অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চলতি ২০২২ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৯৩৬ নারী। এছাড়া গণপিটুনিতে ৩৬, আইনশৃ্ঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জন এবং ক্রসফায়ারে চার জন মারা গেছেন।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তাদের বাৎসরিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বাৎসরিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আসকের পরিচালক (কর্মসূচি) নিনা গোস্বামী এবং জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক আবু আহমেদ ফয়জুল কবির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ২২৬ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ৭৯ জন সংবাদকর্মী। দুর্বৃত্তদের গুলিতে কুমিল্লায় নিহত হন একজন সাংবাদিক। এছাড়াও সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক লাঞ্ছিত ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বাধা প্রদানের শিকার হয়েছেন ১৪ জন।
আসক তথ্যসংরক্ষণ ইউনিটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে শুধু র্যাবের সঙ্গে কথিত ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ বা গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন চার জন। কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় এই ঘটনাগুলো ঘটে। এছাড়া বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মারা যান ১৫ জন। এর মধ্যে গ্রেফতারের পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শারীরিক নির্যাতনে চার জন, হার্ট অ্যাটাকে একজন এবং গ্রেপ্তারের আগে শারীরিক নির্যাতনে চার জন মারা যান। এছাড়া থানা হেফাজত আত্মহত্যা করেছেন দুই জন এবং অসুস্থ হয়ে মারা যান চার জন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছর দেশের কারাগারগুলোর মধ্যে ২১টি কারাগারে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা গেছেন ৬৫ জন। এর মধ্যে কয়েদি ২৮ এবং হাজতি ৩৭ জন। এর মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে সর্বাধিক ১৬ জন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৪ জন এবং চট্টগ্রাম কারাগারে ১২ জন মারা যান।
২০২২ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৯৩৬ নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৭ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন সাত জন। ধর্ষণের ঘটনা সর্বাধিক ৮৮ টি ঘটেছে ঢাকা জেলায়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ৮৩টি, চট্টগ্রামে ৫২টি, গাজীপুরে ৪৯টিসহ বাকি সব জেলাতেই ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন মোট ১৩২১ নারী।
এছাড়া এবছর যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ২৪৭ জন নারী। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন ৭৮ জন পুরুষ।
Leave a Reply