অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইসরায়েলের বর্বরোচিত বিমান হামলায় বিপর্যস্ত ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না সেখানকার স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জা এবং এমনকি হাসপাতালও।
আর চলমান এই সংঘাতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজার প্রাচীনতম মসজিদ। ৭ম শতকে চালু হওয়া ঐতিহাসিক এই মসজিদে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বোমা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকমী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাতের মধ্যে গাজার গ্রেট ওমরি মসজিদের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শুধুমাত্র মসজিদটির মিনার এখনও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া একটি ভিডিও ফুটেজেও মসজিদটির বর্তমান অবস্থা উঠে এসেছে। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে বিবিসি।
এদিকে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক এই মসজিদে হামলার মতো ‘জঘন্য, বর্বর অপরাধ’ করার জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করেছেন হামাস কর্মকর্তারা। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
বিবিসি বলছে, ঐতিহাসিক এই মসজিদটি ৭ম শতাব্দীতে চালু করা হয়। এর আগে এখানে বাইজেন্টাইন গির্জা ছিল। গাজা শহরের পুরোনো অংশে অবস্থিত এই মসজিদটি অতীতে একবার ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন সংঘর্ষে বেশ কয়েকবার ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই মসজিদটি পুনর্নির্মিত হয়।
মসজিদটিকে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমরের (রা.) নামে নামকরণ করা হয়।
গাজার হামাস পরিচালিত পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ভূখণ্ডটির ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোতে বোমা হামলার অভিযোগ এনেছে। যদিও জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোকে এই ধরনের স্থাপনা রক্ষায় সাহায্য করার কথা জানিয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে তাদের যোদ্ধাদের আড়াল করার জন্য মসজিদ, স্কুল এবং অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামো ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মাঝে হামাসের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত সপ্তাহ থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজায় হামলা আরও তীব্র করেছে দখলদার সেনারা।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে সেখানে কমপক্ষে ১৭ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪৬ হাজার মানুষ বেশি আহত হয়েছেন।
নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কমপক্ষে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া ভূখণ্ডটিতে এখনও প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
Leave a Reply