November 4, 2025, 8:57 am
শিরোনামঃ
আজ বেদনাবিধুর ও কলঙ্কিত জেলহত্যা দিবস গণভোট নিয়ে দলগুলো ‘ঐকমত্যে’ পৌঁছাতে না পারলে সিদ্ধান্ত দেবে সরকার : আইন উপদেষ্টা সংকটময় মুহূর্তে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে আসন্ন নির্বাচন : সিইসি বিতর্ক সত্বেও বাংলাদেশে আসতে পারেন বিশ্বখ্যাত ইসলামি বক্তা জাকির নায়েক নোয়াখালীতে এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা দাহ কুমিল্লায় সীমান্ত এলাকা থেকে ১ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি পটুয়াখালীতে বাসে অভিযান চালিয়ে ১৪০০ কেজি জাটকা জব্দ যুদ্ধের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে ট্রাম্প বললেন ‘ভেনিজুয়েলার নেতা মাদুরোর দিন শেষ’ ইসরাইলকে আরও তিন জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস রাশিয়া ও চীন পরমাণু পরীক্ষা চালিয়েছে : ট্রাম্প 
এইমাত্রপাওয়াঃ

মধ্যবিত্ত ভারতীয় থেকে যেভাবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হলেন ঋষি সুনাক

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মরিশাস হোক বা গায়ানা, আয়ারল্যান্ড হোক বা পর্তুগাল কিংবা ফিজি- ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতাদের একটা দীর্ঘ তালিকা আছে যারা এসব দেশগুলোর প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি পদে থেকেছেন।

বিশ্বে ভারত ছাড়া অন্য এমন দেশ নেই, যে দেশের বংশোদ্ভূতরা ৩০টিরও বেশি দেশ শাসন করেছেন বা এখনও ক্ষমতার শীর্ষে রয়েছেন। ৪২ বছর বয়সী ঋষি সুনাকের নামও এবার সেই তালিকায় উঠে গেল। ব্রিটেনের রাজনীতিতে খুব দ্রুতই উত্থান হয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাকের।

২০১৫ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে প্রথমবার পার্লামেন্ট সদস্য হন ঋষি সুনাক। আর তার মাত্র সাত বছরের মধ্যেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন। বিরোধী দল লেবার পার্টির বর্ষীয়ান নেতা ভিরেন্দ্র শর্মা সুনাককে খুব ভালো করেই চেনেন। দুজনেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি আর দুজনেরই যোগ রয়েছে পাঞ্জাবের সঙ্গে।

ঋষি সুনাকের ব্যাপারে শর্মা বলছিলেন, ‘আজ আমরা এমন একটা স্তরে এসে পৌঁছিয়েছি, যেখানে স্থানীয় সমাজ, রাজনৈতিক ব্যবস্থার অংশ হয়ে গেছি আমরা। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের অর্থনৈতিক ক্ষমতাও বেড়েছে। রাজনীতিতেও দেখা যায় যে প্রায় জনা চল্লিশেক এশীয় এবং কালো চামড়ার মানুষ পার্লামেন্টের সদস্য।’

কয়েকজন বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, ঋষি সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়া একটা ঐতিহাসিক ঘটনা- ঠিক যেরকমটা হয়েছিল ২০০৮ সালে বারাক ওবামা যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঋষি সুনাকের আগেও অবশ্য এশিয়রা ব্রিটেনের রাজনীতিতে মন্ত্রী আর মেয়র হয়েছেন, বেশ কিছু শীর্ষ পদেও তারা আসীন হয়েছেন।

যেমন প্রীতি প্যাটেল ব্রিটেনের হোম সেক্রেটারি হয়েছিলেন আর লন্ডনের মেয়র হয়েছিলেন সাদিক খান। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ পর্যন্ত আর কেউ পৌঁছতে পারেননি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে সুনাকের উত্থান আসলে এশীয়দের সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত। ঋষি সুনাকের পরিবার তিন প্রজন্ম ধরেই ভারতের বাইরে বসবাস করে। তার দাদা-দাদী দেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক আগেই বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে পূর্ব আফ্রিকায় পালিয়ে গিয়েছিলেন।

অনেক বছর বাদে তারা যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন শহরে এসে বসবাস করতে থাকেন। ১৯৮০ সালে জন্ম হয় ঋষি সুনাকের। তিনি সাউদাম্পটনেই বড় হয়েছেন। ব্রিটেনের সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ধারণা আছে যে ঋষি সুনাক খুবই ধনী। সেজন্যই আম জনতার সঙ্গে তার একটা দূরত্বও রয়েছে।

সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ব্রিটেনের সবথেকে ধনী যে ২৫০টি পরিবার, তার মধ্যে সুনাকের নামও রয়েছে। কিন্তু তিনি কি উত্তরাধিকার সূত্রে এই বিপুল ধনরাশির মালিক? এর উত্তর সাউদাম্পটনেই পাওয়া যায়, যেখানে সুনাকের জন্ম আর বড় হয়ে ওঠা। সাউদাম্পটনে এমন অনেককে পাওয়া গেল যারা সুনাককে ছোটবেলা থেকেই চেনেন, আবার এখনও তার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।

সাউদাম্পটনে বৈদিক সোসাইটি মন্দির হিন্দু সম্প্রদায়ের একটা বড় মন্দির আছে, যার প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে সুনাকের পরিবারও ছিল। তার ছোটবেলার অনেকটা সময়ই কাটত ওই মন্দিরে।

৭৫ বছর বয়সী নরেশ সোনচাটলা ঋষি সুনাককে ছোট থেকেই চেনেন। তার কথায়, ‘ঋষি সুনাক যখন ছোট ছিলেন, তখন নিয়মিত মন্দিরে আসতেন তিনি। সঙ্গে কখনও দাদা দাদী, কখনও আবার ওর বাবা মা থাকতেন।’

সঞ্জয় চন্দারাণা কর্পোরেট জগতের একটা বড়সড় পদ চাকরি করেন, আবার তিনি বৈদিক সোসাইটি হিন্দু মন্দিরের সভাপতিও। চন্দারাণার কথায়, ‘উনি রুটি বানাচ্ছিলেন। সেগুলো বেশ গোলও হচ্ছিল। আমি জানতে চেয়েছিলাম বাড়িতে উনিই রান্না করেন না কি! উনি জবাব দিয়েছিলেন যে রান্না করতে ওর বেশ ভালই লাগে। আমি একটু পরে বলেছিলাম যে মন্দিরের যে শিশুদের স্কুল রয়েছে, সেখানকার বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহী কি না। উনি বেশ উৎসাহের সঙ্গেই শিশুদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।’

ঋষি সুনাকের বাবা যশবীর সুনাক চিকিৎসক আর তার মা ঊষা সুনাক কিছুদিন আগে পর্যন্তও একটা ওষুধের দোকান চালাতেন। তারা সাউদাম্পটনেই থাকেন এখনও। ঋষি সুনাক একটা সাধারণ হিন্দু ধর্মীয় পরিবারেই বড় হয়েছেন। অন্যান্য মধ্যবিত্ত পরিবারের মতোই পড়াশোনা আর ক্যারিয়ারের ওপরেই নজর দিত তার পরিবারও। সেজন্যই তার বাবা সুনাককে একটা প্রাইভেট স্কুলে পড়িয়েছেন।

নিজের ওয়েবসাইটে সুনাক লিখেছেন, ‘আমার বাবা মা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন যাতে আমি একটা ভাল স্কুলে পড়াশোনা করতে পারি। আমি ভাগ্যবান যে উইনচেস্টার কলেজ, অক্সফোর্ড আর স্ট্যানফোর্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি।’

ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতা মূর্তির সঙ্গে ঋষি সুনাকের বিয়ে হয় ২০০৯ সালে। ভারতের বেঙ্গালুরু শহরে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল। তাদের দুই সন্তান রয়েছে। তার যে ঘোষিত ৭৫০ মিলিয়ন পাউন্ড সম্পত্তি আছে, তার বেশিরভাগেরই মালিক তার স্ত্রী।

ঋষি সুনাক ওয়েবসাইটে লিখেছেন, ‘আমার সৌভাগ্য যে আমি ব্যবসায়িক ক্যারিয়ারে আমি সফল হতে পেরেছি। একটা বড় ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি তৈরি করতে পেরেছি, যারা সিলিকন ভ্যালি থেকে শুরু করে বেঙ্গালুরু – বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ করে থাকে।

ঋষি সুনাক করোনা মহামারির ঠিক আগে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন। এটা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটা বড় দায়িত্ব ছিল, কারণ ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রীর পরেই অর্থমন্ত্রী সবথেকে বেশি গুরুত্ব পেয়ে থাকেন। সে সময়ে সুনাকের কাজকর্মের কারণে অনেকেই তাকে প্রধানমন্ত্রীর হিসাবে দেখতে চাইছিলেন। এতদিনে তাদের সেই আশা পূর্ণ হচ্ছে।

 

আজকের বাংলা তারিখ

November ২০২৫
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Oct    
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০


Our Like Page