অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক রোগীকে প্লাজমার বদলে মাল্টার রস দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রয়াগরাজ জেলা, যার আগে নাম ছিল এলাহাবাদ, সেখানকার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রদীপ কুমার নামে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
মৃত প্রদীপ কুমারের পরিবারের দাবি, প্লাজমার বদলে ড্রিপের মাধ্যমে মাল্টার রস দেওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে একটা ভিডিও সামনে এসেছে, যেখানে এক ব্যক্তিকে বলতে দেখা যাচ্ছে যে রক্তের প্যাকেটে মাল্টার রস রয়েছে।
এই গুরুতর অভিযোগ সামনে আসার পর প্রয়াগরাজ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অফিসার হাসপাতালটি সিল করে দিয়েছেন। সেখানে চিকিৎসাধীন রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
টুইট করে ব্রজেশ পাঠক জানিয়েছেন, ‘প্রয়াগরাজ জেলার ঝালওয়ার গ্লোবাল হসপিটালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় প্লাজমার বদলে মাল্টার রস দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে আমি হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। প্লাজমার প্যাকেটটি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে হাসপাতালের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ব্রজেশ পাঠক আরও জানিয়েছেন, মুখ্য স্বাস্থ্য অফিসারের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের রিপোর্ট দেওয়ার কথা।’
মৃত প্রদীপ কুমারকে গত ১৭ অক্টোবর গ্লোবাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ডেঙ্গুর চিকিৎসা চলছিল তার। কিন্তু দুদিন পর তার মৃত্যু হয়। মৃতের আত্মীয়রা দাবি করছেন, প্লাজমা আর মাল্টার রসের রঙ প্রায় একই ধরণের। দুটোই হাল্কা হলুদ রঙের। তদন্তকারীরা এখন খোঁজ করছেন যে সত্যিই প্লাজমার প্যাকেটে মাল্টার রস ছিল কিনা। তা যদি হয়ে থাকে, এত বড় ভুল কী করে হলো।
পুলিশ ইন্সপেক্টর জেনারেল রাকেশ সিং সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের নকল প্লাজমা দেওয়ার ঘটনায় কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এখনো এটা স্পষ্ট নয় যে প্যাকেটে সত্যিই প্লাজমার বদলে মাল্টার রস ছিল কিনা। কিন্তু কয়েকদিন আগে একটা জাল ব্লাড ব্যাংকের খোঁজ আমরা পেয়েছি।’
হাসপাতালের মালিক সৌরভ মিশ্র সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ‘ওই রোগীর প্লেটলেটের সংখ্যা ১৭ হাজারের কাছাকাছি নেমে গিয়েছিল। তার আত্মীয়-স্বজনকেই আমরা প্লেটলেট নিয়ে আসতে বলেছিলাম। তারা এসআরএন হাসপাতাল থেকে পাঁচ প্যাকেট প্লেটলেট নিয়ে এসে আমাদের দিয়েছিলেন। কিন্তু ড্রিপের মাধ্যমে ওই প্লেটলেট দিতেই রোগীর শরীরে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ড্রিপ বন্ধ করে দিয়েছিলাম।‘
তিনি দাবি করেন, ‘প্লেটলেট আর সেটা যেখান থেকে আনা হয়েছিল, তদন্তটা সেখানে হওয়া দরকার। ওই প্যাকেটের গায়ে তো এসআরএন হাসপাতালের স্টিকার লাগানো ছিল।’ তবে এসআরএন হাসপাতালের তরফ থেকে এখনো বিষয়টি নিয়ে কিছু জানানো হয়নি।
Leave a Reply