23 Feb 2025, 03:12 pm

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা বান্দরবান। এ জেলার অপরুপ সৌন্দর্যে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ব্যাপক আকৃষ্ট। সম্প্রীতির এই জেলার আলীকদম-পোয়ামুহুরীর যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল খুবই নাজুক। কিন্তু শিক্ষা সুবিধা ও স্থাপনা অপর্যাপ্ততার কারণে উপজেলার জালানিপাড়া-কুরুকপাতা ও পোয়ামুহুরী সড়কটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সড়কটি না হওয়ার আগে ওই সব এলাকায় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌ-পথ। যেতেও সময় লাগতো ১ থেকে ২ দিন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যাতায়াতের অপ্রতুলতার কারণে সেখানকার মানুষ মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চি ছিল। কিন্তু সেই দৃশ্য এখন পাল্টে যেতে শুরু করেছে। আলীকদম-জালানিপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়ক নির্মাণ হওয়ার ফলে দুর্গমতার সেই চিত্র বদলে গেছে। এই সড়কটি নির্মাণের ফলে সম্ভাবনা জেগেছে এখানকার পর্যটনের। পর্যটনকে কেন্দ্র করে প্রসারিত হবে এসব অঞ্চলের অর্থনীতিও।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি আলীকদম-জালানিপাড়া-কুরুকপাতা ও পোয়ামুহুরী সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পটি একনেকে পাস হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটির কাজ দ্রুত সম্পাদনের জন্য বাস্তবায়নের দায়িত্ব সেনাবাহিনী ওপর অর্পিত হয়।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের ৩৪ ইসিবি অধীনে ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই এবং প্রকল্পের প্রায় ৩৫ কোটি টাকা কম খরচে ৪৭৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার ব্যয়ে কাজের গুনগত মান বজায় রেখে সম্পন্ন করা হয়।

প্রকল্পটিতে রয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা, ১০টি ব্রিজ, ১১টি কালভার্ট ও ৪টি ভিউ পয়েন্ট। রাস্তার আনুষাঙ্গিককরণ হিসেবে ক্রস ড্রেন, সাইট ড্রেন, রিটেইনিং ওয়াল, আর্থ ওয়াটার ড্যামসহ রোড সাইড নির্মাণ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৪নং কুরুকপাতা ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার পরিবারের বসবাস। জালানিপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী এই সড়কের দুর্গম এলাকার পাহাড়ি জনপদে বসবাস করে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ম্রো সম্প্রদায়। ক্ষুদ্রতম জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে ত্রিপুরা, চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা।

এসব এলাকায় সবাই এক সময় ছিল জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল। একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম ছিল নৌ-পথ। সড়ক হওয়ার আগে আলীকদম উপজেলার মাথাপিছু আয় জাতীয় আয় থেকে শতকরা ৩০ ভাগ কম ছিল। শিক্ষা সুবিধা ও স্থাপনার অপর্যাপ্ততার কারণে আলীকদমের দক্ষিণে বসবাসরত উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর স্বাক্ষরতার হার ছিল খুবই কম।

ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডাক্তারের অপ্রতুলতার কারণে এ জনপদের মানুষ আগে ব্যাপক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ছিল। কুরুকপাতা ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থাও ছিল খুব নাজুক। পাশাপাশি দুর্গম অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং নিরাপত্তা অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনায় এ সড়কটি নির্মাণ করা ছিল খুবই জরুরি।

শুধু তাই নয়, দুর্গমতার কারণে ওই এলাকার উৎপাদিত ফসল এক সময় নষ্ট হয়ে হতো। কৃষক বঞ্চিত হতো পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে। কিন্ত এখন খুব কম সময়েই সেইসব কৃষিপণ্য সহজে বহন করে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে বাজারে। কৃষক পাচ্ছে নায্য দামও। সড়কটি নির্মাণের ফলে মুরুং, ত্রিপুরাসহ সেই সব দুর্গম এলাকায় বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠির জীবনে লেগেছে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জোয়ার।
কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মেনরত ম্রো বলেন, আগে পাহাড়ের জিনিসপত্র নিয়ে হেঁটে যেতে সময় লাগতো ১ থেকে ২ দিন। এখন সড়কটি হওয়ার পর আলীকদম যেতে সময় লাগে মাত্র ১ থেকে ২ ঘণ্টা। সড়কটি হওয়ার ফলে আমাদের জীবনযাপন এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে।

কুরুকপাতা গ্রামের বাসিন্দা জন ত্রিপুরা বলেন, সড়কটি না হওয়ার আগে আমরা পণ্যের নায্যমূল্য পেতাম না। কম টাকায় জিনিসপত্র বিক্রি করতে হতো। মাঝে মাঝে ফলমূল পচে নষ্ট হয়ে যেত। সব কিছু থেকে আমরা বঞ্ছিত ছিলাম। এখন সড়কটি হওয়ার পর আমাদের অনেক উপকার হয়েছে।

