বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীসহ ১২৭ জনের নাম উল্লেখ করে চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা, বিস্ফোরণ, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে অজ্ঞাত আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগরের বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইখতিয়ার উদ্দিন আদালতের নির্দেশে মামলাটি রেকর্ড করেন। মামলার বিষয়টি প্রকাশ আজ (রবিবার) ১৬ ফেব্রুয়ারি ।
গত ২৮ জানুয়ারি ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে মামলার আবেদন করেন একই থানার মধ্যম চাক্তাই এলাকার মদন মিয়ার ছেলে মো. ইলিয়াছ। পেশায় তিনি একজন পিকআপচালক।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে ৪র্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মোস্তফা সংশ্লিষ্ট থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি রিজান চৌধুরীকে। এছাড়াও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, একই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়া, পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হারুন রশিদ হারুন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন আকতার রুজি, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজম রণি প্রমুখ।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে তিনি বাকলিয়া থানার নতুন ব্রিজ মীর পেট্রোল পাম্পের সামনে বন্ধুরাসহ জড়ো হন। ওইদিন দুপুর থেকেই সেখানে অভিযুক্তরা কিরিচ, রামদা, লাঠিসোঁটা, দেশীয় ও বিদেশি অস্ত্রসহ নিয়ে অবস্থান নেন। এসময় মিছিল নিয়ে আসামিরা আন্দোলন বন্ধে এলোপাতাড়ি আঘাত করে এবং অস্ত্র ব্যবহার করে গুলিবর্ষণ ও হাতবোমা-ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা রিজান পিকআপচালকের মাথায় হত্যার উদ্দেশ্যে কিরিচ দিয়ে কোপ মারে। এ সময় তার কব্জির রগ কেটে যায়।
একজন সিএনজি অটোরিকশাচালক তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অন্য একাধিক আসামি অবস্থান করছে জানতে পেরে তিনি স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে ফের ৬ আগস্ট থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত চমেক হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় সুস্থ হয়ে তিনি বাকলিয়া থানায় মামলা করতে গেলে মামলা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইখতিয়ার উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলায় মোট আসামি ১২৭ জন।’
চট্টগ্রামে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নারীনেত্রী আটক
বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানাধীন জিপিওর সামনে থেকে কানিজ ফাতেমা লিমা নামে এক নারীনেত্রীকে ধরে পুলিশে দিয়েছেন একদল নারী। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে তাকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। কানিজ ফাতেমা লিমা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বলে জানা গেছে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম বলেন, ‘কানিজ ফাতেমা লিমা নামে একজনকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেত্রী থানায় এনেছেন। তিনি ৭১ এর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলা কামিটির সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বলে জানতে পেরেছি। বর্তমানে তিনি আমাদের থানা হেফাজতে রয়েছেন। যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কক্সবাজারে দুই ইউপি চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার
বশির আল–মামুন, চট্টগ্রাম : কক্সবাজারের দুই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে আইন শৃংখলা বাহিনী। চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদুল কবিরের নেতৃত্বে একটি টিম শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) বিকালে ও এর আগের রাতে চট্টগ্রাম নগরীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার শাহারবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা নবী হোছাইন চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে গরু চুরি, হত্যাচেষ্টা, লুঠপাট ও হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
অপরদিকে টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোসেনকে চট্টগ্রাম থেকে গতরাতে গ্রেফতার করা হয়।
Leave a Reply