অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ‘ওচা’ নামে পরিচিত জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সহায়তা সমন্বয় বিষয়ক দফতর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছর শুরু থেকে জুন পর্যন্ত আফগানিস্তানে অভাবী মানুষের সংখ্যা আরো বেড়ে পাঁচ লাখে দাঁড়িয়েছে। এর আগে এ সংখ্যা তিন লাখের কথা বলা হয়েছিল।
এই রিপোর্টের অর্থ দাঁড়াচ্ছে তালেবান গোষ্ঠী দুই বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও জনগণের খাদ্যসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রয়োজন মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে এবং আফগানিস্তানের জনগণের এখনো আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রয়োজন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আমেরিকা ও তার মিত্ররা আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে সেনা উপস্থিতি বজায় রাখার কারণে ওই দেশটির কৃষি অবকাঠামো ও অর্থনীতি ধ্বংস হলেও বিদেশি সেনারা চলে যাবার পর তালেবান দুই বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। এ দীর্ঘ সময়ে তারা প্রতিবেশী দেশগুলোর সহায়তায় দেশের সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের প্রয়োজন মেটাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথেও সম্পর্ক মজবুত করার সুযোগ পেয়েছিল।
এ ব্যাপারে ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসাদুল্লাহ যায়েরি বলেছেন, আফগান জনগণের খাদ্য সংকট নিরসনে তালেবান কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তারা কৃষি জমিতে মাদক চাষের পরিবর্তে ফসল ফলাতে পারতো। কৃষির জন্য তাদের পর্যাপ্ত পানিরও অভাব নেই। সুতরাং এ ক্ষেত্রে কেবল সুষ্ঠু পরিচালনা জরুরি। আফগান জনগণ এমন সময় কঠিন সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করছে যখন জাতিসংঘ এরই মধ্যে ওই দেশটির জনগণের জন্য ২২৬ কোটি ডলারের খাদ্যের জরুরি প্রয়োজন রয়েছে বলে ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘ আরো জানিয়েছে, গত বছর শেষ নাগাদ ৯২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী আফগানিস্তানে পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, আফগান জনগণের জন্য পাঠানো আন্তর্জাতিক ত্রাণসামগ্রী ও অর্থ সাহায্য যথেষ্ট নয়। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আফগানিস্তানের ভবিষ্যতের ব্যাপারে কেউই আশ্বস্ত হতে পারছে না, যার ফলে ওই দেশটির উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে এবং জনগণ দুর্ভোগের মুখে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইসমাইল বাকেরি এ ব্যাপারে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা অর্জনের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো তালেবানের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু তালেবান এ ব্যাপারে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি নিজ দেশের জনগণের সমর্থন লাভেরও চেষ্টা করা উচিত তালেবানের।
যাইহোক, আফগান জনগণের অব্যাহত খাদ্য সংকট শুধু যে সেদেশের মানুষের জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করছে তাই নয় একই সাথে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আবারো শরণার্থীর ঢল নামার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
Leave a Reply