November 28, 2025, 12:35 pm
শিরোনামঃ
বগুড়ায় ইয়াবাসহ দুই নারী মাদক ব্যবসায়ী আটক  টাঙ্গাইলে ডিজিটাল মিটারের ভুতুড়ে বিলে দিশেহারা পল্লী বিদ্যুতের লক্ষাধিক গ্রাহক সিরাজগঞ্জের নারী ইউপি সদস্যকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পশ্চিম তীরে আত্মসমর্পণকারী ২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী নতুন ১০০ রুপির নোটে ভারতের ৩ অঞ্চলকে নিজেদের দেখাল নেপাল আফগানিস্তান থেকে চালানো ড্রোন হামলায় তাজিকিস্তানে চীনের তিন নাগরিক নিহত ইউক্রেন ভূমি ছেড়ে না দিলে রাশিয়া লড়াই চালিয়ে যাবে: পুতিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া আসন্ন নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারসহ নির্বাচনে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী : ইসি সচিব পাঁচদিনের মাথায় ১৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ৩ বার ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশ
এইমাত্রপাওয়াঃ

টাঙ্গাইলে ডিজিটাল মিটারের ভুতুড়ে বিলে দিশেহারা পল্লী বিদ্যুতের লক্ষাধিক গ্রাহক

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ডিজিটাল মিটারের নামে ভুয়া ও ভুঁতড়ে বিলে দিশেহারা পল্লী বিদ্যুতের লক্ষাধিক গ্রাহক। মির্জাপুরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের হাতে জিম্মি প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

একটি ডিজিটাল মিটারের বিপরীতে গ্রাহককে দেড় থেকে দুই গুন এবং কোন কোন গ্রাহককে চার থেকে পাঁচগুণ পর্যন্ত বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সব চেয়ে বেশী বিপাকে পরেছেন গ্রামের অসহায় দিন মজুর, আশ্রয়ণ কেন্দ্রের শতশত অসহায় পরিবার। বিল সংক্রান্ত  কোন অভিযোগ নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেলে কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না এসব অসহায় গ্রাহক অভিযোগ করেছেন। তাদরে নানা ভাবে হয়রানী করা হয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) অনুসন্ধানে জানা গেছে, টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে মির্জাপুর উপজেলা সদরে বাওয়ারকুমারজানি এলাকায় একটি এবং গোড়াই শিল্পাঞ্চলের গোড়াই এলাকায় টাঙ্গাইল কটন মিলস সংলগ্ন একটিসহ দুইটি জোনাল অফিস রয়েছে। দুইটি জোনাল অফিসের অধীনে মির্জাপুর পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ওয়ার্শি, ভাতগ্রাম, ভাওড়া, বহুরিয়া, গোড়াই, রতিফপুর, আজগানা, তরফপুর এবং বাঁশতৈল ইউনিয়নে আবাসিক, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারি শিল্পসহ গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত জুন, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের পল্লী বিদ্যুতের প্রতি মিটারের গ্রাহকের চেয়ে বেশী বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি মিটারের বিপরীতে একজন গ্রাহককে বিল প্রতি দেড় থেকে দুই গুন এবং কোন কোন গ্রাহককে চার থেকে পাঁচগুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত ভুয়া বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মির্জাপুর পৌরসভার একজন গ্রাহক অভিযোগ করেন, চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মার্চ  মাসে তার মিটারে বিল এসেছিল ৪৫০ টাকা থেকে ৫৬০ টাকা টাকা। গত এপ্রিল, মে ও জুন মাসে তার মিটারে বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ১৫৬০ টাকা। আবার জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে বিল এসেছে ২৪৫০ থেকে ৩৬৭০ টাকা। গত তিন চার মাস ধরে চলছে তীব্র লোড শেডিং। গড়ে ৬-৭ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। তার উপর বিল দেওয়া হয়েছে দুই থেকে তিন গুন। তিনি এটা মেনে নিতে পারছেন না। তার ধারনা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারসাজির কারণে অতিরিক্ত ভুয়া ও ভুতড়ে বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গোড়াই এলাকার বাসিন্দা মো. শারফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, অক্টোবর মাসে তার মেইন মিটারে বিল এসেছিল ৬১ টাকা। নভেম্বর মাসে তার মিটারে বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ১০২০ টাকা। এটা কি করে সম্ভব। তার মত ছানোয়ার মিয়া, আবুল হোসেন, আব্দুল কাদের, সুজন মিয়াসহ অন্তত ৩০-৪০ জন গ্রাহক এমন অভিযোগ করেছেন। তারা আরও অভিযোগ করেছেন, তাদের নামে অতিরিক্ত ভুয়া ও ভুতড়ে বিল ধরিয়ে দেওয়া হলেও মিটারের রিডিংয়ের সঙ্গে বিল কপির মিল নেই। উপজেলার দেওহাটা, গোড়াই, বহুরিয়া, তরফপুর, বানাইল ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আশ্রয় পাওয়া ভবঘুরে, দিনমজুরসহ অসহায় পরিবারগুলো ভুতড়ে বিলের কারণে সবচেয়ে বেশী বিপাকে পরেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, প্রতিটি গ্রাহককে জিম্মি করে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কোন অভিযোগ নিয়ে অফিসে গেলে তাদরে নানা ভাবে হয়রানী করা হয়। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবাসিক, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারি শিল্পের গ্রাহকরা দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে গোড়াই শিল্পাঞ্চলের ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারি শিল্পের অন্তত ১০ জন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, এক দিকে দিনে রাতে লোড শেডিং এর কারণে তাদের কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। অপর দিকে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত ভুয়া ও ভুতড়ে বিলের কারণে বিল পরিশোধ করতে তারা চরম বিপাকে পরেছেন। তারা তদন্ত সাপেক্ষে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-এর মির্জাপুর ও গোড়াই জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোকলেছুর রহমান ও খালিদ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, মির্জাপুর উপজেলায় দুইটি জোনাল অফিসের অধীনে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার। তারা দাবী করেছেন গত দুই মাসে বিল বেশী হওয়ার মুল কারণ হচ্ছে বিদ্যুৎ বেশী ব্যবহার হয়েছে এবং লোড শেডিং কম হয়েছে। ফলে প্রতিটি মিটারের বিপরীতে একটু বেশী বিল হয়েছে। যদি কোন গ্রাহকের নামে খুব বেশী বিল হয়েছে বলে তিনি মনে করেন তিনি অফিসে আসলে বিল সংশোধন করে দেওয়া হবে। কোন গ্রাহককে হয়রানী করা হয় না। তাদরে সাধ্যমত সেবা প্রদান করা হয়।

আজকের বাংলা তারিখ



Our Like Page