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মণ্ডল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের সঙ্গে যখন এমন আচরণ করা হয়, তাহলে সাধারণ জনগণ আর কোথায় থাকে?  বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ মনে করেন, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে এমন উপনিবেশিক আচরণ কোন ভাবেই কাম্য নয়। আর  রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান হাবু বলেন, জেলাপ্রশাসককে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করতে হবে, এমন নির্দেশনাই দেয়া আছে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে।

 

রংপুরের জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে ‘স্যার ডাকতে বাধ্য করার’ অভিযোগ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শুকুর আলীর বিরুদ্ধে টিসিবির পণ্য চাওয়ায় খেদের আলী (৫০) নামের এক বৃদ্ধকে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় বুধবার (২২ মার্চ) খেদের আলীর ছেলে সুজন আলী বাদী হয়ে তিতুদহ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২১ মার্চ) তিতুদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টিসিবির মালামাল বিক্রি করা হচ্ছিল। এ সময় খেদের আলীর টিসিবির কার্ড না থাকায় চেয়ারম্যান শুকুর আলীর নিকট গিয়ে তেল কিনতে চান। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে খেদের আলীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে নিজের পায়ের জুতা খুলে তাকে মারধর করেন।

এ বিষয়ে বৃদ্ধ খেদের আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ইউপি নির্বাচনের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান টিপুর পক্ষে কাজ করায় তখন থেকেই চেয়ারম্যান শুকুর আলী আমার ওপর ক্ষিপ্ত। আমার কোনো টিসিবির কার্ড ছিল না। আমি ওইদিন (মঙ্গলবার) সকালে স্কুলের মাঠে চেয়ারম্যানের নিকট গিয়ে টিসিবির তেল কেনার কথা বলতেই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে জনসম্মুখে নিজের জুতা খুলে আমাকে মারধর করে আহত করেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তথ্যমতে, গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৃদ্ধ খেদের আলী মারধরের কারণে জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে জানতে দায়িত্বরত চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শুকুর আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃদ্ধ খেদের আলী কার্ড বাদে টিসিবির পণ্য নিতে আসায় আমি অসম্মতি জানাই। এ নিয়ে আমার সঙ্গে তার তর্কবিতর্ক হয়। বৃদ্ধ আমাকে গালিগালাজ শুরু করলে তাকে ‘জুতা দিয়ে মারার দরকার’ বলেছি কিন্তু তাকে মারধর করিনি।

তিনি আরও বলেন, প্রতিপক্ষরা আমার আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। তা না হলে কার্ড ছাড়া তিনি (খেদের আলী) মালামাল নিতে যাবে কেন?

থানায় অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান শুকুর আলী বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য আমিও থানায় অভিযোগ দিয়েছি।

দর্শনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা দেখা হচ্ছে।

টিসিবির পণ্য চাওয়ায় বৃদ্ধকে জুতাপেটা করলেন চেয়ারম্যান ; থানায় অভিযোগ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পবিত্র রমজান মাস এলেই অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা যেখানে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকেন, সেখানে ব্যতিক্রমী নজির স্থাপন করে চলেছেন এরশাদ উদ্দিন। রমজান উপলক্ষ্যে ১০ টাকা লিটার দরে তার খামারের সব দুধ বিক্রি করে দিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর রৌহা গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ উদ্দিন। তিনি বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান।

জানা গেছে, তিন বছর আগে এরশাদ উদ্দিন নিজ এলাকায় জেসি অ্যাগ্রো ফার্ম নামে একটি খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে দুগ্ধ ও মোটাতাজাকরণের ৪০০ গরু রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ২০টি গরু দুধ দিচ্ছে। প্রতিদিন খামার থেকে ৭০-৭৫ লিটার দুধ উৎপাদিত হচ্ছে। পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে সব দুধ তিনি ১০ টাকা লিটার দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে কেউ তার খামার থেকে নামমাত্র ১০ টাকা লিটার দরে সর্বোচ্চ এক লিটার দুধ কিনতে পারবেন।

সরেজমিনে রমজানের প্রথম দিন শুক্রবার (২৪ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে দেখা গেছে তার খামারে এলাকার দরিদ্র শতেক নারী-পুরুষ লাইন ধরেছেন। কেউ কেউ ১০ টাকায় আবার কেউ বিনা মূল্যে দুধ নিয়েছেন।