আলীকদম রিপোর্টাস ক্লাবের সভাপতি শুভ রঞ্জন বড়ুয়া বলেন, ওইসব দুর্গম এলাকায় আগে যোগাযোগ বিছিন্ন ছিল। কোনো অঘটন ঘটলে সহজে খবর পেতাম না। আসা যাওয়া ছিল ব্যয়বহুল। সড়কটি হওয়ার ফলে এখন সহজভাবে দ্রুত সময়ে পৌঁছে যেতে পারছি। এছাড়াও দুর্গম এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের জীবনযাপনও অনেকটাই পাল্টে যাবে বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের (১৬ ইসিবি) মেজর ও প্রকল্প কর্মকর্তা মো. ইশরাকুল হক বলেন, নবনির্মিত আলীকদম-জালানিপাড়া-কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়কটি ৩১৭ কিলোমিটারের সীমান্ত সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে। সড়কটি নির্মাণের ফলে মুরুং, ত্রিপুরাসহ বৃহত্তর করুকপাতা ইউনিয়নে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনে আর্থ-সামজিক উন্নয়ন ঘটবে। এছাড়াও কৃষিজাত পণ্যের বিপণন এবং কৃষি নির্ভর শিল্পোন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। দেশের ভূখণ্ড রক্ষা ও সীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধিতেও এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। সড়কটি এ অঞ্চলের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উন্নতির পাশাপাশি সুখী, সমৃদ্ধ, সুষম উন্নয়নের বাংলাদেশ গড়ার পথে এক বড় অর্জন।

এ বিষয়ে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাবের মো. সোয়াইব বলেন, আলীকদমের সঙ্গে পোয়ামুহুরীর দূরত্ব ৪১ কিলোমিটার। সড়কটা হওয়ায় শহরের সঙ্গে পুরো কানেক্টিভিটি হয়ে গেছে। আলীকদম-জালানিপাড়া- কুরুকপাতা ও পোয়ামুহুরী সড়কটির কারণে পিছিয়ে পড়া পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের যাতায়াতে অনেক সুবিধা হয়েছে। এখন কৃষকরা তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস আলীকদমে এনে বিক্রি করতে পারছেন। যেখানে আলীকদম থেকে কুরুকপাতা ও পোয়ামুহুরী যেতে দুই দিন লাগতো সেখানে এখন তারা এক ঘণ্টার মধ্যে পোয়ামুহুরী চলে যেতে পারছে বলে জানান তিনি।

বান্দরবানে প্রকল্পের চেয়ে ৩৫ কোটি টাকা কম খরচে সড়ক তৈরি করলো সেনাবাহিনী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরে ইমাদ পরিবহন দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহতের পর মহাসড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গতিসীমা লংঘন করায় মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পরদিন সোমবার একই অপরাধে মামলা হয় ২১টি।
এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। গতিসীমা লংঘন করার অপরাধে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২৮৪টি মামলা করে হাইওয়ে পুলিশ। জানুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ৩১৫টি।

শিবচর হাইওয়ে থানার ওসি আবু নাইম মোঃ মোফাজ্জেল হক বলেন, ‘গতিসীমা লংঘন করায় মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পরদিন সোমবার একই অপরাধে মামলা হয়  ২১টি। এছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।’

এদিকে জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব কুমার হাজরা বলেন, ‘তদন্তের জন্য নির্ধারিত ২য় দিনের কাজ এখনো চলমান আছে। আমরা কাজ করছি। তবে বেধে দেওয়া সময় সীমা অনুযায়ী আজ (মঙ্গলবার) রাত ১২টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’ তবে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত যানবাহনের গতিসীমা লংঘন করার ঘটনা ঘটলে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে পুলিশের ধারণা।

উল্লেখ্য, রবিবার ভোররাতে খুলনা থেকে যাত্রী বোঝাই করে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা-মেট্রো-ব-১৫-৩৩৪৮) ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।  বাসটি গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে ১৫ জন যাত্রী তুলে।  পদ্মাসেতুর আগে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর সিমানা এলাকায় আসলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। বাসটি এক্সপ্রেস হাইওয়ের নীচের আন্ডারপাসের গাইড ওয়ালের সাথে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায় । এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হয়। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জনকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মাদারীপুরের শিবচরে ১৯ জনের প্রাণহানি ; দ্রুত গতির কারণে ৩১ যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা 

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন মানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস। ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতার মহানায়ক’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘বঙ্গবন্ধুর জীবন মানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস। তাই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও শেখ হাসিনা এখন সমার্থক। এই উন্নয়নের গতিকে আরো বেগবান ও গতিময় করতে হবে। তবেই বিশ্বের বুকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত একটি দেশে রূপান্তর হবে।

