ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর লোগো
অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি) তথা ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা মঙ্গলবার জানিয়েছে যে তারা বেশ কয়েক দফা নজরদারি ও গোয়েন্দা অভিযান চালিয়ে ইরানের ভেতরে সক্রিয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালিত একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করে তা ভেঙে দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে, আইআরজিসি জানিয়েছে যে ব্যাপক পর্যবেক্ষণ এবং তদন্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পর নেটওয়ার্কটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই অভিযানের সময়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালিত একটি গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করা হয় এবং একাধিক পর্যায়ে নজরদারি ও গোয়েন্দা পদক্ষেপের মাধ্যমে তা ভেঙে ফেলা হয়এছ। ”
আইআরজিসি বলেছে যে “এই অঞ্চলে মার্কিন প্রক্সি” হিসেবে ইসরায়েল এই বছরের শুরুতে ১২ দিনের সামরিক সংঘর্ষে পরাজয়ের পর জননিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাঁয়তারা করছে। বিবৃতি অনুসারে, ইরানি ক্যালেন্ডারে ১৪০৪ সালের/ তথা চলতি বছরের শরতের শেষার্ধে দেশের নিরাপত্তা ব্যাহত করার লক্ষ্যে শাসকগোষ্ঠী “বিপথগামী এবং বিশ্বাসঘাতক চক্রের” একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আইআরজিসি গোয়েন্দা সংস্থার ইমাম মাহদীর-আ. অজ্ঞাত সেনাদল-গ্রুপের সতর্কতার কারণে এই গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের সদস্যদের একটি গোয়েন্দা ফাঁদে ফেলে গ্রেপ্তার করা হয়।” আইআরজিসি আরও জানিয়েছে যে, দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনাকারী ইসরায়েলের সাথে যুক্ত সেলগুলোকে টার্গেট করে বেশ কয়েকটি প্রদেশে সমন্বিতভাবে অভিযান চালানো হয়।
আইআরজিসির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে গুপ্তচর নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত আরও প্রতিবেদন এবং বিশদ বিবরণ যথাসময়ে ইরানি জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হবে। আইআরজিসি গোয়েন্দা সংস্থা “ব্যাকডোর” নামে পরিচিত একটি হ্যাকিং গ্রুপের নেতাকে গ্রেপ্তার করার খবর দেয়ার একদিন পর এই নতুন খবর এল।
গত মাসে, ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রী ইসমাইল খাতিব বলেছিলেন যে জুনে ইরানের উপর ইসরায়েলের আক্রমণে ৫০ টিরও বেশি বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা তেলআবিবকে মদদ দিয়েছে। খতিব বলেন, “গোয়েন্দা ন্যাটো”র অভিযান সত্ত্বেও, সশস্ত্র ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে ইরানি জনগণের ঐক্য “ইহুদিবাদী ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের” বিরুদ্ধে ইরানি জাতিকে বিজয়ের দিকে পরিচালিত করেছে।
‘ইসরায়েল’ গত ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে, হামলায় বেশ ক’জন ইরানি শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং বিজ্ঞানী শহীদ হন। এ ছাড়াও আবাসিক এলাকাযগুলোয় ইসরায়েলি হামলায় বেসামরিক নাগরিকরাও হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। করে। এইসব হামলায় নারী ও শিশুসহ ১,০০০ জনেরও বেশি ইরানি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে।
২২শে জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও যুদ্ধে প্রবেশ করে এবং তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়, অবশ্য শেষ পর্যন্ত ‘ইসরায়েল’-এর দাবিতে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সংঘাতের অবসান ঘটে। ২৪শে জুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ইরানি সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ইসরায়েল-অধিকৃত অঞ্চলগুলো ছাড়াও এবং কাতারে অবস্থিত একটি প্রধান আমেরিকান বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়।