নিয়ামতপুর ইউনিয়নের দেওপুর গ্রামের মমতা বেগম ও করফুলা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজারে সবকিছুরই দাম অনেক বেশি। রমজানে ১০০ টাকা লিটার করে দুধ কিনে খাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। এরশাদ ভাই ১০ টাকা করে দুধ দিচ্ছেন, এই দুধ দিয়েই আমরা সেহরি খাব।

রৌহা গ্রামের হারেস উদ্দিন ও কামাল মিয়া বলেন, এরশাদ সাহেব আমাদের জন্য ১০ টাকা করে এক লিটার দুধ দিচ্ছেন। আমরা অনেক খুশি। কেননা বাজার থেকে দুধ কিনে খাওয়া সম্ভব না।

মোহাম্মদ ইমরান নামে একজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এরশাদ ভাইয়ের এ মানবিক উদ্যোগ আমাদের উপজেলায় প্রশংসিত হয়েছে। তিনি সবসময়ই এমন মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকেন।

বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান এরশাদ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, রমজান এলেই এলাকায় দুধের চাহিদা বেড়ে যায়। হাটবাজারগুলোতে এক লিটার দুধ ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়। ১০০ টাকা দিয়ে নিম্নবিত্ত মানুষদের কিনে খাওয়ার ক্ষমতা নেই। এ বিষয়টা চিন্তা করেই তাদের জন্য নামমাত্র ১০ টাকা বা ১ টাকা মূল্যে প্রতিদিন ৭০ জনকে ১ লিটার করে দুধ দেওয়া শুরু করেছি। এছাড়া অনেককে বিনা মূল্যেও দুধ দিয়েছি। আজ প্রথম রমজান থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত চলবে।

তিনি আরও বলেন, পুরো রমজানে আমার খামারে যা দুধ উৎপাদন হবে সবই ১০ টা বা ১ টাকা করে বিক্রি করা হবে। সেই হিসেবে এই রমজানে ২ মেট্রিক টন দুধ বিক্রি করা হবে।

 

 

রমযান উপলক্ষ্যে ১০ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করছেন কিশোরগঞ্জের এরশাদ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন দুর্ঘটনায় পা হারানো আব্দুর রশিদ (২৪)। এই আয়ে চলে তার সংসার। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে মসজিদের সামনে অটোরিকশাটি রেখে নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে এসে দেখেন অটোরিকশাটি নেই। জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে আব্দুর রশীদ অসহায় হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজে বেড়াচ্ছেন তার অটোরিকশাটি।

বৃহস্পতিবার গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা পুকুরপাড় জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আব্দুর রশিদ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার নোয়াকোট গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রীপুর পৌরসভার তাজুর বাড়িতে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ছোটবেলায় নৌকায় করে নানার বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলাম। ওই সময় বাঁ পা নৌকার ইঞ্জিনে লেগে গুরুতর আহত হই। পরে পা কেটে ফেলতে হয়। পরে বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকান দেই, পাথর ভাঙার শ্রমিকরা আমার ক্রেতা ছিল। পাথর ভাঙা বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়তে হয়। পরে পরিবার নিয়ে শ্রীপুরে এসে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ৯০ হাজার টাকায় একটি অটোরিকশা কিনি। অটোরিকশা কেনার মাস তিনেকের মধ্যে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেলে কর্মহীন হয়ে পড়ি। স্থানীয়দের পরামর্শে সাপ্তাহিক ১৫০০ টাকা কিস্তিতে আশা এনজিও থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে অটোরিকশার ব্যাটারি কিনে তা সচল করি। অটোরিকশা চালিয়েই চলছিল আমার সংসার।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন বিকেলে আসরের নামাজ আদায়ের জন্য শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা পুকুরপাড় জামে মসজিদের সামনে অটোরিকশা রেখে মসজিদে যাই। নামাজ শেষে বাইরের এসে দেখি অটোরিকশাটি নেই।’

স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘পা হারানো লোকটা তার জীবিকার সম্বল হারিয়েছে। আমাদের সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে পরিবার নিয়ে আগের মতো জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন আব্দুর রশিদ।’

জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন হারিয়ে দিশেহারা গাজীপুরের আব্দুর রশিদ