28 Nov 2024, 06:52 pm

ঝিনাইদহের মহেশপুরে নামের মিলে জেল খাটলেন দিনমজুর ; মাদকব্যবসায়ী ধরাছোয়ার বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

স্টাফ রিপোর্টার : মাদক মামলার আসামি মাহাবুবের জায়গায় দিনমজুর মাহাবুলকে ধরে আদালতে চালান দিয়েছে মহেশপুর থানার সহযোগিতায় দামুড়হুদা থানার এসআই মেজবাহুর রহমান।

তবে আসামি শনাক্তে ভুল হওয়ার ব্যাপারে থানা পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দিলে ১৩ দিন পর দিন মজুর মাহাবুলকে আদালত  জামিনে মুক্তি দিয়েছেন।

জানা গেছে, ভুলক্রমে গ্রেফতার হওয়া দিনমজুরের নাম মাহাবুল (২৮)। তিনি মহেশপুর উপজেলার মাইলবাড়িয়া পশ্চিমপাড়ার শাহার আলমের ছেলে। অন্যদিকে মাদক মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামির নাম মাহাবুব হোসেন পিতার নাম আলী বক্র।  তার বাড়িও একই গ্রামে,আসামি মাহাবুব একজন মাদক ব্যবসায়ী।

আসামি এবং দিনমজুর দুজনের নিজের নামের মিল থাকলেও তাদের বাবার নাম ও মায়ের নাম আলাদা। তবে পরিবারের অভিযোগ- গ্রেফতারের সময় দিন মজুরের পরিবার ও এলাকাবাসীর কারো বক্তব্য শোনেননি এ্স আই মেজবাহুর রহামান।

ভুক্তভোগী মাহাবুল অভিযোগ করে বলেন, দুপুরের দিকে কাজ থেকে ফিরে ভাত খেতে বসেছি ঠিক সেসময় মহেশপুর থানার সহযোগিতায় দামুড়হুদা থানার এস আই মেজবাহুর রহমানসহ ২-৩ জন পুলিশ এসে তাকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যান। এ সময় পরিবারের লোকেরা ও এলাকাবাসী পুলিশ কর্মকর্তার কাছে আপত্তি করেন। দিনমজুর মাহাবুলের নামে কোনো মাদক মামলা নেই বলেও তারা দাবি করেন।

তবে পুলিশ তাদের কোনো কথাই শুনতে চাননি। আটকের পরদিন তাকে চুয়াডাঙ্গা আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৯/১১/২০১৮ইং দুপুরের দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুদা উপজেলার ইশ্বরচন্দ্রপুর এলাকা হতে ১০০ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিলসহ মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের  মৃত সোনা মিয়ার ছেলে শুকুর আলীকে আটক করে বিজিবি। সেই মামলায় পলাতক দেখানো হয় নাটোর জেলার জয়কেষ্টপুর গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে আজবার আলী ও মহেশপুর উপজেলার মাইলবাড়িয়া গ্রামের শাহজামানের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী মাহাবুব হোসেনকে। বিজিবির দর্শনা কোম্পানী হাবিলদার শওকত আলী  ছিলেন মামলার বাদী।

ফেন্সিডিলসহ আটক হওয়া শুকুর আলী বলেন, আমি মালের জোন ছিলাম মালের আসল মালিক ছিলো মাইল বাড়িয়া  গ্রামের মাহাবুব হোসেন। কিন্তু এ মামলায় যে মাহাবুলকে পুলিশ ধরেছে তাকে আমি চিনি না।

স্থানীয় আজিজুর রহমান বলেন,মাহাবুল একজন দিন মজুর সে কোনদি মাদক ব্যবসার সাথে জরিত ছিলো না,আমাদের  গ্রামে চিহ্নিত একজন মাদক ব্যবসায়ী আছে তার নাম মাহাবুব। শুধু নামের ভুলে একজন নিরিুহ ছেলে ১৩দিন জেল খেটেছে। এখনো সে মামলার হাজিরা দিচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহাবুর রহমান বলেন ,আমাদের গ্রামে মাহাবুব নামে ৪-৫ জন আছে কিন্তু পুলিশ আসল মাদক মামলার আসামীকে না ধরে একজন দিন মজুরকে ধরে নিয়ে যায়। আমরা গ্রামের অধিকাংশ লোক সে সময় পুলিশের কাছে সে নির্দশ এবং প্রকৃত মাদক মাদক ব্যবসায়ীকে ধরার অনুরোধ জানালেও এসআই মেজবাহুর আমাদের কোন কথাই শোনেননি।

মাহাবুলের মা তহমিনা বলেন,আমার ছেলে নির্দশ ছিলো তার পরও পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। প্রতিহিংসার কারণে কতিপয় ব্যক্তি পুলিশকে দিয়ে মাদক মামলার মূল আসামীকে না ধরিয়ে নামের মিলে আমার ছেলেকে ধরিয়ে দেয়। আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছি,হয়রানির স্বীকার হয়েছি,আমি নামাজ পরি ও আল্লাহর কাছে বিচার দেই তিনি একদিন ঠিকি বিচার করবে।

মাহাবুল অভিযোগ করে বলেন,মিথ্যা মাদক মামলায় আমি ১৩ দিন জেল খেটেছি। সে মামলায় ৬ বছর ধরে এখনো হাজিরা দিতে হয়। শুধু মাত্র নামের মিলে মামলার আসল আসামিকে না ধরে প্রতিহিংসার কারণে মাদক মামলার আসামী করে পুলিশ দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে যায়। আমি এর সঠিক বিচার এবং এই মামলা থেকে মুক্তি চাই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দামুড়হুদা থানার এস আই মেজবাহুরের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

মহেশপুর থানার অফিসাস ইনচার্জ ফয়েজ আহম্মেদ বলেন,তদন্তকারী কর্মকর্তার তো ভুল হওয়ার কথা না,নাম এবং পিতার নাম মিল থাকতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 9325
  • Total Visits: 1341870
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ বৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২৬শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সন্ধ্যা ৬:৫২

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
    123
252627282930 
       
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018