অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পোস্টাল ভোটিংয়ের বিষয়টি জটিল হলেও আগামী নির্বাচনে সেটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে বাংলাদেশ। আজ (রোববার) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন এ মন্তব্য করেন।
সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনের সেমিনার কক্ষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইসির সংলাপে সভাপতিত্ব করার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, এ বছর আমরা অনেকগুলো নতুন উদ্যোগ নিয়েছি, বিশেষ করে প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থার বিষয়টি তার মধ্যে অন্যতম। এটা অত্যন্ত জটিল বিষয় বলে অতীতে কেউ এখানে হাত দেয়নি।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্বের অনেক দেশই সফলভাবে এটি করতে পারেনি। তবে আমরা বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত শুরু করতে যাচ্ছি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, পোস্টাল ভোটিংয়ের মত নানা জটিল ও নতুন বিষয় আগামী নির্বাচনে দেখা যাবে। এজন্যই এবারের নির্বাচনটি হবে বিশেষ।
তিনি বলেন, এর বাইরেও আমাদেরকে অনেকগুলো বড় কাজে হাত দিতে হয়েছে। বিশেষ করে ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিশাল কাজ করতে হয়েছে। এসব কাজে ৭৭ হাজার কর্মী মাঠে ছিল। তাদের সবাইকে প্রশিক্ষণও দিতে হয়েছে।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ভোটগ্রহণের দিন প্রায় দশ লক্ষ লোক বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে প্রিসাইডিং অফিসার-নিজেরাই অনেকসময় ভোট দিতে পারেন না। তাদের জন্য এবছর ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীরাও বিভিন্ন ইনস্টিটিউশনে পোস্টেড থাকেন। আবার যারা কারাগারে আছে, তাদেরও ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধা ছিল যে নির্বাচন সংস্কার কমিশন আমাদের পক্ষে অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কারণ তারা আমাদের কাছে রিপোর্ট দেওয়ার আগে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বিভিন্ন অংশীদার ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিসহ অনান্য পক্ষের সঙ্গে ৮০টিরও বেশি সংলাপ করেন তারা। সেইসঙ্গে ঐকমত্যের জন্য কমিশনেও অনেকগুলো বৈঠক হয়েছে। এতে আমাদের কাজ অনেকখানি এগিয়ে গেছে।
একটি সুন্দর, গ্রহণযোগ্য পরিবেশে নির্বাচন পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে এই কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। ভোটারদের ওপর রাজনৈতিক ও জাতীয় নেতাদের সরাসরি প্রভাব রয়েছে। তাই তাদের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য করণীয় বিষয়েও আমাদের পরামর্শ দরকার।
বক্তব্যের শেষে যথাযথভাবে নির্বাচন আচরণবিধি পালন করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সংলাপে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অবঃ), তাহমিদা আহমেদ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ আরও অনেকে।
সকালের বৈঠকে অংশ নেয়া দলগুলো হল: গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি।
উল্লেখ্য, আজ দুপুর ২টা থেকে আরও ৬টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কমিশনের সংলাপ হবে। দলগুলো হল: বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।