December 13, 2025, 9:47 am
শিরোনামঃ
ত্রি-মাত্রিক বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় পর্যাপ্ত অর্থায়নের আহ্বান বাংলাদেশের গণভোটে যে চারটি প্রশ্ন থাকবে কোমায় আছেন গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদি : চিকিৎসক ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রী খুনের ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার সিরাজগঞ্জে পরিত্যক্ত অবস্থায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২১৩ কেজি চাল উদ্ধার কুমিল্লায় ভুট্টা ক্ষেত থেকে অটোরিকশা চালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার স্কুলে কিশোরীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করলো অস্ট্রিয়া পার্লামেন্ট ভেঙে দিলেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির আলোচনা
এইমাত্রপাওয়াঃ

ভারত ও চীন কি যুক্তরাষ্ট্রের তেল নিষেধাজ্ঞা মানবে নাকি উপেক্ষা করবে ?

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার দুটি প্রধান তেল কোম্পানির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বিশ্ববাজারে তীব্র অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্লেষকদের প্রশ্ন—অন্য দেশগুলো, বিশেষত চীন ও ভারত, এই নিষেধাজ্ঞা মানবে নাকি উপেক্ষা করবে?

গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন রাশিয়ার প্রধান দুটি তেল কোম্পানি—রোসনেফট ও লুকঅয়েল—এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য রাশিয়ার অর্থনীতির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা। এখন ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য প্রধান প্রশ্ন হলো: তিনি কি বিশ্বকে বোঝাতে পারবেন যে, তারা যেন রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ করে?

ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা’র উদ্ধৃতি দিয়ে পার্স টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, সামরিক গবেষণা সংস্থা RUSI-এর আর্থিক নিরাপত্তা কেন্দ্রের পরিচালক টম কিটিং মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার প্রভাব ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞার চেয়েও বেশি হয়েছে। তার মতে, “ট্রাম্প এমন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেন যা অন্যরা এড়িয়ে যান; এই নিষেধাজ্ঞাগুলো হতে পারে গেম-চেঞ্জার।”

নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, রাশিয়ার তেল ক্রয়কারী কোম্পানিগুলো ডলারের ভিত্তিতে পরিচালিত বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারবে না। এর ফলে সবচেয়ে বড় আঘাত আসবে চীন ও ভারতের ওপর—দুটি দেশই ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার জ্বালানি আমদানিতে শীর্ষে রয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পরপরই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম প্রায় ৬ শতাংশ বেড়ে যায়। খবর আসে যে, ভারতের কয়েকটি বড় তেল শোধনাগার ও চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো রাশিয়া থেকে তেল সরবরাহ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।

সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (CREA)-এর বিশ্লেষক লুক উইকেন্ডেন বলেছেন, এশীয় বাজারে এই পতন রাশিয়ার রপ্তানি আয়ের জন্য ভয়াবহ হবে। তার হিসাব অনুযায়ী, চীন ও ভারতের বাজার হারালে রাশিয়া মাসে প্রায় ৭.৪ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় এবং ৩.৬ বিলিয়ন ডলার কর রাজস্ব হারাবে।

ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপে চীন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বেইজিং ট্রাম্প প্রশাসনকে “একতরফা জবরদস্তি ও অর্থনৈতিক নিপীড়নের” অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে এবং সতর্ক করেছে যে, জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা কঠোর পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।

অন্যদিকে ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, ভারত রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় কমাবে এবং যুদ্ধের অবসান কামনা করে। তবে ভারত সরকার এ দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞা কেবল রাশিয়ার অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে নয়; এটি ইউরোপীয় জ্বালানি বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বাড়ানোরও কৌশল।

রাশিয়ার গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এখন ইউরোপের সবচেয়ে বড় তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) সরবরাহকারী। গত বছর ইউরোপের আমদানিকৃত মোট এলএনজির ৫৫ শতাংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে—যা ২০১৯ সালে প্রায় শূন্য ছিল।

যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৭ সালের শুরুতে রাশিয়ার গ্যাস আমদানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবুও ইউরোপের কিছু দেশ এখনো রাশিয়া থেকে তরল গ্যাস ক্রয় করে রাশিয়ার রাজস্ব প্রবাহ বজায় রাখছে।

ট্রাম্পের নতুন নিষেধাজ্ঞার পেছনে মূলত দুটি লক্ষ্য রয়েছে—  রাশিয়ার আর্থিক ভিত্তি দুর্বল করা এবং  যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি রপ্তানি বাজার শক্তিশালী করা।

বিশ্ববাজারে এই কৌশলের প্রভাব কতটা গভীর হয়, তা নির্ভর করছে চীন ও ভারতের পরবর্তী সিদ্ধান্তের ওপর।

আজকের বাংলা তারিখ

December ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Nov    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  


Our Like Page