অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আগামী তিনবছর পর অর্থাৎ ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (১৫ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মাত্র এক সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমি কাতারে ছিলাম, যেখানে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আঞ্চলিক সম্মেলন হলো। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আছি। তবে আমাদের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলনে যোগ দেওয়া এবারই শেষ। আমরা আর স্বল্পোন্নত দেশ থাকছি না, আমরা উন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে চলেছি। আর মাত্র তিনবছর…২০২৬ সালে আমরা উন্নীত হয়ে যাব।
তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার দিবসে আমাদের অর্ধেক কাজ হয়ে যাবে যদি আমরা ভোক্তা অধিকার সম্পর্কে মানুষকে জানাতে পারি, ভোক্তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে পারি। আমরা সবাই জানি ২০০৯ সালে এই আইন পাস হয়েছে। ২০১০ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই অধিদপ্তরে কাজ শুরু করে। গত এক যুগে আমরা যতটুকু এগিয়েছি, সেটা এখনো পরিপূর্ণ নয়। আমাদের লোকবল কম, আমরা খুব করে চেষ্টা করছি যাতে এটা মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে চলেছেন জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশটার স্বপ্ন দেখেছিলেন ও তৈরি করতে চেয়েছিলেন, সেই বাংলাদেশটা তো বঙ্গবন্ধু তৈরি করতে পারলেন না, তাকে থামিয়ে দেওয়া হলো। বঙ্গবন্ধুকন্য শেখ হাসিনা সেই স্বপ্নটা বাস্তবায়নের জন্যই কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সুখী, সমৃদ্ধ, শিক্ষিত ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছেন। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি তার ঘুম হারাম করে ফেলেছেন। তিনি প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করে চলেছেন।
রোজার মাসে ব্যবসায়ীদের সংযমী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর মানুষ উৎসব ও আনন্দের দিনগুলোতে মানুষকে সুযোগ দেয়। এটি দেওয়ার কারণ মানুষ যেন সাশ্রয়ী মূল্যে জিনিসপত্র কিনতে পারে। আমাদের দেশে তার ব্যতিক্রম হয়। সামনে রমজান মাস আসছে। ধর্ম বলেছে সংযমী হতে, নিজেকে কন্ট্রোল করতে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে একটি কথা আবারও বলতে চাই, অন্তত এই মাসে একটু সংযমী হওয়া দরকার। আপনারা দয়া করে যেটি ন্যায্য হওয়া উচিত সেটাই করবেন। আমরা আপনাদের সারাদিন ধরে পাহারা দিয়ে রাখতে পারব না। তারপরও আমরা চেষ্টা করব। আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম, আপনাদের যেটা ন্যায্য হয় সেটা করবেন।
ক্রেতাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। কোথাও দেখলেন একটি মোটরসাইকেল অর্ধেক দামে দেওয়া হচ্ছে। আর আপনারা সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। মোটরসাইকেলের একটা ম্যানুফ্যাকচারিং কস্ট আছে, এটা আপনাদের বুঝতে হবে। একটা মোটরসাইকেলের কস্ট যদি এক লাখ টাকা হয়, আর সেলিং প্রাইস যদি ২০ হাজার টাকা হয়, তাহলে সেটির ৬০ হাজার টাকা কে দেবে? ওটা মানুষকে ফাঁদে ফেলার জন্য লোভ দেখানো হচ্ছে। দিনশেষে তারা মানুষকে ঠকাবে। আপনারা চটকদার বিজ্ঞপ্তি দেখে আকৃষ্ট হবেন না।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমানসহ আরও অনেকে।
Leave a Reply