অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ওয়ার কলেজের ২৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রা এবং বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের সুনামের প্রেক্ষিতে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের অংশ হিসেবে প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ মিশন পরিদর্শনে আসেন। প্রতিনিধি দলে ওই কলেজে প্রশিক্ষণরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
সেনাবহিনীর প্রতিনিধিদলকে মিশনে স্বাগত জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত। প্রতিনিধি দলকে তিনি জানান, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বহুমূখী সহযোগিতা দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বাগত বক্তব্যে তিনি শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ব্যাপক অবদান এবং জাতিসংঘের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা, টেকসই শান্তি ও পিসবিল্ডিং কার্যক্রমে বাংলাদেশের নিবিড় অংশগ্রহণের কথা তুলে ধরেন। এলডিসি ক্যাটেগরি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি। জাতিসংঘে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ এবং ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক রেজুলেশন দুটি গৃহীত হওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্বের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বক্তব্যে তিনি জানান বর্তমানে বাংলাদেশ পিসবিল্ডিং কমিশনের চেয়ার, এবং ইউএন উইমেন এক্সিকিউটিভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ থেকে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচিত হয়েছে মর্মেও উল্লেখ করেন তিনি। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ জাতিসংঘে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাচ্ছে তা উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: ছাদেকুজ্জামান জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা ও বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীসহ সকল বাহিনীর অংশগ্রহণ বিশ্বে প্রায় বিরল ঘটনা।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৮১ হাজার ৬৬১ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের ৫৬টি পিস কিপিং মিশনে অংশ নিয়েছেন। আর বর্তমানে ০৯ টি মিশনে নিয়োজিত রয়েছেন ৭ হাজার ১৪৪ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় এ পর্যন্ত শহীদ হয়েছেন ১৬৫ জন আর আহত হয়েছেন ২৫৮ জন”। এছাড়া তিনি জানান, শান্তিরক্ষী মিশনে বর্তমানে ৫৪২ জন নারী শান্তিরক্ষী রয়েছেন যার মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের একটি নারী কন্টিনজেন্ট রয়েছে। বিগত তিন দশকেরও বেশি সময়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সাফল্যমন্ডিত অগ্রযাত্রার বিভিন্ন দিকগুলোর কথা তুলে ধরেন ডিফেন্স অ্যাডভাইজর।
তথ্য-সমৃদ্ধ এই চমৎকার আয়োজন ও আতিথেয়তার জন্য ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ মিশনকে ধন্যবাদ জানান।
Leave a Reply