অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : সাম্প্রতিক এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে ট্রাম্প প্রশাসনের আক্রমণাত্মক নীতির পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে পর্যাপ্ত জনসমর্থন নেই।
রয়টার্স নিউজ এজেন্সি ও ইপসোস পরিচালিত নতুন জরিপ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ নাগরিক ট্রাম্প সরকারের সেই সামরিক অভিযানের বিপক্ষে, যার লক্ষ্য বিচার ছাড়াই মাদক–চোরাচালানের সন্দেহভাজনদের হত্যা করা। জরিপে দেখা যায়, মাত্র ২১ শতাংশ মার্কিন নাগরিক ভেনেজুয়েলার সরকারকে অপসারণের লক্ষ্যে সামরিক হস্তক্ষেপকে সমর্থন করে।
ফার্স নিউজের বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া ৫১ শতাংশ মার্কিন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক মাদকবিরোধী অভিযানের আড়ালে চালানো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরোধিতা করেছেন, যেখানে মাত্র ২৯ শতাংশ এসব কার্যক্রমকে সমর্থন করেছেন।
এই তথ্য এমন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন গত সেপ্টেম্বর থেকে অন্তত ২০টি ড্রোন হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ‘নার্কো–টেররিস্ট’ নামে চিহ্নিত ৮০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই পরিচালিত এসব হামলা যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই দলের আইনপ্রণেতা এবং লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের নেতাদের কঠোর নিন্দার মুখে পড়েছে।
জরিপটি মার্কিন সমাজে একটি গভীর দলীয় বিভাজনও উন্মোচন করেছে; যেখানে রিপাবলিকানদের ৫৮ শতাংশ এই হত্যাকাণ্ডগুলোকে সমর্থন করলেও, ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এ সমর্থন মাত্র ৮ শতাংশ— যা এই কৌশলটিকে একটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
জরিপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ভেনেজুয়েলায় সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপের প্রতি অত্যন্ত কম জনসমর্থন। ভেনিজুয়েলার বৈধ প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে অপসারণের সামরিক বিকল্পটি সমর্থন করে মাত্র ২১ শতাংশ মার্কিন নাগরিক। এই সংখ্যাটি ইঙ্গিত দেয় যে, মার্কিন জনগণ লিবিয়া ও আফগানিস্তানের ধাঁচের একটি নতুন যুদ্ধে জড়াতে আগ্রহী নয়। নিকোলাস মাদুরোও তার বক্তব্যে ইঙ্গিত করে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে শান্তির বার্তা পাঠিয়েছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলোর ব্যর্থতা এতটাই স্পষ্ট যে, হোয়াইট হাউসের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের মতো কঠোরপন্থী নেতারাও এর সমালোচনা শুরু করেছেন।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট–এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বোল্টন লিখেছেন: “মাদকবাহী নৌকা উড়িয়ে দেওয়া এবং ক্রুদের হত্যা করা হয়তো আমাদের কিছু নেতাকে আনন্দিত করতে পারে, কিন্তু তাতে মাদুরো শাসন অস্থিতিশীল হবে না।”