অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে হিন্দুত্ববাদী বিজেপিকে পরাজিত করে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বিপুলভাবে জয়ী হওয়ায় সেখানে একজন মুসলিম নেতাকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদ দেওয়ার দাবি উঠেছে। রাজ্যটিতে ৯ জন মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
কংগ্রেস অবশ্য এখনও মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। মুখ্যমন্ত্রী পদে সিদ্দারামাইয়া না ডিকে শিবকুমার, কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী তা নিয়ে দলীয় আলোচনা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী পদে আরও কয়েকজনের নাম ভেসে আসছে। এসবের মধ্যেই এবার একজন মুসলিমকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদ দেওয়ার জোরালো দাবি উঠেছে। সুন্নি উলামা বোর্ডের মুসলিম নেতারা দাবি করেছেন যে কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী একজন মুসলিম সম্প্রদায়ের হতে হবে। এর পাশাপাশি ৫ জন মুসলিম বিধায়ককে ভালো দফতর দিয়ে মন্ত্রী করা উচিত, যাদের স্বরাষ্ট্র, রাজস্ব, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য বিভাগ থাকতে হবে বলেও দাবি জানানো হয়েছে।
কর্ণাটক ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মাওলানা শফি সাদি বলেছেন, ‘আমরা নির্বাচনের আগেই বলেছিলাম যে, উপমুখ্যমন্ত্রী একজন মুসলিম হতে হবে এবং আমাদের ৩০টি আসন (মুসলিম প্রার্থী) দেওয়া উচিত। আমরা ১৫টি আসন পেয়েছিলাম এবং এরমধ্যে ৯ জন মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়েছে। কংগ্রেস ৭২টি বিধানসভায় জিতেছে শুধুমাত্র মুসলমানদের কারণে। একটি সম্প্রদায় হিসেবে আমরা কংগ্রেসকে অনেক কিছু দিয়েছি। এখন সময় এসেছে বিনিময়ে আমাদের কিছু পাওয়ার। আমরা একজন মুসলিম উপমুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র, রাজস্ব এবং স্বাস্থ্যের মতো ভাল দফতরসহ ৫ জন মন্ত্রী চাই। এর পাশাপাশি আমাদের ধন্যবাদ জানানোর দায়িত্ব কংগ্রেসের। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা সুন্নি ওলামা বোর্ডের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছি।’
কাকে এই পদ দেওয়া উচিত, সে বিষয়ে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মাওলানা শফি সাদি বলেন, ৯ জনের মধ্যে (বিজয়ী মুসলিম প্রার্থী) কাকে এই পদটি দেওয়া হবে তা কংগ্রেসের ব্যাপার। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসকে ঠিক করতে হবে কে ভালো কাজ করেছে আর কে ভালো প্রার্থী। বেশ কিছু মুসলিম প্রার্থী অন্যান্য নির্বাচনি এলাকায় গিয়ে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য নিশ্চিত করতে প্রচারণা চালিয়েছেন। কখনও নিজের নির্বাচনি এলাকাকে পেছনে রেখেছেন। তাই কংগ্রেসের জয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায় থেকে তার একজন আদর্শ উপমুখ্যমন্ত্রী থাকা উচিত। এটা তাদের দায়িত্ব। ’নির্বাচনের আগে থেকেই এটা আমাদের দাবি ছিল। এটা পূরণ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান শফি সাদি।
রাজ্যটিতে সাম্প্রতিক নির্বাচনে ৯ জন মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এরা সকলেই কংগ্রেসের প্রার্থী। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কানিজ ফাতিমা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম মেয়েদের হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন ফাতিমা। গত বছর কর্ণাটকে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাবের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে গুলবার্গায় বিশাল বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কানিজ ফাতিমা। ২০২০ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে নারীদের প্রতিবাদ বিক্ষোভে সামনের সারিতে ছিলেন কানিজ। কানিজ ফাতেমা ছাড়াও এবার কংগ্রেসের মুসলিম প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন এইচএ ইকবাল হুসেন, রাহিম খান, রিজওয়ান আরশাদ, তানভির সাইত, আসিফ সাইত, ইউটি খাদর ফরিদ, এনএ হারিস এবং বিজেড জামির আহমদ খান।
Leave a Reply