অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত সপ্তাহে লংমার্চ চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। যেখানে টার উপর হামলা করা হয় সেখান থেকেই তার দল ফের তাদের বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তার ওপর হামলার জন্য ইমরান খান পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ্ খান ও সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল ফয়সাল নাসিরকে দায়ী করেছেন। তবে এই তিনজনই ইমরানের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ক্ষমতা হারানোর পর ইমরান খান বড় আন্দোলন করে সরকারকে নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে পাকিস্তানের রাজনীতির এই জটিল গোলকধাঁধায় ইমরান খানের সামনে এখন কোন পথ খোলা রয়েছে? তিনি কি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন? নাকি সমঝোতার কোনো পথ খুঁজবেন? তাহলে রাজনীতির মসনদ থেকে রাজপথে ফেরা ইমরান খান এখন কী করবেন?
এর কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া যায় ডন পত্রিকায় ইমরানের সাক্ষাৎকারে। সেখানে মন্তব্য করা হয়েছে, তার অনেক অনুগামী এখন তাকে নতুন করে জন্ম নেয়া ‘বর্ন এগেইন’ গণতন্ত্রী হিসেবে দেখেন। সামরিক ও বেসামরিক সরকারের মধ্যে সম্পর্কটি ঠিক কী হবে, সেই সমীকরণের শর্ত তিনি নতুন করে তৈরি করতে চান।
লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষক ড. আয়েশা সিদ্দিকা জানান, এর মানে হলো ইমরানের আদালতে গোটা সামরিক বাহিনীর বিচার হবে না, বিচার হবে কয়েকজন জেনারেলের। ভবিষ্যৎ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় যেতে চাইলে সামরিক বাহিনীকে তাকে হাত রাখতেই হবে।
চলতি মাসেই সেনাবাহিনীতে বর্তমান সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার জায়গায় নিয়োগ করা হবে নতুন সেনাপ্রধান। সামরিক বাহিনীর নতুন নেতৃত্ব চাইবে ইমরান খানের আন্দোলনের জোয়ার যেন তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়। সেনাবাহিনী চেষ্টা করবে তাদের স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ণ না হয় বলে মনে করেন আয়েশা সিদ্দিকা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক হাসান আসকারী রিজভীর মতে, ইমরান খানের সামনে এখন তিনটি পথ রয়েছে।
প্রথমত, তিনি আবার মিছিল নিয়ে ইসলামাবাদের দিকে অগ্রসর হতে থাকবেন। ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে তার অনুগামী সমর্থকরা পাকিস্তানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। এসব প্রচারের ফসল তিনি ঘরে তুলবেন।
দ্বিতীয় পথটি হলো, তিনি আন্দোলন ত্যাগ করবেন। পাশাপাশি সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য তৈরি হবেন। তবে শেহবাজ শরীফ সরকার ততদিন পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে কিনা, তা নিয়ে রিজভীর সন্দেহ রয়েছে।
আর তৃতীয় পথটি হলো, তার দ্রুত নির্বাচনের দাবি। সামরিক বাহিনী ও ক্ষমতার অন্যান্য স্তম্ভের সঙ্গে সমঝোতা করে তিনি একটি মাঝামাঝি পথ বের করার চেষ্টা করবেন। মার্চ মাসে নির্বাচনের ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন বলে মনে করছেন রিজভী।
Leave a Reply