অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ইরানের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক মোহাম্মাদরেজা ইসলামলু বলেছেন, বিশ্বব্যাপী আমেরিকা যে ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রগুলোতে তার স্বরূপ উন্মোচন করে দেয়া উচিত।
ইরানে ‘২৮ মোরদাদ’ নামে পরিচিত আমেরিকার মদদে সংঘটিত জনবিরোধী অভ্যুত্থানের বার্ষিকী উপলক্ষে ‘সিনেমাপার্স’ ওয়েবসাইটকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মোহাম্মাদরেজা ইসলামলু। সেখানে তিনি বলেছেন: এমন একটি সময় ছিল যখন আমাদের দেশে সব ক্ষেত্রে বিদেশি শিল্পকর্মের অনুবাদ সাড়া ফেলে দিয়েছিল। বিদেশি যেকোনো কিছুই আমরা ফার্সি ভাষায় অনুবাদ করতাম। তখন আমাদের উদ্দেশ্য ছিল বিদেশি শিল্পকর্মের সঙ্গে ইরানি জনগণকে পরিচয় করিয়ে দেয়া, এমনকি পেশাদার শিল্পীদের হাতে কলমে শিক্ষা দেয়ার জন্যও অনুবাদের সেই কর্মযজ্ঞটি অতি জরুরি ছিল!
এ সম্পর্কে তিনি স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন: কিন্তু ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব হওয়ার পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে যায়। সবাই বলাবলি করতে থাকে, আমাদেরকে আর পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুসরণ করলে চলবে না। আমাদের নিজস্ব সাহিত্য আছে এবং আমরা সমৃদ্ধ সংস্কৃতির অধিকারী। কাজেই আমাদেরকে আমাদের সংস্কৃতি, জাতীয় পরিচয় ও ধর্মীয় মূল্যবোধ অনুযায়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে।
ইসলামলু এ সম্পর্কে আরো বলেন: আমাদেরকে এখন চলচ্চিত্র অঙ্গনে তৃতীয় বিপ্লব ঘটাতে হবে। আমাদেরকে শেষ জামানা বিষয়ক চলচ্চিত্র নির্মাণের দিকে ঝুঁকতে হবে এবং প্রতিশ্রুতিশীল, আগ্রহী ও বিপ্লবী শিল্পীদেরকে এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে।
বিশ্ববাসী ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নির্মাতাদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী চলচ্চিত্র দেখতে চায় বলে উল্লেখ করেন মোহাম্মাদরেজা ইসলামলু। এ কারণে এই বিপ্লবী পরিচালক বিদেশি চলচ্চিত্র ডাবিং করে প্রচার কিংবা বিদেশি চলচ্চিত্রের থিম নিয়ে সিনেমা নির্মাণের ঘোর বিরোধী। তিনি বলেন, আমাদেরকে একটি ব্যতিক্রমি ধারা তৈরি করতে হবে। আমাদেরকে শিল্প ও সাহিত্যসহ সকল ক্ষেত্রে শেষ জামানা ও ইমাম মাহদির আগমন সম্পর্কিত ঘটনাবলী প্রচারের জন্য একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী আমেরিকা যে অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে সিনেমায় তা তুলে ধরতে হবে।
তার মতে, আমেরিকার অবৈধ কর্মকাণ্ড গোটা বিশ্ববাসীর জন্য একটি নিরাময় অযোগ্য ব্যথা এবং তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। আমেরিকা এক সময় নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। কাজেই বিশ্ববাসীর অন্তরে আমেরিকাবিরোধী মনোভাব তৈরি করতে হবে। আমাদেরকে আমেরিকা নামক এই জীবাণুর স্বরূপ বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচন করে দিতে হবে।
Leave a Reply