অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বিয়ের ১৪ বছর পর এই কথা জানতে পেরেছেন স্বামী। আর এরপরই স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি। এমনকি স্ত্রী তাকে ব্যবহার করে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ওই স্বামী।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। গত মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিয়ের ১৪ বছর পর কলকাতার একজন ব্যবসায়ী তার স্ত্রীর জাতীয়তা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। ১৪ বছর আগে বিয়ে হলেও সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী আসলে বাংলাদেশি নাগরিক। আর এরপরই লোকটি তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। তার অভিযোগ, ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য তার স্ত্রী তাকে ব্যবহার করেছেন।
ইন্ডিয়া টুডে বলছে, পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী তাবিশ এহসান ২০০৯ সালে নাজিয়া আমব্রিন কুরাইশির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের সময় নাজিয়া নিজেকে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। তাদের বিয়ে উভয় পরিবার মাধ্যমেই হয়েছিল এবং ২০২২ সাল পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক চলছিল।
ইন্ডিয়া টুডে টিভির সাথে কথা বলার সময় তাবিশ বলেন, ‘আমি নাজিয়ার সাথে প্রথমবারের মতো একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখা করি এবং আমাদের আত্মীয়রা রাজি হওয়ার পরে আমরা বিয়ে করেছিলাম। পারিবারিকভাবেই আমাদের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের আগে তিনি (নাজিয়া) দাবি করেছিলেন, তিনি উত্তরপ্রদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই বড় হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে তার নাগরিকত্ব নিয়ে আমাদের কোনও সন্দেহ ছিল না।’
তার অভিযোগ, তবে দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের আগে নাজিয়া হঠাৎ করে উত্তরপ্রদেশে তার বাবার বাড়ি চলে যায় এবং তার সাথে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে জানায়, নাজিয়া তার কাছে ফিরে আসবে না। এমনকি তিনি তার (নাজিয়ার) পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে হুমকি পেয়েছেন বলেও দাবি করেন তাবিশ।
পরে নাজিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাবিশ এহসানের বিরুদ্ধে ৪৯৮এ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। তবে কলকাতার আলিপুর আদালত তাকে সেই মামলায় জামিন দেয়। আর এই সময়ই তাবিশ তার স্ত্রীর আসল জাতীয়তা সম্পর্কে জানতে পারেন। তাবিশ তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে জানতে পারেন, নাজিয়া আসলে একজন বাংলাদেশি নাগরিক।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতে পারি, আমার স্ত্রী এর আগে বাংলাদেশে একবার বিয়ে করেছিলেন। এক শিক্ষককে বিয়ে করেছিলেন তিনি। এরপর তার বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা করে এবং রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে তাকে বিবাহবিচ্ছেদ করতে বাধ্য করেন।’
তাবিশের দাবি, ‘এরপর অবৈধ উপায়ে ভারতে চলে আসে নাজিয়ার পরিবারের সবাই। এরপর ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে আমাকে বিয়ে করে সে। তারা চক্রান্ত করে আমাকে ব্যবহার করেছে।’
এরপর কলকাতার তিলজলা থানায় নাজিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তাবিশ। তার অভিযোগ, বিভিন্ন নথিপত্র সামনে আনার পরও ‘পুলিশ আমার অভিযোগের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়।’
তাবিশ আরও দাবি করেছেন, ২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কানাডায় ছিলেন নাজিয়া। কী ভাবে পাসপোর্ট ছাড়াই তিনি কানাডার ভিসা পেলেন তারও তদন্ত প্রয়োজন। এব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, পাসপোর্ট দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগে চিঠিও লেখার কথা জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে অবশ্য নাজিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।
Leave a Reply