অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : মালয়েশিয়ার ১৫তম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৯ নভেম্বর। এই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোটের চেয়ারম্যান আনোয়ার ইব্রাহিমের। তবে তার আগেই হঠাৎ করে নতুন এক অভিযোগ তোলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গুঞ্জন উঠেছে- সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের মুক্তির বিনিময়ে আনোয়ার ইব্রাহিমকে প্রধানমন্ত্রী করতে ভোটে সমর্থন দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন ইউনাইটেড মালায়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (উমনো) নেতা আহমেদ জাহিদ হামিদি।
তবে এই অভিযোগকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে আনোয়ারের রাজনৈতিক দল পিপলস জাস্টিস পার্টি (পিকেআর)।
এদিকে, ওই অভিযোগকে সত্য বলে মনে করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদও। তিনি বলেন, আমিও মনে করি তাদের সাথে একান্তে দেখা-কথা হয়েছে। এই নির্বাচনে তারা একসঙ্গেই লড়বেন।
সিঙ্গাপুরের আইএসইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের ভিজিটিং ফেলো জেমস চাই বলেন, আনোয়ার যদি উমনোর সঙ্গে এমন চুক্তি করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হবে।
জেমস চাই বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ পেতে আনোয়ারের এই প্রস্তাবে রাজি হওয়া একটা ঝুঁকির ব্যাপার। আমি মনে করি, আনোয়ার এসব করতে পারবেন না! কারণ তিনি জনপ্রিয়তা হারাবেন, নিজের সমর্থকদের হারাবেন।
১৯৯৮ সালে মাহাথির তার ডেপুটি আনোয়ার ইব্রাহিমকে বরখারস্ত করেছিলেন। দুর্নীতি ও যৌনতার অভিযোগে তাকে কারাগারেও পাঠানো হয়েছিল।
খবরে বলা হচ্ছে, আনোয়ারের বিরুদ্ধে মাহাথিরের সর্বশেষ অভিযোগটিই প্রমাণ করে যে, এখনও মাহাথিরের মনে আনোয়ারের বিরুদ্ধে ঘৃণা রয়ে গেছে। তবে আনোয়ার ইব্রাহিম সম্প্রতি এক বক্তব্যে মাহাথিরের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
পিকেআর-এর ডেপুটি প্রেসিডেন্ট রাফিজি রামলি মনে করেন, আমরা উমনোর সঙ্গে আনোয়ার ইব্রাহিমের গোপন চুক্তির কোনো কারণ দেখি না। আমরা মনে করি, পিএইচ এই নির্বাচনে ১০০টিরও বেশি আসন পাবে। তথ্য বিশ্লেষক ফার্ম ইনভোকের গবেষণায় ভোটের এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
মালয়েশিয়ার জাতীয় সংসদে (দেওয়ান রাকয়াত) মোট ২২২টি আসন রয়েছে। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে গত চার বছর পার করেছে মালয়েশিয়ার বারিশান ন্যাশনাল (বিএন) জোট সরকার। জোটটির নেতৃত্বে রয়েছে রাজনৈতিক দল উমনো। ১৯৫৭ সালের পর থেকে ২০১৮ সালের আগ পর্যন্ত এই দলটির প্রেসিডেন্টই প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকটে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ দেখা যাচ্ছে। পার্লামেন্ট সদস্যরা জোট পাল্টানোর কারণেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আগের মতো নেই। পর পর দুই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগেই উমনো নেতৃত্বাধীন জোট এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, আসন্ন এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তিনটি জোট। জোটগুলো হলো- বারিশান ন্যাশনাল (বিএন), পাকাতান হারাপান (পিএইচ) এবং আপস্টার্ট পেরিকটান ন্যাশনাল (এপিএন)।
মালয়েশিয়ায় নির্বাচন দুটি স্তরে বিদ্যমান। ফেডারেল স্তর ও রাজ্য স্তর। ফেডারেল স্তরে সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্য এবং রাজ্য স্তরের জন্য বিধানসভা সদস্যদের নির্বাচন করা হয়ে থাকে।
২০১৮ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে উমনো দল পরাজিত হয়। কিন্তু এই নির্বাচনে দলটির নেতারা আবার ক্ষমতা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। দলটির নতুন সভাপতি আহমেদ জাহিদ হামিদি জাতিকে স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির আশ্বাস দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে উমনো সভাপতি বলেন, আমাদের ভুলগুলো আমরা বুঝতে পেরেছি। আমরা ভুল শুধরে জাতিকে আরও ভালো কিছু দিতে চাই। সূত্র- এশিয়ান ওয়ান।
Leave a Reply