25 Nov 2024, 08:47 pm

আইএমএফের রিপোর্ট বলে দিচ্ছে বিএনপির হাঁকডাক অন্তঃসারশূন্য : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বিশ্বের ৩৫তম উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিএনপির হাঁকডাক যে অন্তঃসারশূন্য সেটি আইএমএফ, বিশ্বসংস্থার রিপোর্ট বলে দিচ্ছে। এ জন্য তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মারকগ্রন্থ’ প্রকাশ উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গতকাল চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশ থেকে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে সরকার কী ভাবছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি, দেশে অশান্তি সৃষ্টি করতেই বিএনপি সভা-সমাবেশ করছে। অতীতের সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের পথ থেকে তারা বের হয়নি। সেটির বহিঃপ্রকাশ তারা চট্টগ্রামে দেখিয়েছে।

আর এদিকে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন যে তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চান। তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নমুনা হচ্ছে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়িঘোড়া ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। আর এটিকেই শান্তিপূর্ণ বলেন তারা। কিন্তু অশান্তি সৃষ্টি করতেই তারা এই সমাবেশগুলো করছেন, বলেন হাছান মাহমুদ।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু সমাবেশের নামে তারা আবারও অগ্নিসংযোগ শুরু করেছে। পুলিশের ওপর হামলা করছে, জনজীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে। কাজেই ভবিষ্যতে তাদের আন্দোলন নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমি সেটিই মনে করি। তারা সমাবেশের কথা বলে কী করে তা নিয়ে আমাদের আবার ভাবতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির রাজনীতি গত কয়েকদিন ধরে আপনারা দেখতে পারছেন। রাতের অন্ধকারে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ছুটে যাওয়া আর পদলেহন করার নীতি গ্রহণ করেছে বিএনপি। কিন্তু পদলেহন করে কোনো লাভ হয়নি। সেটি তারা বুঝতে পেরেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নিরাপত্তার বাহিনীর কর্মকর্তারা এরই মধ্যে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর কাজকর্মে গুণগত উন্নতি হয়েছে। তারা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা করতে চান। কারিগরি ও প্রশিক্ষণ দিতে চান। এতে তাদের (বিএনপি নেতাদের) মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যে কারণে তারা আবোল তাবোল বকা শুরু করে দিয়েছেন।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও আমাদের অর্থনীতির আকার বিশ্বের ৩৫তম। অর্থনীতির আকারে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরকে পেছনে ফেলে দিয়েছি। আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন তা-ই বলছে। দক্ষিণ এশিয়া থেকে পৃথিবীর প্রথম ৫০টি অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারত রয়েছে।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০১৫ সালে আমরা ছিলাম ৬০তম অর্থনৈতিক দেশ। এখন ৩৫তম, এই বিশ্বমন্দার মধ্যেও। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিএনপির হাঁকডাক যে অন্তঃসারশূন্য সেটি আইএমএফ, বিশ্বসংস্থার রিপোর্ট বলে দিচ্ছে। এ জন্য তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।

এ সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়- আজ বিএনপি এক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, সরকার প্রশাসন দিয়ে দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। এর উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার কোনো দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে না। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা কী করেছিল সেটি দেখতে পিছন ফিরে তাকানোর জন্য। বিএনপি ২০০২ সালে ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’ নামে যেভাবে ডজন ডজন মানুষ হত্যা করেছিল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআইয়ের অফিস সিল করে দিয়েছিল, মালামাল লুট করে নিয়েছিল। তাদের কোনো অফিস সরকার বন্ধ করেনি। তারা আমাদের অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, আমরা যখন সমাবেশ করতে চাইতাম তখন আমাদের ওপর বোমা, গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। তখন ২৪ জনকে হত্যা করেছে, পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। পাশাপাশি শেখ হেলালের জনসভায় হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কিবরিয়া সাহেবের জনসভায় হামলা চালিয়েছে। এরকম আরও বহু জনসভায় হামলা চালিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে।

বিএনপির কোনো জনসভায় একটি পটকাও কি ফুটেছে প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোথাও একটি পটকাও ফোটেনি। তাদের নেতাকর্মীদের গায়ে একটি আঁচড়ও লাগেনি। আমরা যখন আমাদের দলীয় কার্যালয়ে মিটিং করতে চাইতাম দুই পাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বের হতে দিতো না। রাসেল স্কয়ারে ধর্মঘট বা হরতালে বসতাম তখন আমাদের ওপর লাঠি পেটা করা হতো।

আমাদের জ্যৈষ্ঠ নেত্রী মতিয়া চৌধুরীকে টানা-হেঁচড়া করেছে পুলিশ। মোহাম্মদ নাসিমকে লাঠিপেটা করেছে। আমাদের বহু এমপি, মন্ত্রীকে লাঠিপেটা করেছে। অথচ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের গায়ে কি একটা আঁচড় লেগেছে। কোনো কিছুই লাগে নাই। আমরা বিএনপির ওপর কোনো দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছি না। বরং তারাই যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমাদের ওপর অমানুষিক, অমানবিক দমন-নিপীড়ন চালিয়েছে, যোগ করেন হাছান মাহমুদ।

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে অভিষিক্ত করেছি। আজ বিশ্বের সব দেশে আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা গান গাওয়া হয়। তিনি সব সরকারের অসঙ্গতির বিরুদ্ধে লিখেছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারকেও ছাড় দেননি। একজন কলামযোদ্ধা এমনই হওয়া উচিত। আশা করি, তাকে নিয়ে আরও বই লেখা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোনায়োম সরকার। বক্তব্য রাখেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, বাংলা টিভির চেয়ারম্যান আব্দুস ছামাদ, যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর সুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, প্রকাশক ওসমান গনি প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 13925
  • Total Visits: 1309564
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ সোমবার, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২৩শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৮:৪৭

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018