স্টাফ রিপোর্টার : কয়েক দিনের টানা ঘন কুয়াশা ও হাড়কাপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার জনজীবন। পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া শীতের তীব্রতা রোববার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি যে সকাল ১০টার পরও সড়কে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রোববার সকাল ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। কুয়াশার সঙ্গে শীতের প্রকোপ বাড়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর, ভ্যানচালক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। কনকনে শীত উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে তাদের বের হতে হলেও কাজের সুযোগ কমে গেছে।
ঘন কুয়াশার কারণে মহেশপুর যশোর আঞ্চলিক মহাসড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। যাত্রী সংকটে পড়েছে দূরপাল্লা ও স্থানীয় পরিবহন গুলো। ফলে পরিবহন শ্রমিকদের আয়ও কমেছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, রোববার ভোর ৬টায় চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহের সীমান্তবর্তী উপজেলা মহেশপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায়ও তাপমাত্রা অপরিবর্তিত ছিল। শনিবারের তুলনায় আজ (রোববার) তাপমাত্রা কমেছে এবং কুয়াশার ঘনত্ব বেড়েছে। অনেকটা হালকা বৃষ্টির মতো করে কুয়াশা পড়ছে।

মহেশপুর শহরের ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশার মধ্যে সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়াই মুশকিল হয়ে পড়েছে। শরীর ভিজে যাচ্ছে বৃষ্টির মতো। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। তবুও জীবিকার তাগিদে বের হতে হচ্ছে।
মহেশপুর যশোর সড়কে চলাচলকারী বাসচালক সাইফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই কুয়াশা কাটছে না। দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। যাত্রী খুবই কম।
শীতের প্রভাবে বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপও। মহেশপুর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, গত কয়েক দিনে শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ হেলেনা আক্তার নিপা বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিশু ও বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। শীতের সময় শিশু ও প্রবীণদের অপ্রয়োজনে বাইরে না বের হওয়ার পাশাপাশি গরম কাপড় ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে ঘন কুয়াশা ও শীত আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ফলে জনদুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।