ফারুক আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি : মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর ইউনিয়নে গ্রামীণ অবকাঠামো প্রকল্পের টিআর, কাবিখা ও কাবিটা কাজের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা-টাকা) প্রকল্পের ক্রমিক নং ১৪ খালিমপুর ঝান্টু জর্দ্দারের বাড়ির পূর্ব পার্শ্বের পাকা রাস্তা হতে বাবুর আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মাটি ও ইট দ্বারা উন্নয়ন কাজ ৬০৮ ফুট কাজ করা হয়েছে। এই কাজের টাকার পরিমাণ ৪ লাখ টাকা, এখানে ১৭-১৮ হাজার নিম্ন মানের ইন্টার ইট ব্যবহার করা হয়েছে যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
সরজমিনে রবিবার ১৪ ডিসেম্বর পরিদর্শনে দেখা যায় রাস্তার দুইপাশে ১ ফুট থেকে দেড় ফুট মাটি দেওয়া নেই কোন রকম হেজিংয়ের পাশে অল্প মাটি দেওয়া আছে এছাড়াও মাটিতে ইট বিছানোর সময় ২ থেকে আড়াই ইঞ্চি বালি দেওয়ার নিয়ম থাকলে সামান্য আফ ইঞ্চির নিচে বালি দেওয়া হয়েছে অথবা কোন কোন স্থানে সরাসরি মাটির উপর ইট বসানো হয়েছে। কাজ হয়েছে ১ সপ্তাহ ইতিমধ্যেই জায়গায় জায়গায় ইট উঠে যাচ্ছে ও ধ্বসে যাচ্ছে।
মিস্ত্রিরা জানান ফুট ৫০ টাকা হিসেবে ৬০৮ ফুট কাজের পারিশ্রমিক হয় ৩০ হাজার ৪০০ টাকা। এই কাজের পিআইসি মেম্বার ফারুক। তাহলে এখানে ৪ লাখ টাকার প্রকল্প বরাদ্দে ব্যয় হলো কত টাকা?
(কাবিখা-খাদ্যশস্য) চাল প্রকল্প ক্রমিক নং ০৬ রাউতড়া আমজেদ মোল্যার বাড়ি হতে নদী পর্যন্ত রাস্তা মাটি ও ইট দ্বারা উন্নয়ন ৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ। এখানে ৩৩০ ফুট কাজ হয়েছে যার ইটের পরিমাণ ৯ হাজার ৫০০ শত, রাস্তার দুইপাশে মাটির পরিমাণ কোন অল্প পরিমাণ। ইটের বাজার মুল্য ৯০ হাজার টাকা। কাজের মিস্ত্রি পাবে ১৬ হাজার ৫০০ শত টাকা, আনুমানিক ৫-৭ হাজার টাকার বালি, এখানেও নিম্ন মানের ইন্টার ইট দেওয়া হয়েছে। এই কাজের পিআইসি মেম্বার মরিয়ম। তাহলে এখানে কত টাকা ব্যয় হয়েছে।
গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি,আর) সাধারণ তালিকা প্রকল্প ক্রমিক নং ২০ রাউতড়া স্কুলের পশ্চিম পার্শ্বে বিশ্বরোড হতে রতন বিশ্বাসের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মাটি ও ইট দ্বারা উন্নয়ন প্রকল্পের টাকার পরিমাণ ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এখানে কাজের মিস্ত্রির সাথে কথা বলে জানা যায়, রতন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে ১৬০ ফুট কাজ করা হয়েছে যেখানে ৪ হাজার ৫০০ শত ইট দ্বারা কাজ করা হয়েছে আর বাকী কাজ আনুমানিক ৭ হাজার ইট দ্বারা বিশ্বরোড থেকে করা হবে। এখানে নিম্ন মানের ইট আসছে বলে আমরা কাজ করছি না। এই কাজের পিআইসি মেম্বার মরিয়ম। তাহলে এখানে প্রকল্পের বরাদ্দ ব্যয় কত টাকা হবে?
এবিষয়ে মেম্বার ফারুক জানান আমি বাড়ি নেই ঐখানে কত হাজার ইট লেগেছে তা জানিনা ও মেম্বার মরিয়ম জানান, নেতারা কি কাজ করেছে তা আমি জানিনা এবং সাংবাদিকদের অশোভন আচরণমূলক কথা বলিয়াছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়, সরকারি বরাদ্দকৃত প্রকল্পের অর্থ ১ম কিস্তির টাকা দিয়ে সম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করেছে।
উক্ত বিষয়ে মাগুরা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ আবু সাঈদ মন্ডল ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল ইসলাম জানান, আমাদের কে পিআইসি মেম্বাররা কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা বলেনি এবং আমরা রাস্তা দেখি নাই। ইস্টিমেট অনুযায়ী কাজ বুঝে না দিলে ও কাজের ফাঁকি দিলে বিল পরিশোধ করা হবে না। সরকারি নিয়মমাফিক বিধিমোতাবেক কাজের ব্যয় টাকা মিলাতে না পারলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন প্রয়োজন হলে পুনরায় সঠিক নিয়মে কাজ করানো হবে।