অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : শেরপুরে কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চোরচক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শেরপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম পিপিএম।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- সদর উপজেলার চান্দেরনগর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে ভ্যানচালক আব্দুর রহিম (৫০), নকলা উপজেলার মেদীরপাড় গ্রামের আব্দুর রউফের ছেলে সোহেল রানা (৩৫), নালিতাবাড়ী উপজেলার রাজনগর গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে মো. গোলাম রব্বানী (৪৫), একই গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন (৩৮), নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বালুয়াকান্দি গ্রামের মো. আব্দুল আলীর ছেলে মো. সোহেল রানা ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার পশ্চিম রাজদিয়া গ্রামের মৃত মনির হোসেন হাওলাদারের ছেলে মো. রাসেল হাওলাদার (৩২)। একইদিন বিকেলে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, চলতি সেপ্টেম্বর মাসে শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকার একটি সামাজিক কবরস্থান থেকে এবং নকলা উপজেলায় একটি সামাজিক কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটে।
ওই দুটি ঘটনায় সদর ও নকলা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়। মামলার তদন্তকালে পুলিশ কঙ্কাল চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত একটি সিন্ডিকেটকে শনাক্ত করে।
পরে সদর থানার এসআই খন্দকার সালেহ্ আবু নাঈম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কঙ্কাল পরিবহনের কাজ করা ভ্যানচালক আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর তার দেওয়া তথ্য মতে সোহেল রানা, গোলাম রব্বানী ও বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, কঙ্কাল চুরির পর সেগুলো ঢাকায় নিয়ে কেমিক্যাল ব্যবসায়ী সোহেল রানা ও রাসেল হাওলাদারের কাছে বিক্রি করা হতো। এরপর বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়ে তাদেরও গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, চোরচক্রের সদস্যদের মধ্যে চারজন শেরপুরের বাসিন্দা। তারা মূলত রাত ১২টার পর থেকে গভীর রাতে কবরস্থানে গিয়ে কবর খুঁড়ে কঙ্কাল চুরি করতো। কঙ্কাল চুরির আগে তারা বিভিন্ন কবরস্থানে গিয়ে রেকি করে। এরপর যেসব কবর এক বছরের বেশি পুরাতন হয়েছে, সেসব কবরের কঙ্কাল চুরি করতো তারা।
প্রথমে বেলচা ও স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে আস্তে আস্তে কবর খুঁড়ে পা ঢুকিয়ে ভেতর থেকে হাড়গুলো বের করে আনে। এসব কঙ্কাল বস্তায় ভরে পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করে। পরে ঢাকায় বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে কঙ্কাল প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও চিকিৎসকদের কাছে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে। একেকটি কঙ্কাল ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি হয় বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস) খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) . সাইদুর রহমান, প্রেস ক্লাব সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদলসহ জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply