স্টাফ রিপোর্টার : ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌরসভা কার্যালয়ের সামনেই মহেশপুর বাইপাস সড়কের পাশে কপোতাক্ষ নদের তীরে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগাড়। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে প্রতিদিন ট্রাকে করে এনে এই স্থানে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ফলে মহাসড়কের আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র দুর্গন্ধ, সৃষ্টি হয়েছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাইপাস সড়কের পাশে রাস্তা ঘেঁষে জমে আছে নানান ধরনের বর্জ্য পচা সবজি, পলিথিন, নোংরা কাপড়, হাসপাতালের ফেলা আবর্জনাসহ নানা কিছু। এসব ময়লা থেকে নির্গত দুর্গন্ধে হাঁটাচলা করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সকাল ও দুপুরে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অফিসগামী মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।
পথচারী আহসান হাবীব বলেন, এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে নাক মুখ চেপে ধরতে হয়। অনেক সময় বমি চলে আসে। একটু বাতাস বইলেই দুর্গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
অটোরিকশা চালক আব্দুল্লাহর অভিযোগ, ময়লার ভাগাড়ে সারাদিন কুকুর, বিড়াল, কাকের ভিড় লেগে থাকে। ওরা ময়লা ছড়িয়ে দেয় রাস্তায়। রাতে চলাচলের সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। বৃষ্টির সময় তো রাস্তা পুরো নোংরা পানিতে ভরে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে এই স্থানেই বর্জ্য ফেলে আসছে। আগে এটি নদীর পাড়ের ফাঁকা জায়গা ছিল, এখন তা পুরোপুরি ময়লার স্তুপে পরিণত হয়েছে। নোংরা পানি মিশে যাচ্ছে নদের পানিতেও, ফলে নদী দূষণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় স্কুলছাত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, আমরা স্কুলে যেতে এই রাস্তা দিয়েই যাই। প্রতিদিনই নাক চেপে দৌড়ে পার হতে হয়। বৃষ্টি হলে আরও খারাপ অবস্থা হয়।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনবসতির এত কাছাকাছি বর্জ্য ফেলা পরিবেশের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে। এতে শুধু দুর্গন্ধই নয়, নানা রোগজীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কাও থাকে। দীর্ঘমেয়াদে এটি স্থানীয় জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হতে পারে।
মহেশপুর পৌরসভা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার বলেন, আমাদের পৌর এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নেই। এ কারণে আপাতত ওই স্থানে বর্জ্য রাখা হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে একটি স্থায়ী জায়গা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। খুব শিগগিরই বিকল্প স্থান নির্ধারণ করে এই সমস্যা সমাধান করা হবে।
স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কের পাশে এই বর্জ্য ভাগাড় মহেশপুরের চেহারাকে নোংরা করে দিচ্ছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে বর্জ্য অপসারণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনার দাবি জানিয়েছেন তারা।