অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রভাবশালী প্রতিবেশীরা বাড়ি ও জমি দখল করে নেওয়ায় গত ২০ বছর ধরে এলাকা ছাড়া রয়েছেন নেত্রকোণার কেন্দুয়ার সিংহেরগাঁও গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের (৫০) পরিবার।
সম্পত্তি ফেরত চাইতে গেলেই দখলকারী তাকে নানারকম হুমকি ধামকি দেন। এ অবস্থায় অসহায় গিয়াস উদ্দিন দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন এবং স্ত্রী ও চার সন্তানসহ কখনও ঢাকায় আবার কখনও শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে আসছেন।
এদিকে, জমি দখলমুক্ত করতে স্থানীয় মাতব্বর, জনপ্রতিনিধি ও থানা পুলিশের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না গিয়াস উদ্দিন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিংহেরগাঁও গ্রামের মৃত মিয়া হোসেনের একমাত্র ছেলে গিয়াস উদ্দিন। তার বাবা ও চাচা মিরাজ আলী দুই ভাই ছিলেন। মিরাজ আলী ছিলেন নিঃসন্তান। এ অবস্থায় ওয়ারিশ সূত্রে পৈত্রিক ও চাচার সম্পদের ১২১ শতাংশের (১২ কাঠা ১ শতাংশ) মালিক গিয়াস উদ্দিন। কিন্তু গিয়াস উদ্দিনকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তা দখল করেন প্রভাবশালী প্রতিবেশী নাবালক ফকির ও আল আমিন গংরা।
অসহায় গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমার বাবা খুবই নিরীহ মানুষ ছিলেন। আমরা চার বোন, এক ভাই। বাবা জীবিত থাকা অবস্থাতেই নাবালক ফকির ও আল আমিন গংরা আমাদেরকে উচ্ছেদ করে বাড়ি-জমি দখল নিতে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। এরইমধ্যে বাবার মৃত্যু হলে তারা আমাদের বাড়ি-জমি দখল নিয়ে নেয় এবং আমাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসব কাহিনী এলাকাবাসীও জানেন।
তিনি বলেন, আমার বাবা ও চাচার রেখে যাওয়া জমিজমার মধ্যে ওয়ারিশান সূত্রে আমি সিংহেরগাঁও মৌজার ৮৭৬ খতিয়ানের ৮৭২ দাগে ৮ শতাংশ, ৮৮৯ দাগে ৮ শতাংশ, ৮৭৩ দাগে ৭ শতাংশ, ৮৭৮ খতিয়ানের ৯৯৭ দাগে ২ শতাংশসহ মোট ১২১ শতাংশ জমিজমা প্রাপ্ত হই। আমার এই জায়গা তিন বছর আগে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে আমার নামে নামজারি (খারিজ) করিয়েছি। তবুও প্রভাবশালীরা তা দখল করে রেখেছে।
স্থানীয় আশুজিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. গোলাম কাদের বলেন, রেকর্ডসহ সকল কাগজপত্র
অনুযায়ী ওই সম্পদের মালিক গিয়াস উদ্দিন। গত বছর তিনেক আগে আমরা তার নামে এসব ভূমি নামজারি করে দিয়েছি। তবে জায়গা দখলমুক্ত করার বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। এটা মামলা করে আদালতের মাধ্যমে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে করতে হবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত আল আমিন বলেন, আমরা কারো জায়গা দখল করিনি। আমাদের দখলে যেসব জায়গা রয়েছে তা আমাদের কেনা সম্পত্তি।
আশুজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিংহেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুর আলী বলেন, ঘটনাটা আমাদের সবারই জানা আছে। গিয়াস উদ্দিনের জায়গা দীর্ঘদিন যাবত অন্যায়ভাবে ভোগদখল করে আসছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় গ্রাম্য সালিশ হলে বিষয়টা সমাধান করা যেতো। কিন্তু স্থানীয় কিছু কুচক্রী মানুষের জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ওসি মো. আলী হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি ভালোভাবে জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব এবং এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
Leave a Reply