অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে উত্তর আকাশে আবারও দেখা দিল কাঞ্চনজঙ্ঘার পর্বতশৃঙ্গ । টানা কয়েকদিনের মেঘলা আবহাওয়ার পর আজ মঙ্গলবার সকালে মেঘমুক্ত আকাশে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে স্পষ্ট দেখা গেছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা।
ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দিগন্ত জোড়া সাদা রূপালি চূড়া যেন নতুন দিনের সৌন্দর্যে যোগ করেছে অন্য রকম আবেশ। আকাশ পরিষ্কার থাকায় সকাল থেকেই মানুষ ভিড় করছেন তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলো এলাকাসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করেছেন।
কাঞ্চনজঙ্ঘা ঘিরে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রতিবছর পর্যটকের ঢল নামে। বিনাপাসপোর্টে ভারত-নেপালে না গিয়েই তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ায় পর্যটন অঞ্চল হিসেবে সমৃদ্ধ হয়েছে জেলাটি। এ অঞ্চলের পর্যটন স্পট ডাকবাংলোর পিকনিক কর্নার ও মহানন্দা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে দেখা যায় রূপশ্বৈর্য পর্বতমালা কাঞ্চনজঙ্ঘা। এসব স্পটসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে পর্যটকরা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখছেন, ছবি তুলছেন ও ভিডিও করে ছড়িয়ে দিচ্ছেন ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
জানা গেছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা হিমালয়ের পূর্বাংশে নেপাল ও ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার (২৮ হাজার ১৬৯ ফুট), যা এভারেস্ট ও কে-টু’র পর বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। তেঁতুলিয়া থেকে এই শৃঙ্গের দূরত্ব কাছে হওয়ায় আকাশ পরিষ্কার থাকলে ঊঁকি দেয় অপরূপ সৌন্দর্যের মায়াবী কাঞ্চনজঙ্ঘা।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালের মেঘের ঢল কাটলেই ভাদ্র তথা সেপ্টেম্বরে মাঝে মধ্যে পরিষ্কার হয়ে উঠে আকাশ। মেঘের ঘনঘটা কেটে পরিষ্কার আকাশে দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য। তবে প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যটকদের কাছে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হিসেবে বিবেচিত হয়। ইতোমধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা বুকিং দিচ্ছেন হোটেল ও রিসোর্টগুলোতে।
স্থানীয় সাংবাদিক মোবারক হোসেন বলেন, ভারত-নেপালের যুগল পর্বতশৃঙ্গ হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা। পর্বত দুটি আমাদের দেশের না হলেও বাংলাদেশের একমাত্র পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে খুব কাছ থেকে দেখা যায়। প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দেখা যায় এটি। ছবির মতো ভেসে ওঠা শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য ছাড়াও দেখা মেলে প্রতিবেশী দেশ ভারতের দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চল।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আকাশে মেঘ ছিল। আজ সকালে উত্তরাঞ্চলে ঠাণ্ডা হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে, বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় আকাশ পরিষ্কার হয়েছে। এই অবস্থায় তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা সম্ভব হয়েছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, তেঁতুলিয়া একটি পর্যটন এলাকা। এখানে খুব কাছ থেকে হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। পর্যটকদের জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক সচেষ্ট আছি।