অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হয়েছে কলেজ স্কলাস্টিক অ্যাবিলিটি টেস্ট (সিএসএটি) অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। দেশটিতে এটি সুনোং সিহম নামে পরিচিত। প্রতিবছরই কোরিয়ার ভর্তি পরীক্ষা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসে। এদিন পরীক্ষা চলাকালীন বন্ধ থাকে দেশটির বিমান চলাচল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) ৫ লাখ ৮৩০ জন অংশগ্রহণ করেন। এতে দেশজুড়ে একযোগে (সকাল ৮টা ৪০ মিনিট থেকে বিকাল ৫টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত) পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।। প্রতিবছর ১৭ নভেম্বর এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যার অন্যতম কারণ এদিন কোরিয়ার প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়েছিল।
এদিন রাজধানী সিউলসহ গোটা কোরিয়া যেন নীরব হয়ে যায়। রাজধানীর দোকান ও ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে যায়। স্টক মার্কেটও দেরিতে খোলে। বেশির ভাগ নির্মাণকাজ এবং সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কর্মসূচি থেমে যায়। এমনকি পরীক্ষার্থীদের জন্য এদিন দেশজুড়ে নীরবতা বজায় রাখতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ থাকে কোরিয়ার বিমান চলাচলও।
পরীক্ষার কারণে দেশটির সাবওয়ে, বাস প্রভৃতি পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সময়সূচি বর্ধিত করা হয় যাতে ট্রাফিক জ্যামের কোনো আশঙ্কা না থাকে। স্টক মার্কেট থেকে শুরু করে বড় কোম্পানিগুলো দেরি করে শুরু করে তাদের দৈনন্দিন কর্মসূচি। কেননা, ছাত্রছাত্রীরা সময়মতো পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারে। রাস্তাঘাটে যেন জ্যাম না হয়, সেদিকে সবার নজর থাকে। রাস্তায় অনেক বেশি পুলিশের গাড়ি ঘোরাঘুরি করে। কারণ, কোনো পরীক্ষার্থীর দেরি হলে পুলিশের গাড়ি যেন তাকে পৌঁছে দিতে পারে।
এটি এমন একটি পরীক্ষা যেখানে শিক্ষার্থীরা একটি নির্দিষ্ট স্কোর অর্জন করতে পারলে তার ওপর ভিত্তি করে নিজের যোগ্যতামতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সক্ষমতা অর্জন করেন। টানা নয় ঘণ্টা ধরে চলে এই পরীক্ষা। আগামী ৯ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়ার সুযোগ পাবেন শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।
এই দিনটি অভিভাবকদের মাঝেও একধরনের ভীতি কাজ করে। তাদের সন্তানরা যাতে পরীক্ষায় ভালোভাবে উত্তীর্ণ হতে পারেন, সে জন্য প্যাগোডা ও গির্জায় সন্তানদের ছবি সঙ্গে নিয়ে প্রার্থনা করে থাকেন অভিভাবকরা।
পরীক্ষা নিয়ে এ দেশেও কিছু প্রচলিত কুসংস্কার আছে। যেমন, পরীক্ষার আগের দিন রাতে তারা কলা খায় না। কেননা, কলা খেলে যদি পরীক্ষায় পিছলে যায়! আরও একটা মজার বিষয় হলো, পরীক্ষার আগের দিন শিক্ষার্থীরা বেশি বেশি করে আয়না দেখে, যাতে পরীক্ষার হলে গিয়ে উত্তরগুলো চোখের সামনে ভাসে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনার লক্ষণ থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল আলাদা পরীক্ষার হল। সেই সঙ্গে করোনায় কোয়ারেন্টাইনরত পরীক্ষার্থীদের জন্যও ছিল আলাদা ব্যবস্থা। অসুস্থ পরীক্ষার্থীরা হাসপাতালের কক্ষ থেকে পরীক্ষা দিয়েছেন।
Leave a Reply