22 Feb 2025, 08:45 pm

দালালি করে কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি খুব হম্বিতম্বি করেছিল। তিনি বলেন, ‘দালালি করে কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। বাংলাদেশের মানুষ নিজের দেশ সম্পর্কে এখন অনেক জানে।

আজ ২২ ফেব্রুয়ারী বুধবার বিকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন তারা আন্দোলন করবে সরকার উৎখাত করবে অনেক কিছু বলে যাচ্ছে। অনেক আয়োজন করেছে। আর আমাদের দেশে কিছু মানুষ থাকে যারা অসময়ে নিরব সময়ে সরব। যখন এই ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি হম্বি-তম্বি করছে, আমরাও দেখছি। তারা মিছিল করছে মিটিং করছে কোনো কিছুতে বাধা দিইনি। কিন্তু বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ তখন একটা মিছিল মিটিংও করতে পারত না। সব জায়গায় বাধা দিত। যেভাবে অত্যাচার করেছে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর মেয়েদের উপরে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে কাপড়চোপড় ছিড়ে ফেলেছে। একদিকে ছাত্রদল একদিকে পুলিশবাহিনী দিয়ে। তারপরেও আমরা কিন্তু প্রতিশোধ নিতে যাইনি। আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের দিকেই নজর দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়ন করবার জন্যই কাজ করেছি। কিন্তু ওরা আমাদের ওপর যা করেছে আমরা তার কিছুই করি নাই।

তিনি আরও বলেন, ‘তার পরেও দেশে-বিদেশে গিয়ে হাহাকার করে বেড়ায় কেঁদে বেড়ায়। মনে হচ্ছে বাইরের থেকে কেউ এসে লাইন করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে সেই স্বপ্নে তারা বিভোর। হয়তো এক সময় সেটা করতে পেরেছে দালালি করে। এখন আর সেই দালালি করে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নাই। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। বাংলাদেশের মানুষ নিজের দেশ সম্পর্কে এখন অনেক জানে। ইতিহাস সম্পর্কে জানে। আমাদের লক্ষ্য কী সেটাও তারা জানে। ২০০১ নির্বাচনের পরপর দুইবার আমরা সরকারে এসেছি। আমরা তো জনগণের জন্য কাজ করেছি এটা তো আর কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।

নানা ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে একটি স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতই বাধা আসুক সেটা তিনি করেন। যখন দেখল তার নামে অপপ্রচার কোনো কিছু করেই থামাতে পারছে না তখন এই ১৫ই আগস্ট এর ঘটনাটা ঘটালো। তারপর থেকে আমরা কী দেখি? আসলে আমাদের সংস্কৃতি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা, আমাদের সামাজিক অবস্থা একে একে চলে যাচ্ছে। কারণ এরা তো চায়নি বাংলাদেশ কখনো সম্মান নিয়ে বাঁচবে বা বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। তাদের নীতিই ছিল না।

তিনি বলেন, যে কারণে আমরা যেদিন বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ঘোষণা দেই সেদিন বিএনপির বক্তব্য ছিল যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করার ধারণায় বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না। অতএব বাংলাদেশের মানুষ সারা জীবন ভিক্ষা চেয়ে চলবে। মানুষের কাছে হাত পেতে চলবে। এটা ছিল তাদের নীতি।

‘আমরা প্রথম যখন সরকার গঠন করলাম ২১ বছর পর যখন ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরলাম তখন এদেশের মানুষের চেতনা ফিরলো। এই আমাদের দেশ এভাবেই অনেক ত্যাগের মাধ্যম দিয়ে এই দেশকে অর্জন করেছি। মানুষের ভেতরে একটা আত্মবিশ্বাস আমরা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। যে কারণে খুব অল্পদিনের মধ্যে অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ দুর্যোগ সে দুর্যোগ মোকাবিলা করেও বাংলাদেশে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম।’

তার সরকারের নানান প্রচেষ্টায় আজকে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে গেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বাংলাদেশেই একটা উন্নয়ন আমরা করতে পেরেছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকের চিকিৎসা ব্যবস্থা খাদ্যের নিরাপত্তা সবকিছু আমরা নিশ্চিত করে যাচ্ছি। ২০০৮ এর নির্বাচনে বাংলাদেশকে নিয়ে আমাদের যে রূপকল্প ছিল ২০২১ সালে তা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমরা একদিকে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করার সময় উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এটাকে ধ্বংস করাও তাদের চেষ্টা। বিএনপি আর জামায়াত মিলে অগ্নিসন্ত্রাস। এটা মানুষ কীভাবে ভুলবে? জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা। এভাবে কোনো জীবন্ত মানুষকে মানুষ পুড়িয়ে মারতে পারে এই দৃষ্টান্ত বিএনপিই দেখাতে পারে। বিএনপি দেখিয়েছেও সেটা। চলন্ত বাসে আগুন, গাড়িতে আগুন, লঞ্চে আগুন, সিএনজিতে আগুন, গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে তার গায়ে পেট্রল ঢেলে দিয়ে আগুন। তারা যে আগুন নিয়ে খেলেছিল বাংলাদেশের মানুষ যদি তাদের বেলায় এই আগুন নিয়ে খেলে তাহলে তাদের কী অবস্থা হবে সেটা কি একবারও ভেবে দেখে বিএনপি।

অগ্নি সন্ত্রাসী যারা করে তাদের সম্পর্কে দেশের মানুষকে আরও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ যুবলীগসহ আমাদের যত সহযোগী সংগঠন প্রত্যেকে সব সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে বলব ওদের অপকর্মের কথাগুলি মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। ওরা লুটপাট করতে আসে, ওরা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। তাদের পাচার করা টাকা তো আমরা উদ্ধার ও করেছি। খালেদা জিয়া, তারেক, কোকো টাকা পাচার করেছিল, ৪০ কোটি টাকা কিন্তু আমরা বিদেশ থেকে উদ্ধার করে ফেরত নিয়ে এসেছি। আরও অনেক টাকা তাদের অনেকেরই আছে। ফ্রিজড করা আছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। যারা নিজের দেশের অর্থ অন্যের কাছে তুলে দেয়, নিজের দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দেয় আর নিজের দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মারে তারা আবার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে কীভাবে সেটাই আমাদের প্রশ্ন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *