অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : উচ্চ আয়ের অমুসলিম বিদেশি বাসিন্দাদের অ্যালকোহল কেনার অনুমতি দিয়ে মদ বিক্রির বিধিনিষেধ আরও শিথিল করেছে সৌদি আরব। অতি রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার ধারাবাহিকতায় চুপিসারে দেশের একমাত্র মদের দোকানটির প্রবেশাধিকার বাড়িয়েছে সৌদি আরব।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের ডিপ্লোম্যাটিক কোয়ার্টারে অবস্থিত ওই দোকানের সামনে এখন মানুষের ভিড় আর গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কী ধরনের দোকান, এমনকি কোনো নামফলকও নেই।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চালু করা দোকানটিতে কেবল অমুসলিম কূটনীতিকেরা এখান থেকে মদ কিনতে পারতেন। এখন থেকে ‘প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি’ বা বিশেষ নাগরিকত্ব সুবিধাপ্রাপ্ত ধনী বিদেশি বাসিন্দারাও এখান থেকে মদ কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। শুধু আয়ের প্রমাণপত্র দেখিয়ে এখন রিয়াদের একমাত্র মদের দোকানে প্রবেশ করতে পারবেন বিদেশিরা।
এমনকি দোকানটির মালিকানা কার, তাও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ কড়াকড়ি। পরিচয় নিশ্চিত হওয়া এবং দেহ তল্লাশির পরই কেবল ভেতরে ঢোকা যায়। ভেতরে মুঠোফোন বা ক্যামেরা নেওয়া পুরোপুরি নিষেধ। এমনকি কারও চোখে স্মার্ট চশমা আছে কি না, কর্মীরা সেটাও খুঁটিয়ে দেখেন।
যদিও এ বিষয়ে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি, তবে বিষয়টি খুব দ্রুতই জনসমক্ষে চলে আসে।
সৌদি আরব বিশ্বমানের দক্ষ জনশক্তি ও বিনিয়োগ টানতেই এই ‘প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি’ সুবিধা চালু করেছে। সাধারণ প্রবাসীদের মতো এদের কোনো সৌদি কফিলের (স্পনসর) প্রয়োজন হয় না। তারা সেখানে নিজেরা ব্যবসা করতে পারেন, সম্পত্তি কিনতে পারেন এবং পরিবারের সদস্যদের স্পনসর হতে পারেন। তবে এই সুবিধা পেতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ বা উচ্চ আয়ের শর্ত পূরণ করতে হয়।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও বাদশাহ সালমান দেশটিতে বড় ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম চালাচ্ছেন। মূলত অপরিশোধিত তেলের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমানো, পর্যটন খাতের বিকাশ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসারের লক্ষ্যেই এসব উদারীকরণের পথে হাঁটছে রিয়াদ।
মদের দোকান চালু হলেও সৌদি নাগরিক ও সাধারণ প্রবাসীরা তৃষ্ণা মেটাতে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ বাহরাইনে যান। সেখানে মুসলিম-অমুসলিম সবার জন্যই মদ বৈধ। ছুটির দিনে কজওয়ে পাড়ি দিয়ে হাজারো সৌদি নাগরিক ও পর্যটক বাহরাইনে ভিড় করেন। যাদের সামর্থ্য বেশি, তারা যান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। এ ছাড়া অনেকে চোরাই পথে আসা চড়া দামের মদ কিংবা গোপনে তৈরি দেশি মদের ওপর নির্ভর করেন।