অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে জমজমাট প্রচার-প্রচারণা চলছে। আগামী ২৭ এপ্রিল এ উপ-নির্বাচনে মোট ৫ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন।
এ আসনের সর্বশেষ সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে সংসদীয় আসনটি শূন্য হলে আগামী ২৭ এপ্রিল উপ-নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়। বাছাইশেষে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় এ আসনে মোট ৫ জন রয়েছেন। তাঁরা হলেন : আওয়ামী লীগের নোমান আল মাহমুদ, ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশ সমর্থিত অধ্যক্ষ আল্লামা স উ ম আবদুস সামাদ, ইসলামিক ফ্রন্টের এএম ফরিদ উদ্দিন, বিএনএ’র কামাল পাশা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রমজান আলী।
আজ সোমবার বিকেলে বোয়ালখালীস্থ আদর কমিউনিটি সেন্টার থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নোমান আল মাহমুদের সমর্থনে গণসংযোগ শুরু করা হয়।
গণসংযোগের শুরুতে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনকে যাতে প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে সে ব্যাপারে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। এই নির্বাচনটি আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছি। কারণ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তা প্রভাব ফেলবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে এখন বিএনপি জামাত যে মিথ্যাচার করছে তা গণতান্ত্রিক আচরণ নয়। তারাই তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করেছে। তাই এদের সাথে জনগণের চাওয়া পাওয়ার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়া পূরণ করেছে। এ কারণে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে তিন দফায় ক্ষমতায়। একটানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে উন্নয়নের অভিযাত্রা ও মানুষের কল্যাণের জন্য সবচাইতে বেশি অবদান রাখতে পেরেছে।
তিনি আরো বলেন, ভোট ও ভাতের অধিকারা যারা হরণ করতে চায় তারা কখনো জনবান্ধব নয়। তারা চায় যেকোনভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে। এভাবে তারা সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে রাখে এবং জোরপূর্বক ক্ষমতার লাগাম ধরে রাখতে অপচেষ্টা চালায়। আমরা এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমরা একটি জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেছেন, নির্বাচনে যাতে ভোটারদের আশানুরূপ উপস্থিতি থাকে সে জন্য ঘরে ঘরে গিয়ে ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে আনতে হবে। কারণ একটি মহল ছলে বলে কৌশলে ভোট কেন্দ্রে যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে আসতে না পারে সেই কু-মতলব করছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নোমান আল মাহমুদের বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষে আমাদের প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ ভোটারদের সাথে সংযোগ বাড়াতে হবে।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ বলেছেন, আমি নির্বাচিত হলে আমার নির্বাচনি এলাকায় যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা সমাধানে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো। এই সংসদের মেয়াদ আর মাত্র ৯ মাস। আমি নির্বাচিত হলে যতটুকু সম্ভব এলাকাবাসীকে সেবা প্রদানে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আলহাজ শফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, তিমির বরণ চৌধুরী, বোরহান উদ্দিন, হাজী বেলাল আহমদ, জহিরুল ইসলাম জহুর, মো. ঈছা, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, শৈবাল দাশ সুমন প্রমুখ।
এছাড়া থানা, ওয়ার্ড, ইউনিট আওয়ামী লীগ ও কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যক্ষ আল্লামা স উ ম আবদুস সামাদের মোমবাতি প্রতীকের সমর্থনে ইসলামী ফ্রন্ট আজ সোমবার দুপুর আড়াইটায় বহদ্দারহাট মোড়ে পথসভার মাধ্যমে গণসংযোগ শুরু করে চান্দগাঁও সিডিএ আবাসিক, খাজা রোড, বলিরহাট, ষোলশহর, হামজারবাগ, সিএন্ডবি, রাস্তারমাথা, কামাল বাজার, কালুরঘাট, বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ ইউপি, সারোয়াতলী ইউপিতে ব্যাপক গণসংযোগ করে।
পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান এম এ মতিন বলেন চট্টগ্রাম-৮ আসন উপনির্বাচনে মোমবাতির প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সুষ্ঠু ভোটে মোমবাতির গণজোয়ারকে রুখতে পারবে না। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতীত এখনও উৎসবের আমেজ আছে। পেশীশক্তি নির্ভর কুচক্রী মহল নির্বাচনের এ আমেজ নষ্ট করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে। যারা জনগণের গণরায়কে ভয় পায়, তারা ত্রাস সৃষ্টি করছে। আমরা জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। অনেকদিন আপনারা ক্ষমতায়, জনগণ আপনাদের প্রতি কী মনোভাব লালন করে তা একবার সুষ্ঠু ভোট দিয়ে দেখুন।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ আল্লামা স উ ম আবদুস সামাদ বলেন, জনগণ পরিবর্তন চায়, তাই চট্টগ্রাম-৮ আসনের সর্বত্র আমাদের প্রতি ভোটারগণ সমর্থন দিচ্ছে। কয়েকটি স্থানে সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ভোট কেন্দ্রে না যেতে হুমকি-ধমকি দিলেও নির্বাচন কমিশন ও সরকার আন্তরিক হলে এখনও সুষ্ঠু ভোট সম্ভব। এজন্য সাংবাদিকদের নিয়মের বেড়াজালে বন্দী না করে অবাধ তথ্য সম্প্রচারের সুযোগ দিন। জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দিন। অনিয়ম পরিলক্ষিত করার জন্য সিসি টিভি ক্যামেরা দেওয়ার জন্য বলেছিলাম, আপনারা দেননি। অন্ততপক্ষে, গোপন বুথে অবাঞ্চিত লোকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করুন।
গণসংযোগকালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এমএ মতিন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস হযরতুল আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফি (ম.জি.আ.), জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়দ অছিয়র রহমান আলকাদেরী, নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শায়খুল হাদিস হযরতুল আল্লামা রফিক উদ্দিন সিদ্দিকী, আইনজীবী এডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, সোবহানিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি আল্লামা হারুনুর রশীদ, আল আমিন বারীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা ড. মুহাম্মদ ইসমাইল নোমানী, উপাধ্যক্ষ হযরতুল আল্লামা আব্দুল আজিজ আনোয়ারী, ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য এম সোলায়মান ফরিদ, যুগ্ম মহাসচিব রেজাউল করিম তালুকদার, আহলে সুন্নত ওয়াল জমাআত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আল্লামা নুর মুহাম্মদ আলকাদেরী, আইনজীবী মুহাম্মদ ইকবাল হাসান, দপ্তর সচিব মাওলানা আবদুল হাকিম, প্রচার সচিব মাস্টার আবুল হোসাইন, বি-বাড়িয়ার সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কাজী মহিউদ্দিন, কিশোরগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি হাজী মুহাম্মদ রুবেল, মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা আবদুন নবী, সেক্রেটারি নাছির উদ্দিন মাহমুদ, উত্তর জেলা সভাপতি ওবাইদুল মোস্তফা কদমরসুলী, সেক্রেটারি ইয়াছিন হায়দরি, দক্ষিণ জেলা সভাপতি অধ্যাপক আবুল মনসুর দৌলতী, বোয়ালখালী উপজেলা সভাপতি স ম এনাম, পৌরসভা সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, যুবসেনার কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, নিজামুল করিম সুজন, হাবিবুল মোস্তফা সিদ্দিকী, ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এনামুল হক, সেক্রেটারি আবদুল্লাহ আর জাবেদ।
Leave a Reply