October 3, 2025, 11:37 am
শিরোনামঃ
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিকের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশ মধ্যরাত থেকে ইলিশ আহরণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সমঝোতা হলে ১০০ আসন ছেড়ে দিতে পারে জামায়াত : গোলাম পরওয়ার নাটোরে রঙ বিলাস আখ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক চাঁদপুরে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ ; আহত ২০ জন মাদারীপুরে পথসভায় লোক ভাড়া করে এনে টাকা না দেয়ার অভিযোগে হট্টগোল গর্ভপাত পিলের নতুন জেনেরিক অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে গাজা ফ্লোটিলার ৪শ’ জনেরও বেশি কর্মী আটক গাজার জন্য সহায়তা বহনকারী গ্লোবাল ফ্লোটিলায় ইসরাইলি বাধার প্রতিবাদে ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ
এইমাত্রপাওয়াঃ
ঝিনাইদহ-৩ আসনের উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে সংবাদিকের সাথে বিএনপির প্রত্যাশী ব্যারিষ্টার কাজলের মতবিনিময়

কুড়িগ্রামের জয়নাল আবেদীন দিন মজুরীর টাকা দিয়ে গড়ে তুললেন ‘সাতভিটা গ্রন্থনীড়’

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কুড়িগ্রামের উলিপুরের বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার শিশু, কিশোর ও বিভিন্ন বয়সের মানুষজন ‘সাতভিটা গ্রন্থনীড়ে পড়াশুনা করে আলোকিত হচ্ছে। প্রত্যন্ত সাতভিটা গ্রামে পাঠাগার গড়ে তুলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন জয়নাল আবেদিন নামের এক দিনমজুর যুবক। দিনে করেন দিনমজুরী, কাজ শেষে বিকেলে খুলে বসেন পাঠাগার। তার এই কর্মকান্ডে স্থানীয়রা এক সময় নানা কথা বললেও এখন তাদেরই ছেলেমেয়েরাই হয়েছেন পাঠাগারের পাঠক।

দিনমজুর জয়নাল আবেদীন ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছিল। পড়াশুনার প্রতি প্রচুর ঝোক ছিল তার। গরীব বলে ছোটবেলা থেকে ঢাকা সহ সারা দেশে কাজের সন্ধানে চলে যেতো। এক সময় গাজীপুরে ইটভাটায় কাজ শুরু করেন। আর এখানেই কাজের ফাঁকে তার বই পড়ার নেশা পেয়ে যায়। রাত ২টা থেকে সকাল পর্যন্ত তাকে কাজ করতে হয়।

বিকেলে শ্রমিকদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে চা খেতেন টিভি দেখতেন। এ সময় ফুটপাতে যখনি বই দেখতেন কিনে এনে অবসরে পড়াশুনা করতেন। পরে খোঁজখবর নিয়ে ভাল মানের বইয়ের জন্য গাজীপুরে অবস্থিত কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন, টঙ্গী কলেজ গেটসহ বিভিন্ন জায়গায় বই সংগ্রহ করতে থাকেন ।এসব বই পড়ে তার প্রচন্ড আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এরপর বই কেনা ও পড়া তার নেশা হয়ে দাঁড়ায়। পরে বই জমতে জমতে গ্রামে গিয়ে পাঠাগার তৈরীর চিন্তা তার মাথায় আসে। এভাবেই একজন দিনমজুর শ্রমিক হয়ে ওঠেন পাঠাগার তৈরীর কারিগর।

তাকে প্রথমে গ্রামের লোকজন ভুল বুঝলেও এখন তারা জয়নালকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৮ সালের ‘সাতভিটা গ্রন্থণীড়’ পাঠাগার আনুষ্ঠাানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। ২০২২ সালে জয়নাল আবেদীনের পাঠাগারটি এলজিএসপির অর্থায়নে আধাপাকা করে দেয়া হয়। এখন তার পাঠাগারে সংগ্রহে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বই। এখন গ্রামের কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই পাঠাগারে ভীড় জমাচ্ছে। প্রতিদিন স্কুলের বইয়ের বাইরে পাঠাগারে এসে তথ্যভিত্তিক, শিশু কিশোর ও গল্পের বই পড়া, দৈনিক পত্রিকার সংবাদ পড়তে পেরে খুশি পাঠকরা। তবে পাঠাগারে কোন নলকুপ, লেট্রিন ও ওয়াসরুম না থাকায় পাঠকদের একটু সমস্যা হচ্ছে। এজন্য সরকারি, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছে তারা।

৭ম শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম বলেন, বাড়ীর পাশে পাঠাগার আছে বলেই নিয়মিত বই পড়তে পাচ্ছি। পাঠাগারটি না থাকলে তা সম্ভব হতো না। বকশীগঞ্জ রাজিবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী হাসান মিলন বলেন এক সময় আমি ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরীতে গিয়ে বই পড়তাম। এই পাঠাগারে এখন আমরা হাতের কাছে অনায়াসে বই পাচ্ছি। আমি জীবনী মূলক বই পড়তে ভালোবাসি যেমন সূর্য সেন, আলবার্ট আইনস্টাইনসহ বিভিন্ন মনীষীদের জীবনী পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রতিদিন নিয়মিত পাঠাগারে আসি। এভাবেই অনেক লোকের নিন্দা ও প্রতিকূলতা পেড়িয়ে আজ জয়নালের ‘সাতভিটা গ্রন্থনীড়’ সফলতার আলো ছড়াচ্ছে।

সাতভিটা গণগ্রন্থাগার পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, পাঠাগার তৈরীর পর ২০১৭ সাল থেকে গ্রামেই রয়েছেন জয়নাল আবেদীন। এখন সকালে ক্ষেত-খামারে কাজ করার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসাও করছেন। বিকেল সাড়ে ৩টা হলেই নিজেই পাঠাগার খুলে বসেন। প্রতিদিন প্রায় ২৫ থেকে ৩০জন পাঠক আসে। তবে পাঠাগারে কিছু ঘাটতি আছে। যেমন বুক সেলফ, চেয়ার, টেবিল এবং ওয়াস রুমের। এগুলো সংগ্রহ করতে পারলে পাঠাগারে পাঠক বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি জানান।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ মীর্জা নাসির উদ্দিন বলেন,  অর্থাভাবে জয়নাল আবেদীনের দিন চললেও শ্রমলব্ধ অর্থ দিয়ে বই কিনে পাঠাগার গড়ে তোলায় এই এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যে সময় মানুষ বই বিমুখ সে সময় তার উদ্যোগকে সকলে সাধুবাদ জানাচ্ছে। বর্তমানে পাঠক বৃ দ্ধি পাওয়ায় স্থান সংকুলানসহ সমস্যা হচ্ছে, সে ব্যাপারে গুণি মানুষ এগিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা করছি।

 

 

আজকের বাংলা তারিখ

October ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Sep    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  


Our Like Page