অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, আমরা দায়িত্ব নেবার পর থেকেই বিভিন্নভাবে বিএনপিকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য আহবান জানাচ্ছি। তারা সাড়া দিচ্ছেনা। তবে আমরা তাদের সংলাপে বসার জন্য আহবান জানাতেই থাকবো, এই আহবান শেষ হবেনা।
শনিবার রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
রাশেদা সুলতানা বলেন, “অনেক বার বলেছি আপনারা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে আসেন আলোচনা করি। আমরা দাওয়াত দিলাম আপনারা সাড়া দিলেন না, এ ক্ষেত্রে আমরা কিবা করতে পারি।”
আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নির্বাচনে যাতে সব প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে সে ব্যাপারে আমরা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এখানে সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।”
“দেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করে দেখেছি এখানে কারচুপি করার কোন সুযোগ নেই, জাল ভোট দেবার কোন উপায় নেই, হাতের আঙ্গুলের ছাপ না মিললে ভোট দেয়া যায়না, একজনের ভোট আরেকজনের দেবার কোন উপায় নেই। সে কারণে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করাটাই উত্তম মনে করে আমরা রংপুর সিটি নির্বাচনে এ ব্যবস্থা নিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে, আমরা ঢাকা থেকে সরাসরি ভোটদান পদ্ধতি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে কিনা তা দেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবো। নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম বরদাশত করা হবেনা, নুন্যতম অনিয়মের অভিযোগ পেলে ভোটদান স্থগিত এবং প্রয়োজনে বাতিল করে দেয়া হবে।”
নির্বাচন কমিশনার বলেন, “রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করবো।”
৩শ’ আসনেই ইভিএমএর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করতে চেয়েছিলাম, পরে দেড়শ’ আসনে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সেই প্রকল্প অনুমোদন না দিলে দেড়শ’ আসনে নির্বাচন করাও সম্ভব হবেনা বলে জানান তিনি।
রংপুরে প্রায় দশ হাজার ইভিএম মেশিন নষ্ট বলে স্বীকার করে রাশেদা সুলতানা বলেন, “সেই ইভিএম মেশিনগুলো রংপুর সিটি নির্বাচনে একটাও ব্যবহার করা হবেনা। আরও মেশিন আছে, এমনকি যেসব জায়গায় ইভিএম’র মাধ্যমে ভোট হয়েছে সেই মেশিনগুলো আনা হচ্ছে। এ নিয়ে কোন সমস্যা হবেনা।”
তবে অচল মেশিন কোন অবস্থাতেই ব্যবহার করা হবেনা বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২১৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে যারা অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন তাদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের সদস্য বা সমর্থক পাওয়া গেলে তাকে কোন অবস্থায় দায়িত্ব দেয়া হবে না।
রংপুর সিটি নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সে প্রসঙ্গে রাশেদা সুলতানা বলেন, “জাতীয় পার্টিতে দুটো গ্রুপিং হয়েছে, এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোন দায় নেই। দলীয়ভাবে তারাই বিষয়টি ঠিক করবেন। আরপিওতে পরিষ্কার বলা আছে, দলীয় প্রতীক কারা বরাদ্দ দেবেন। ফলে এ নিয়ে কোন সমস্যা হবেনা।”
এর আগে ইসি রাশেদা সুলতানা রংপুর সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছুলে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মোঃ সাবিরুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা শাহাতাব উদ্দিন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন প্রমুখ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষন কর্মশালায় যোগ দেন তিনি।
Leave a Reply