পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মেলিনো
অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যিনি তার উদ্ভুদ আচরণ এবং নানা বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য বিশ্ব মহলে পরিচিত আমেরিকার ক্ষমতার মসদনে বসার ২০ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে যেসব নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন এবং অস্বাভাবিক বক্তব্য দিয়েছেন সে বিষয়ে ল্যাতিন আমেরিকাভুক্ত দেশগুলোর নেতারা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
২০ জানুয়ারি তার শপথ গ্রহনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার জন্য নিজের ইচ্ছার কথা পুনর্ব্যক্ত করলে পানামা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হন। পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মেলিনো ট্রাম্পের দাবি এবং হুমকি প্রত্যাখ্যান করে আশ্বস্ত করেন যে পানামা খাল এবং এর সংলগ্ন এলাকার প্রতিটি বর্গমিটার এই দেশের এবং তা অব্যাহত থাকবে।
পানামার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন: পানামা খালের ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার কোনও দেশের নেই কারণ এই খালের ব্যবস্থাপনা আমাদের কারোর মাধ্যমে বিশেষাধিকার হিসেবে দেওয়া হয়নি বরং এটি ছিল একটি প্রজন্মগত সংগ্রামের ফলাফল যা ১৯৯৯ সালে শেষ হয়েছিল এবং এটি ছিল টোরিজোস-কার্টার চুক্তির ফসল এবং তারপর থেকে ২৫ বছর ধরে কোনও বাধা ছাড়াই আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব এবং এর বাণিজ্যের সেবা করার জন্য এটি পরিচালনা এবং সম্প্রসারিত করেছি।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড সম্প্রসারণ সম্পর্কে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্য কেবল পানামা খাল দখলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং তিনি কানাডা, গ্রিনল্যান্ড এবং গাজা উপত্যকা সম্পর্কে এমন প্রস্তাব দিয়েছেন যা আন্তর্জাতিক রীতিনীতির পরিপন্থী।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ভেনেজুয়েলার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন এবং সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকদের তালিকা থেকে কিউবাকে বাদ দেওয়ার জো বাইডেনের সিদ্ধান্তকে উল্টে দিয়েছিলেন।
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডিয়াজ-ক্যানেল এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তার অফিসিয়াল পেজে লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, অহংকার এবং সত্যের প্রতি অবজ্ঞার আচরণে সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষক হিসাবে কিউবার প্রতারণামূলক উপাধি পুনরায় চাপিয়ে দিয়েছেন।” “এটা অবাক করার মতো কিছু নয়।”
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান খিলও এক বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী দেশের কথিত তালিকায় কিউবার নাম ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে মার্কিন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে জোর দিয়ে বলেছেন যে দেশটি আমেরিকান ব্ল্যাকমেইলের কাছে নতি স্বীকার করবে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট মেক্সিকোর জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে আমেরিকা উপসাগর রাখার একটি নির্বাহী আদেশও জারি করেছেন। তবে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং গুগলের ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোথাও স্বীকৃতি হয়নি। ট্রাম্পের মন্তব্যের সমালোচনা করে এক বিবৃতিতে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন করে “মেক্সিকান আমেরিকা” রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন-বিরোধী পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের উপস্থিতির গুরুত্ব প্রকাশ করে মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, “এটি জোরেসোরেই শোনা যায় এবং স্পস্ট যে মেক্সিকান পুরুষ ও মহিলারাই আমেরিকান অর্থনীতিকে রক্ষা করে চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন যা আছে তা হতো না যদি সেখানে সাহায্যের জন্য যাওয়া মেক্সিকান শ্রমিকরা না থাকত। মেক্সিকান পণ্যের উপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৫% শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায়, শাইনবাউম সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে তার সরকার “শুল্ক এবং অ-শুল্ক ব্যবস্থা” দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জবাব দেবে।
Leave a Reply