24 Nov 2024, 06:51 am

খাদের কিনারে বিএনপি ; নির্বাচন বর্জন করলেই পতন : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ক্রমাগত নির্বাচন বিমুখ হওয়া এবং চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের কারণে ব্যক্তির লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত বিএনপি আজ খাদের কিনারে এবং আগামী নির্বাচন বর্জন করলেই তাদের পতন নিশ্চিত।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত সভায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে মন্ত্রী এ অভিমত প্রকাশ করেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি এমন একটা দল, যে দল করলে সংসদ নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন দূরে থাকুক, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচনও করা যায় না। তাদের নেতা-কর্মীদের আমি জিজ্ঞাসা করবো-  যেই দল করলে কোনো নির্বাচনই করা যায় না, আপনাদের কি ঠেকা পড়েছে সেই দল করে তারেক রহমানের লাঠিয়াল বাহিনী হয়ে থাকার!’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান যতদিন নির্বাচন করতে না পারবেন, ততদিন বিএনপির কেউ ইউনিয়ন মেম্বার নির্বাচনও করতে পারবেন না -এটিই এখন তাদের নীতি। কিন্তু বিএনপি আগামী নির্বাচন বর্জন করলে বুঝতে পারবে, তাদের নেতা-কর্মীরা বর্জন করে নাই এবং কম্বল বাছতে গিয়ে দেখবে পুরো কম্বলই উজাড় হয়ে গেছে। সুতরাং বিএনপিকে বলবো, গণতন্ত্রের পথে হাঁটলেই তাদের লাভ এবং তাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে বলবো, আর কতোদিন আপনারা চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত অনুসরণ করবেন, এটা করে বিএনপি আজ খাদের কিনারে, আগামী নির্বাচন বর্জন করলে খাদের মধ্যেই পড়ে যাবে।’
বিএনপির গণমিছিল সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির গণমিছিল থেকে যদি মানুষের ওপর হামলা হয়, পুলিশের ওপর হামলা হয়, মানুষের সহায়-সম্পত্তি নষ্ট করা হয়, আমরা ছেড়ে দেবো না। আমরা জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি গত কয়েক বছর ধরে বিদেশিদের কাছে গিয়ে অনেক অনুনয়-বিনয় করেছে। শেষে তারা দেখতে পেলো, তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি বিদেশিরা কোনো সমর্থন জানালো না এবং তারা যা চেয়েছিলো তার কিছুই হচ্ছে না। এখন তারা ভিন্ন সুরে কথা বলা শুরু করেছে। এখন তারা বলছে, ভারত কি বললো তাতে কিছু আসে-যায় না, যুক্তরাষ্ট্র বা ইইউ কি বললো তাতেও কিছু যায়-আসে না।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তারা দেখেছে, ক’দিন আগে সফরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা বিএনপির কোনো দাবি নিয়ে কিছু বলেননি। একই কারণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সমন্বিত ইলেকশন মনিটরিং গ্রুপের সাথে বৈঠকটিই বিএনপি বাতিল করেছে। আশাহত বিএনপি বুঝেছে বিদেশিদের পেছনে ছুটে কোনো লাভ নেই।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই দেশ বাংলাদেশের মানুষের, অন্য কারো নয়। যদি যেতে হয়, জনগণের কাছে যেতে হবে। মহিলা নেত্রীদের নিয়ে সাজগোজ করে বিদেশিদের কাছে গিয়ে বিএনপির কোনো লাভ হয়নি, জ্বালাও-পোড়াও করেও কোনো লাভ হয়নি। এই অপরাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার।’
এর আগে বঙ্গবন্ধু, তার সহধর্মিনী বঙ্গমাতা ও তাদের পরিবারের সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়ে ওঠার পেছনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদান অসামান্য।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনে বহুবার বহু সময় কারাগারে কেটেছে। তিনি যখন কারাগারের বাইরে থাকতেন, বঙ্গমাতা তখন সংসার সামলেছেন আর বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে থাকতেন, তখন বঙ্গমাতা দল এবং সংসার দু’টোই সামলেছেন।
সারাজীবন সাধারণ মহিলার মতো জীবন-যাপনকারী নিভৃতচারী মহীয়সী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষণগুলোতে কিভাবে তার স্বামী বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেগুলো আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন লেখা ও আলোচনা থেকে জানতে পারি, উল্লেখ করেন হাছান।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যূত্থানের পর আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হন এবং তাকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেন। বঙ্গবন্ধু নিজেই সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং রাওয়ালপিন্ডি থেকে টেলিফোনে সেটি বঙ্গমাতাকে জানান। বঙ্গমাতাও একইমত পোষণ করেন ও প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের জন্য বঙ্গবন্ধুকে ধন্যবাদ দেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু ক্ষমতার লোভ করেননি, প্রধানমন্ত্রী হতে চাননি, বাংলার স্বাধীনতার পথে এগিয়ে গেছেন, বঙ্গমাতা পরিবার নিয়ে তার সাথে থেকেছেন। বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয়েছে, জাতির দিকে তাকিয়ে বঙ্গমাতা অবিচল থেকেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের দিনও বঙ্গমাতা তার কন্যা শেখ হাসিনা ও তার সদ্যজাত শিশু জয়, শেখ রেহানা, শেখ রাসেলসহ পাকিস্তানিদের হাতে বন্দীত্ব সহ্য করেছেন।
এমন কি মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে প্রথমে তার পরিবারের কাছে নয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জনতার কাছে গেছেন স্মরণ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রমাণ করেছেন, সত্যিকারের রাজনীতিকের কাছে জনতাই প্রথম, পরে পরিবার এবং পরিবার তা মেনে নেয় ও পাশে থাকে।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আসরারুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, জাতীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট বলরাম পোদ্দার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন। শেষে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, তাদের পরিবার এবং দেশ ও মানুষের মঙ্গল কামনা করে দোয়া পরিচালিত হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 12216
  • Total Visits: 1286896
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২১শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৬:৫১

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018