অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইরাকের বিচারবিভাগীয় সর্বোচ্চ পরিষদের প্রধান ফায়িক্ব জাইদান বলেছেন, তার দেশের বিচার-বিভাগ সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ জয়ের খ্যাতিমান নায়ক জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও আবু মাহদি মুহান্দিস হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে।
ট্রাম্প নিজেই এ দুই কমান্ডারকে হত্যার নির্দেশ দেয়ায় তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
কাসেম সোলাইমানি ও আবু মাহদি মুহান্দিস ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন হামলায় শাহাদত বরণ করেন। জেনারেল সোলাইমানি সে সময় রাষ্ট্রীয় মেহমান হিসেবে ইরাক সফরে এসেছিলেন।
অবশেষে ওই হত্যাযজ্ঞের তিন বছর পর ইরাকের বিচার বিভাগ ট্রাম্পকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিল।
এই নির্দেশ বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব বা মার্কিন সরকার এ নির্দেশ বাস্তবায়নে সহায়তা দিবে কিনা সে বিষয়ের অবতারণা না করেই যা বলা যায় তা হল খোদ এই নির্দেশ নানা কারণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত: এ নির্দেশের ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে অপরাধী তা আবারও স্পষ্ট হল। ইরাকের বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ ব্যক্তি ফায়িক্ব জাইদান বলেছেন, সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ জয়ের খ্যাতিমান কমান্ডারদের শহীদ করে দেয়া ছিল এমন কাপুরুষোচিত অপরাধ যার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
দ্বিতীয়ত: ট্রাম্পকে গ্রেফতারের নির্দেশ এ জন্যও গুরুত্বপূর্ণ যে এতে বোঝা গেল যে মার্কিন সরকার সন্ত্রাস বিরোধী বলে দাবি করলেও বাস্তবে তারা সন্ত্রাস বিরোধী লড়াইয়ের মহানায়ক ও বীরদের হত্যা করে আসলে সন্ত্রাসীদেরই পক্ষে কাজ করছে।
তৃতীয়ত: ইরাকি বিচার বিভাগের এই নির্দেশ দেশটির বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও শক্তিমত্তাও তুলে ধরছে এবং বিদেশি চাপের তোয়াক্কা না করে তারা প্রমাণ করেছে যে অপরাধী যেই হোক না কেন তার বিচারের ব্যাপারে দায়িত্ব পালনে তারা অকুণ্ঠ তথা দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ।
চতুর্থত: ট্রাম্পকে গ্রেফতারের পরোয়ানা জরির ইরাকি নির্দেশ ইরানি বিচার বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের ফল।
ইরানের বিচার বিভাগের আন্তর্জাতিক বিষয় শাখার উপপ্রধান কাযেম গারিবাবাদি জেনারেল সোলাইমানি ও তার সহযোগীদের হত্যার ঘটনা তদন্তে ইরাক ও ইরানের সহযোগিতার কথা তুলে ধরে বলেছেন দু’ দেশের এ সংক্রান্ত যৌথ কমিটি এ বিষয়ে তথ্য ও দলিল-প্রমাণ বিনিময় করে আসছে, ফলে এ সংক্রান্ত তদন্ত আগের চেয়েও বেশি পরিপূর্ণ হচ্ছে।
ইরানের মানবাধিকার সংস্থা ও বিচার বিভাগ সোলাইমানি হত্যার ঘটনায় ৯৪ জন মার্কিন কর্মকর্তা জড়িত বলে উল্লেখ করেছে। আর এ থেকে বোঝা যায় ইরান ও ইরাক প্রতিরোধ যুদ্ধের কমান্ডারদের হত্যার বিচার-বিভাগীয় তদন্ত সম্পন্ন করতে দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ এবং খুব শিগগিরই ওই সন্ত্রাসী হত্যাযজ্ঞে জড়িত অন্য সব অপরাধীর বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Leave a Reply