অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইরানের কঠোর ইসলামিক পোশাক বিধি অনুযায়ী নারীদের স্কার্ফ পরার বাধ্যবাধকতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করায় দেশটির কর্তৃপক্ষ গত ২৪ ঘণ্টায় দেড় শতাধিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে।
দেশটির পুলিশ নজরদারি ক্যামেরা এবং ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইন লঙ্ঘনকারী নারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে বলে জানানোর একদিন পর রোববার দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ার এই ঘোষণা এলো।
১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পরপরই ইরানে জনসম্মুখে নারীদের স্কার্ফ পরার প্রয়োজনীয়তাকে আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
দেশটির পুলিশের মুখপাত্র সাইদ মনতাজেরোলমাহদি বলেছেন, দুর্ভাগ্যবশত পোশাক বিধির ব্যাপারে পূর্ববর্তী সতর্কতা মেনে না চলায় ১৩৭টি দোকান এবং ১৮টি রেস্তোরাঁ ও অভ্যর্থনা এলাকা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে তেহরানে হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে দেশটির পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাহশা আমিনি (২২) নামের এক তরুণী। দেশটির নীতি পুলিশের জিম্মায় থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ার তিনদিন পর মারা যান তিনি। এই তরুণীর মৃত্যুর পর থেকে ইরানে হিজাব পরার বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও জোরদার হয়েছে। তবে দেশটির পুলিশ সহিংস অভিযান চালিয়ে আন্দোলনকারীদের দমন করছে।
এখনও বাধ্যতামূলক পোশাক পরার বিধি উপেক্ষা করে গ্রেপ্তারের ঝুঁকি নিয়েই দেশটির নারীরা শপিং মল, রেস্তোরাঁ, দোকান ও সড়কে চলাচল করছেন। ইরানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশটির নীতি পুলিশের সাথে নারীদের বাগ-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ার অসংখ্য ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
গত সপ্তাহে ইরানের পুলিশের প্রধান আহমদ-রেজা রাদান বলেছিলেন, যারা মাথার স্কার্ফ খুলে ফেলবে তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে।
পুলিশ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, কোনও নারী যাত্রী যদি পোশাক বিধি লঙ্ঘন করেন, তাহলে গাড়ির মালিকদের একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হবে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে তাদের গাড়ি জব্দ করার ঝুঁকি থাকবে।
মনতাজেরোলমাহদি বলেছেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ পোশাক বিধি লঙ্ঘনের কয়েকশ ঘটনা রেকর্ড করেছে এবং গাড়ির মালিকদের ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে তা জানানো হয়েছে।’
গত মাসে দেশটির বিচার বিভাগের প্রধান গোলাম হোসেন মোহসেনি ইজেই বলেছিলেন, নারীরা তাদের মাথার স্কার্ফ খুলে ফেললে শাস্তির মুখোমুখি হবেন। সূত্র: এএফপি।
Leave a Reply