বশির আল–মামুন চট্টগ্রাম : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম নগরের আমতল সাফিনা হোটেলের সামনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগে সাবেক পররাস্ট্র মন্ত্রী হাসান মাহমুদ ও শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল ইসলাম নওফেলসহ ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) খুলশীর পাহাড়িকা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান (ফাহিম) বিস্ফোরক আইনে নগরীর কোতয়ালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এতে উপরোক্ত দুই ছাড়াও আ জ ম নাছির উদ্দীন, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আবদুস সালামসহ ৬০ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১২০-১৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ আগস্ট সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ছাত্র-জনতার একদফা আন্দোলন চলাকালে আসামিরা দা, ছুরি, পিস্তল, রিভলবার, হকিস্টিক, ইট, পাটকেল ও বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নির্যাতন করে।
এতে আহত হয়ে অভিযোগকারী নিউ লাইফ হসপিটালে চিকিৎসা নেন। সেখানে অপারেশন করে শরীর থেকে কয়েকটি স্প্লিন্টার ও রাবার বুলেট অপসারণ করা হয়।
কোতয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান,বাদির এজাহার পেয়ে থানায় মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে অস্ত্র মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (১১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সহিদুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক জাকের হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, রাউজান থানায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ফজলে করিম।
পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ফজলে করিম চৌধুরীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি পয়েন্ট ২২ বোর রাইফেল, একটি এলজি, একটি রিভলবার, একটি শটগান ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। এসব অস্ত্রের মধ্যে রাইফেল ছাড়া বাকি সব অস্ত্র ছিল অবৈধ। এ ঘটনায় পুলিশ রাউজান থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করে।
তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো, অস্ত্রের মুখে জমি লিখিয়ে নেওয়া, ভাঙচুর, দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত এক ডজন মামলা হয়েছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায়।
গত ১২ সেপ্টেম্বর সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তের আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে এ বি এম ফজলে করিমসহ তিন জনকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তিনি আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে বিজিবি জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে ১৪টি। এসব মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য হেলিকপ্টারে করে তাকে ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে আনা হয়।
Leave a Reply