ড. রাজ্জাক রোববার কলকাতার রোটারি সদন অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ভারত কমিটি আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

আজ এখানে সরকারি তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও অগ্রগতি নিয়েও  প্রচারণা চালাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এর অংশ হিসাবে কলকাতায় এটির আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ভারত কমিটি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, যে কৌশল আমরা নিয়েছি, যেভাবে আমরা বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি, তাতে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।’

তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে। সেই নির্বাচনে জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এরপর, গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অনেক উন্নয়ন করেছেন, যা সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত হয়েছে।

সামাজিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালে আমরা দানা জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। সামাজিক ইনডেক্সগুলিতেও আমরা খুব ভালো ফল করেছি। আমাদের দারিদ্রতা অর্ধেক কমে ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ হয়েছে। অতি দরিদ্র যেখানে ১৮ থেকে ১৯ শতাংশ ছিল, সেটা এখন ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অবকাঠামো, ব্রিজ, পদ্মা সেতু, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। ১০০টি ইকোনোমিক জোন তৈরি করা হয়েছে, যেখানে শিল্প, কলকারখানা করা হচ্ছে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।’

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের প্রসঙ্গে ড. রাজ্জাক বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে। পরম আত্মত্যাগ স্বীকার করেছে। আমরা উভয় দেশই সব দিক থেকেই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। দুইদেশের মধ্যে এই সুসম্পর্ক আজীবন অটুট থাকবে।’

অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসাবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়, বিশেষ অতিথি হিসাবে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছেন : কৃষিমন্ত্রী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ তাঁর নিজ জেলা গোপালগঞ্জের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং অপর পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কোটালিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় তিনি বাটন চেপে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো উদ্বোধনের সময় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
এরআগে, বেলা ১২টা ৪০মিনিটে শেখ হাসিনা কোটালিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশস্থলে পৌঁছালে সেখানে উপস্থিত বিশাল জনতা বিভিন্ন শ্লোগানের মাধ্যমে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। এ সময় তিনিও হাত নেড়ে সাড়া দেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কোটালিপাড়া আগমন উপলক্ষে সারা জেলায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপড়া-কোটালিপাড়া) আসনের এমপি শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এক নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেওয়ার চার বছর পর এক বিশাল সমাবেশে ভাষণ দেন।
আগের নির্বাচনী সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল কোটালীপাড়া উপজেলার শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে।
৪৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পাইপলাইনে পানি সরবরাহের দু’টি গ্রামীণ প্রকল্প। এর একটি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নে এবং অপরটি কোটালিপাড়া উপজেলার রামশিল ইউনিয়নে। গোপালপুর ইউপি অফিস-কাজুলিয়া ইউপি ভায়া বোরাইহাটি পোলশাইর বাজার সড়কে ২৪ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ ও কুশলি জিসি-ধারাবাশাইল জিসি ভায়া মিত্রাডাঙ্গা সড়কে ৯৯ মিটার গার্ডার ব্রিজ, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোনাখালি সড়ক, কোটালিপাড়ায় চারতলা বিশিষ্ট শুয়াগ্রাম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের তিনতলা বিশিষ্ট গার্ল হোস্টেল (১শ’ শয্যা), কোটালিপাড়া এসএন ইনস্টিটিউটের চারতলা বিশিষ্ট শিক্ষা ভবন, কোটালিপাড়া পৌর কিচেন মার্কেট ও কোটালিপাড়া উপজেলা পরিষদ ভবন নির্মাণ, কোটালিপাড়া উপজেলার ভাঙ্গারহাট তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে শেখ রাসেল লাইব্রেরি, কোটালিপাড়ায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈতৃক বাড়িতে ‘মুক্তমঞ্চ’, কোটালিপাড়ার উত্তর কোটালিপাড়া রামমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বড় বাজারে একতলা বাণিজ্যিক ভবনকে ১০তলায় উন্নীতকরন ভবনের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী গণপূর্ত বিভাগের আওতায় গোপালগঞ্জ জেলা তথ্য কমপ্লেক্স ভবন ও কোটালিপাড়া মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের আওতায় রাধাগঞ্জ ইউনিয়ন ভাঙ্গারহাট বাজার উন্নয়ন ও কোটালিপাড়া উপজেলায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ম্যুরাল নির্মাণ এবং কোটালিপাড়া উপজেলা পরিষদের আওতায় ১১টি ইউনিয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
সমাবেশে অংশগ্রহণের পরপরই তিনি টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং প্রার্থনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর আজ বিকেলে সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।  তিনি দিনব্যাপী তাঁর নিজ জেলা সফরের জন্য আজ সকালে পদ্মা সেতু হয়ে সড়ক পথে গোপালগঞ্জে পৌঁছান।

গোপালগঞ্জে ৪৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী