জাফিরুল ইসলাম : ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ৫নং কাঁচেরকোল ইউনিয়নের উত্তর বোয়ালিয়া গ্রামে এক প্রতিবন্ধী মহিলাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের ঝন্টু মন্ডলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর শনিবার (১৯ আগস্ট) হতে বৃহষ্পতিবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত এখন গুরুতর অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন ভুক্তভোগী হালিমা খাতুন। তার অবস্থা এখনও আশংকাজনক বলে জানা গেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন জনপ্রতিনিধি।
এ বিষয়ে শৈলকুপা থানায় ৪ জনের ও অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনের নাম এজাহার করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী হালিমা খাতুনের ছেলে নাজিউর রহমান। অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন মন্ডল, ঝন্টু মন্ডল। তারা উভয়ে মৃত সিরাজ মন্ডলের ছেলে। অন্য ২ অভিযুক্ত হলেন অভিযুক্ত ঝন্টুর স্ত্রী রাজিয়া খাতুন ও মেয়ে বৈশাখী খাতুন।
অভিযোগের সূত্র ধরে জানা যায়, গত শুক্রবার ১৮ আগস্ট ভুক্তভোগীদের বাড়ী সংলগ্ন ভুক্তভোগীর জমিতে পাটকাঠি নাড়াকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তদের সাথে কথা-কাটাকাটি ও সামান্য ঝগড়া হয়। পরে আসামীরা একই তারিখে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হাতে লোহার রড, বাঁশের লাঠি কাঁঠের বাটাম ইত্যাদি নিয়ে ভুক্তভোগীদের বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করে গালাগালি করে। এসময় অভিযুক্ত আনোয়ার ভুক্তভোগীকে খুন করার নির্দেশ প্রদান করলে অভিযুুক্ত ঝন্টু তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে ভুক্তভোগী পালিয়ে যেতে গেলে তার হাতে আঘাত লেগে মারাত্মকভাবে জখম হয়ে ভেঙে যায়। এসময় অভিযুক্ত আনোয়ার ভুক্তভোগীকে রড দিয়ে ডান পাজরে আঘাত করে। সেসময় ভুক্তভোগী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় এজহারভুক্ত আসামী রাজিয়া, বৈশাখীসহ অজ্ঞাত ২/৩ জন বাঁশের লাঠি ও বাটাম দিয়ে ভুক্তভোগীর শরীলের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়িভাবে মারধর করে জখম করে ভুক্তভোগীর শরীরের কাপড় টেনে খুলে শ্লীলতাহানি ঘটায়। এসময় ভুক্তভোগীর বউমা বাচাতে আসলে তাকেও অভিযুক্তরা এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে জখম করে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী একজন প্রতিবন্ধী। এঘটনার পর ভুক্তভোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় গত শনিবার ভুক্তভোগীকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত সোমবার ২১ আগস্ট ভুক্তভোগীকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনা হলে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় আবারও তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুল বলেন, মারধরের ঘটনা শুনে সেখানে গিয়েছিলাম। আহত ব্যক্তি হাসপাতালে আছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর স্বামী ইউনুচ আলী বলেন, পূর্বেও তার স্ত্রীকে একাধিকবার ঝন্টু মারধর করেছেন। প্রভাবশালী হওয়ায় ঝন্টুর বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে তাকে মারধর করেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ঝন্টু মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে কথা বলেনি।
অভিযোগের তদন্তে দায়িত্বরত শৈলকুপা থানার এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টির তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনার সত্যতা মিলেছে। আমরা মামলা নিয়েছি।
অন্যদিকে এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত ঝন্টু। পূর্বেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মানুষকে মারধরসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীদের সূত্রে প্রভাবশালী হওয়ার তার বিরুদ্ধে কথা বললে হতে হয় ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার। এতে করে তার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার মানুষ।
Leave a Reply