অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাশিয়ার সাথে যেকোনো আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির পর ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রদানে অবদান রাখতে ইচ্ছুক ৩০টি ইউরোপীয় এবং ন্যাটো দেশের সামরিক প্রধানরা মঙ্গলবার প্যারিসে বৈঠক করবেন।
প্যারিস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
রাশিয়া এর প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেন আক্রমণ করার তিন বছরেরও বেশি সময় পর, ইউরোপ এর প্রতিরক্ষা জোরদার করতে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা থেকে মুক্তি পেতে হিমশিম খাচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রান্সআটলান্টিক জোটকে বাতিল করে মস্কোর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছেন ঠিক তখনই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প তার রুশ প্রতিপক্ষ ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে নতুন করে যোগাযোগ করেছেন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সমালোচনা করেছেন। যার ফলে কিয়েভ এবং ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার পক্ষে একটি সমঝোতা গ্রহণে ইউক্রেনকে বাধ্য করার চেষ্টা করতে পারেন।
ট্রাম্প কিয়েভের সাথে সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য বণ্টন স্থগিত করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রান্সআটলান্টিক জোটকে উল্টে দিয়ে মস্কোর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করার সময় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
একজন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সৌদি আরবে মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনায় ইউক্রেন রাশিয়ার সাথে বিমান ও নৌ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়ার কথা ছিল।
ফ্রান্সের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য ও তুরস্কসহ ৩০টি ইউরোপীয় ও ন্যাটো দেশের সামরিক প্রধানদের প্যারিস বৈঠকও একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এই বৈঠকে ভাষণ দেবেন। তিনি বলেছেন যে ন্যাটো সামরিক কমান্ডের সাথে কঠোর সমন্বয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ম্যাখোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনে একটি চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য তথাকথিত ’ইচ্ছুকদের জোট’ গঠনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইউরোপের পাঁচটি প্রধান সামরিক শক্তি-ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি, ইতালি এবং পোল্যান্ড-এর প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা বুধবার ফ্রান্সের রাজধানীতে বৈঠক করবেন।
ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর একজন সহযোগী জানিয়েছেন, এই আলোচনা ইউরোপের প্রয়োজনীয় পুনর্সজ্জা এবং ইউক্রেনের প্রতি সামরিক সহায়তার ওপর কেন্দ্রীভূত হবে।
তার অফিস জানিয়েছে, শনিবার যুদ্ধ বিরতিতে সহায়তা করতে ইচ্ছুক দেশগুলোর নেতাদের সাথে ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন করবেন স্টারমার।
গত সপ্তাহে ম্যাখোঁ বলেন, ইউক্রেনে যেকোনো ইউরোপীয় সেনা কেবল তখনই মোতায়েন করা হবে যখন শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার মাধ্যমে তার প্রতি শ্রদ্ধা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরো বলেন, তিনি ইউরোপীয় অংশীদারদের কাছে ফ্রান্সের পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পর ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী এবং কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী অঞ্চল নিয়ে তুরস্ক ইউরোপের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চাইছে, কারণ ওয়াশিংটন এই অঞ্চল থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান, জেলেনস্কির বিমান ও নৌ যুদ্ধবিরতির আহ্বানের প্রতি তার সমর্থন জানিয়েছেন।