অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বগুড়ায় স্ত্রী মারুফা আক্তারকে হত্যা করে মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মুকুল মিয়ার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর নিজেকে আড়াল করতে থানায় স্ত্রী নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। তবে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে সন্দেহের জেরে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যার কথা স্বীকার করলে তার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে মারুফার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার নুরইল মধ্যপাড়া গ্রামের মুকুল মিয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে মারুফা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুকুল মিয়া স্বীকার করেছেন। স্ত্রী টিকটক ভিডিও করাকে কেন্দ্র করে দাম্পত্য কলহের জেরে তিনি শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ লুকাতে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখা হয়।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত মারুফা আক্তার পীরগাছা গ্রামের বাসিন্দা। আর অভিযুক্ত মুকুল মিয়া নুরইল গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন ঢালাই মিস্ত্রি। তাদের বিয়ে হয়েছিল প্রায় ৯ বছর আগে।
পুলিশ জানায়, টিকটক ভিডিও তৈরি ও প্রকাশকে কেন্দ্র করে দাম্পত্য জীবনে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ডিসেম্বরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তবে তিন মাস আগে পুনরায় বিয়ে করে আবার সংসার শুরু করেন তারা। এই দম্পতির ছয় বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
তদন্তে আরও জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর মারুফা আক্তার তার চাচাতো বোনের বিয়েতে নাচের একটি ভিডিও টিকটকে প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ১৩ ডিসেম্বর রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মুকুল মিয়া স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। এরপর মরদেহটি সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। দুই দিন পর, ১৫ ডিসেম্বর থানায় গিয়ে স্ত্রী নিখোঁজের অভিযোগে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর জানান, অভিযুক্ত মুকুল মিয়াকে আটক করা হয়েছে। নিহত মারুফা আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।